সম্পাদক সমীপেষু...
‘ডক্টর গাঙ্গুলি’
পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিবেদন (৬-২) ‘প্রথম মহিলা ডাক্তার কে, বিতর্কে সরগরম মেডিক্যাল’-এর মাধ্যমে অধ্যক্ষ ডা. দত্ত তথা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য অবগত হয়ে এই পত্রের অবতারণা। ইতিহাস বিকৃত বলতে তিনি ঠিক কী বলতে চাইছেন? অধ্যক্ষ ডা. দত্ত তথা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ কি ডা. কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রথম বাঙালি মহিলা ডাক্তার হিসাবে অস্বীকার করছেন? না কি তিনি স্বীকৃত ডিগ্রিধারী ডাক্তার নন? ঠিক, কাদম্বিনীর এম বি ডিগ্রি পাওয়া হয়নি। কারণটা বহুচর্চিত। পুনরায় উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। অবশ্যই প্রথম এম বি ডিগ্রিধারী মহিলা ডাক্তারদের অন্যতমা ডা. বিধুমুখী বসু। অধ্যক্ষ ডাক্তার বিধুমুখী বসুকে নিয়ে অনুষ্ঠান করতে চান, অবশ্যই করা উচিত। আমার প্রশ্ন, এত দিন করা হয়নি কেন? বিধুমুখীর জন্ম ১৮৬৬। এম বি ডিগ্রিলাভ ১৮৯০ সালে। দুটি ক্ষেত্রেই শতবর্ষ পার। কোনও অনুষ্ঠান হয়নি। সবচেয়ে লজ্জার কথা, মেডিক্যাল কলেজের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজ কমেমোরেটিভ ভলিউম, ১৮৩৫-১৯৮৪, ক্যালকাটা ১৯৮৪-তে ডাক্তার কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছাপা হয়েছে বেথুন কলেজের সহপাঠিনী চন্দ্রমুখী বসুর ছবি। অথচ চিত্র-পরিচিতি দেওয়া হয়েছে ডা. বিধুমুখী বসুর।
কাদম্বিনী মেডিক্যাল কলেজ থেকে স্নাতক হয়েছিলেন, তার কোনও প্রমাণ ডা. দত্ত মেডিক্যাল কলেজের ইতিহাসে পাননি বলে মন্তব্য করেছেন। ডা. দত্তকে ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজ কমেমোরেটিভ ভলিউম, ১৮৩৫-১৯৮৪, ক্যালকাটা ১৯৮৪, পৃ ৬৬-তে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কনভোকেশন অ্যাড্রেস (৮ জানুয়ারি ১৮৮৭)-টি একবার পড়ে দেখতে অনুরোধ করি। কাদম্বিনীর পাশ করতে না-পারা নিয়ে কেবল আজ নয়, সে কালেও অনেকে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। গল্প তৈরি করা হয়েছে। ব্যক্তিগত কারণে অধ্যাপকেরা যে ছাত্রদের ফেল করিয়ে দিতেন, তার উদাহরণ কিন্তু কাদম্বিনী একা ননঅপর দৃষ্টান্ত বিধানচন্দ্র রায়। সাহেব ডাক্তারের বিরাগভাজন হয়ে তিনি এম বি পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি। এল এম এস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।
রবিবাসরীয় আনন্দবাজারে (১০-২) স্বাতী ভট্টাচার্য তাঁর প্রতিবেদনে ‘ডক্টর গাঙ্গুলি’-র পরিচয় সবিস্তার শুনিয়েছেন। সেই প্রতিবেদনে সামান্য সংযোজন করে এই লেখা শেষ করি। একাধারে সুগৃহিণী, আদর্শ পত্নী, স্নেহময়ী জননী। অন্য দিকে, চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবী এই আশ্চর্য নারীকে আমরা বিশেষ ভাবে মনে রাখতে চাই তাঁর জীবন-সংগ্রামের জন্য। যে জীবন-সংগ্রাম মাত্র ১৪ বছর বয়সে ভাগলপুর থেকে কলকাতায় আসার পর শুরু এবং চলেছিল জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত। হতাশ হয়ে পড়েননি, নিজেকে পালটাননি। কোনও দিন কারও অনুগ্রহের প্রত্যাশী ছিলেন না। তাঁরই লেখা একটি চিঠির অংশের উল্লেখ করছি, “ঈশ্বর করুন যেন আমাকে যত দিন ইহসংসারে রাখেন, তত দিন যেন আমি নিজেরটাই খাইয়া পড়িয়া যাই। ছেলেমেয়ে, জামাই, বৌ আহ্লাদ করিয়া যাহা দিবে আদর করিয়া গ্রহণ করিব। কিন্তু অন্নবস্ত্রের জন্য যেন পরের উপর নির্ভর করিতে না হয়।”৩ অক্টোবর ১৯২৩। শেষ দিনেও রোগী দেখে রোজগার করেছিলেন ৫০ টাকা। কাদম্বিনী বঙ্গবাসী পত্রিকা গোষ্ঠীর সম্পাদক মহেশচন্দ্র পালের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে তাঁকে জেলে পাঠিয়েছিলেন। সম্পাদককে পত্রিকায় তাঁর লেখাটিকে গলাধঃকরণে বাধ্য করেছিলেন কাদম্বিনী। জন্মসার্ধশতবর্ষে তাঁকে নিয়ে বিতর্কে কি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হবে?
শিক্ষকদের বদলি
জুনিয়র, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে বদলির বিষয়টি সরকার নীতিগত ভাবে গ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু এতে খুব বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকা উপকৃত হবে বলে মনে হয় না। পরিবর্তে বিষয়ভিত্তিক সরাসরি খালি পদগুলিতে বদলি নীতি গ্রহণ করলে ভাল। কারণ, কেন্দ্রীয় ভাবে নিয়োগ করার সময় সংরক্ষণ নীতি পালিত হচ্ছেই। আবারও প্রতিটি স্কুলে সংরক্ষণের প্রয়োজন আছে কি? অতএব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক শূন্য পদগুলিতে বদলি করে নতুন খালি পদে নতুন শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করলে বদলি নীতি অনেক সহজ হয়। শিক্ষক-শিক্ষিকারাও ঈপ্সিত স্কুলে বা কাছাকাছি জেলায় যেতে পারবেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.