বাইসন মেরে ভোজ, বিক্রিও হল মাংস
লোকালয়ে ঢুকে পড়া বাইসনকে বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে মেরে মাঝরাত পর্যন্ত মহাভোজ হল। বাইসনের মাংস বিক্রিও করা হল ১৪০ টাকা কেজি দরে। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লকের আটিয়াবাড়ি চা বাগানের পাশে রাজাভাতখাওয়া জঙ্গলে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা রবীন্দ্রপাল সাইনি জানান, রাতেই তল্লাশি চালিয়ে ৪ জন চা-শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে বন দফতর। ধৃতদের হেফাজত থেকে রান্না করা বাইসনের মাংসও উদ্ধার করা হয়েছে।
বাইসন শিকারের সঙ্গে জড়িত আরও সাত জন অভিযুক্তের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই দিন বিকেলে বাইসনের হানায় জখম হয়ে যে ব্যক্তি আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাঁকেও পুলিশ জেরা করবে। এ দিন ধৃতদের আলিপুরদুয়ার মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক নন্দদুলাল কালাপাহাড় তাঁদের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেফতার হওয়া চার চা-শ্রমিক। নিজস্ব চিত্র
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ আটিয়াবাড়ি চা বাগানের ৩০ ও ৩১ নম্বর সেকশনে একটি বাইসন ঢুকেছে বলে নিমতি বন দফতরে খবর যায়। নিমতি রেঞ্জের বনকর্মীরা প্রায় ঘন্টা দুয়েক চেষ্টা করে বাইসনটিকে তাড়িয়ে ডিমা জঙ্গলে ঢুকিয়ে দেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন রাজাভাতখাওয়া রেঞ্জের বনকর্মীরাও। বাইসনটি জঙ্গলে ঢুকে পড়ার কিছুক্ষণ পরে তাঁরা ফিরে যান। বিকেলের দিকে মনতোষ ওঁরাও নামে এক ব্যক্তি বাইসনের গুঁতোয় জখম হন। তার পরে আটিয়াবাড়ি চা বাগানের পাশে ডিমা চার নম্বর কম্পার্টমেন্টের দিকে যায় বাইসনটি। ইতিমধ্যে বাইসনটিকে মারার উদ্দেশ্যে তির-ধনুক-বল্লম নিয়ে জড়ো হন স্থানীয় কিছু মানুষ। চা বাগান সংলগ্ন জঙ্গলে ঢুকে বাইসনটিকে ধাওয়া করে শিকার করেন তাঁরা। তার পরেই শুরু হয় মাংস বিক্রি ও ভোজের আয়োজন।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় দুশো মিটার এলাকা জুড়ে চাপ চাপ রক্ত। জঙ্গলের একটি ঝোপের আড়ালে বাইসনের নাড়িভুঁড়ি ও পাশে একটি ঝোপে বাইসনের লেজ-সহ কিছুটা অংশ পাতা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে কাঠের বোঝা নিয়ে যাওয়ার বাঁক ও ধনুকের ভাঙা
অংশ পান বনকর্মীরা। তাঁদের অনুমান, বাইসনটির শিং লুকিয়ে ফেলেছে শিকারিরা। স্থানীয় বাসিন্দা বিস্তা খাড়িয়া জানান, সোমবার বিকেলে তিনি বাগানে ঘোরাঘুরি করছিলেন। সেই সময় তিনি দেখতে পান, পরিচিত কিছু লোক কাঠ নেওয়ার বাঁকে করে বাইসনের আস্ত পা-সহ দেহাংশ নিয়ে আসছে। তাঁকে অল্প মাংসও দেন ওই পরিচিতেরা। তিনি রান্না করে তা বন্ধু-বান্ধবদের দেন। রাতে বাড়ি ফিরে ওই মাংস রান্না করে খেয়ে শুয়ে পড়েন।
গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি চা বাগানে ঢুকে পড়া একটি সম্বর মেরে ভোজ হয়। ওই এলাকা থেকে কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে ফের বাইসন শিকারের ঘটনায় উদ্বিগ্ন বন্যপ্রেমীরা। আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত বলেন, “জঙ্গলে খাদ্যশৃঙ্খল ভেঙে পড়েছে। ফলে বন্যপ্রাণী বেরিয়ে আসছে লোকালয়ে। বন দফতরের নজরদারি না-থাকায় এ ধরনের শিকারের ঘটনা আরও বাড়বে।” বন দফতর জানিয়েছে, চা বাগানগুলিতে বন্যপ্রাণ হত্যা রোধে সচেতনতা শিবির ও ইকো ক্লাব খোলা হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.