দেওয়ালে শ্যাওলা, চারপাশে আগাছা, মূল গেটে তালা।
দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থায় পড়ে রয়েছে বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয়ের তফসিলি জাতি-উপজাতি ছাত্রীদের আবাসটি। তৈরি হয়েছিল এক দশক আগে। কিন্তু এক দিনের জন্যও তা চালু হয়নি। কারণ, এই এক দশকে কোনও ছাত্রী মেলেনি। এমনকী, পরে আবাসটিকে তফসিলি জাতি-উপজাতির ছাত্রদের জন্য চালু করার প্রশাসনিক উদ্যোগও বিফলে গিয়েছে।
সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহিদুল ইসলাম। অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস বলেন, “আবাসটি চালু করার জন্য চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত ছাত্রছাত্রী পাওয়া যায়নি। ভবনটি শিক্ষাসংক্রান্ত অন্য কোনও কাজে ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের সামাজিক ন্যায় দফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাদের অনুমোদন ছাড়া নিবাসটি অন্য কোনও কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
জেলা প্রশাসন ও কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০২ সালে রাজ্য সরকারের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ বিভাগের উদ্যোগে কলেজের জমিতে ছাত্রী-আবাসটি তৈরি হয়। উদ্বোধন করেছিলেন অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের তৎকালীন মন্ত্রী উপেন কিস্কু। |
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওই দফতরের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী বিলাসীবালা সহিস, উত্তর ২৪ পরগনার তৎকালীন জেলা সভাধিপতি অপর্ণা গুপ্ত প্রমুখ। দূর-দুরান্ত থেকে কলেজে আসা ছাত্রীদের ওই আবাসে থাকার সব রকম ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু আবাসে থাকার জন্য কোনও ছাত্রীই আসেননি।
এই অবস্থায় ভবনটিকে তফসিলি জাতি-উপজাতির ছাত্রদের আবাস হিসেবে চালু করতে উদ্যোগী হয়েছিল মহকুমা প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয়ের ছাত্ররাই নন, মহকুমার অন্য কলেজগুলির তফসিলি জাতি-উপজাতিভুক্ত ছাত্রেরাও যাতে আবাসে থাকতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু সাড়া মেলেনি।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, “আমাদের কলেজে মহকুমার বিভিন্ন জায়গা থেকে ছাত্রছাত্রীরা আসেন। তাঁদেরকে আবাসের কথা বলাও হয়েছিল। কিন্তু কেন সাড়া মিলল না বলতে পারব না।” তিনি আরও জানিয়েছেন, ছাত্রীরা না আসায় কয়েক মাস আগে বনগাঁ মহকুমাশাসকের দফতরে একটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ছাত্রীদের পরিবর্তে আবাসটিতে ছাত্রদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে। এর পরে সেটিকে ছাত্রদের কেন্দ্রীয় হস্টেল হিসেবে পরিণত করা হয়। সেই মতো কলেজের তরফে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। |