ধর্মঘটে গরহাজির, বেতন কাটা গেল আরও কিছু কর্মীর
‘রাজরোষে’ পড়লেন ধর্মঘটে গরহাজির আরও কিছু সরকারি কর্মী।
বামপন্থী-সহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ ধর্মঘট ডেকেছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘হুঁশিয়ারি’ দেন, ওই দিন কাজে না এলে প্রত্যেক সরকারি কর্মীকে ‘শো-কজ’ করা হবে। উত্তর ‘সন্তোষজনক’ না হলে বেতন কাটা যাবে এক দিনের। সার্ভিস বুকেও যার ‘প্রভাব’ পড়বে। অর্থাৎ, এক দিনের চাকরির মেয়াদ কমবে। সেই মতো রাজ্য সরকার নির্দেশ জারি করে। মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্রের ৯ জন কর্মীকেও বেতন কাটার নোটিস ধরানো হয়েছিল।
সোমবার, এপ্রিল মাসের প্রথম কাজের দিনটিতে বেতন তুলতে গিয়ে বিভিন্ন জেলার আরও বেশ কিছু সরকারি কর্মী দেখেন, তাঁরা এক দিনের বেতন কম পেয়েছেন। সিপিএম প্রভাবিত ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জেলা পরিষদ এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’-এর রাজ্য সম্পাদক সন্দীপ রায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের কর্মী। তাঁরও বেতন কাটার নির্দেশ এসেছে। বেতন কাটার আগে নিয়মমাফিক সকলকে ‘শো-কজ’ নোটিস ধরানো হয়েছিল। সংগঠন সূত্রে জানানো হয়েছে, ‘শো-কজের’ উত্তরে তাঁরা জানিয়েছিলেন, ধর্মঘট সমর্থন করেছিলেন বলেই কেউ কাজে আসেননি। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, “গোটা জেলায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০০ জনের বেতন কাটা গিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের উচ্চ-স্তর থেকে আমাদের কাছে নির্দেশ এসেছে।”
সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে সন্দীপবাবু এ দিন বলেন, “এই শাস্তি অন্যায্য। জেলা পরিষদ একটি স্বশাসিত সংস্থা। আমরা সরাসরি সরকারি কর্মী নই। এ ভাবে সরকারের নির্দেশ আমাদের উপরে চাপিয়ে দেওয়া অন্যায়।” কিন্তু তা হলে তাঁরা শো-কজের উত্তর দিতে গেলেন কেন? এ ব্যাপারে সন্দীপবাবুর জবাব, “জেলা পরিষদের কর্তাদের মাধ্যমে আমাদের হাতে শো-কজ নোটিস এসেছিল। আমরা তা গ্রহণ করি। জবাবও দিয়েছি। তবে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিল, তার বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।” তবে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রধান সচিব সৌরভকুমার দাস বলেন, “জেলা পরিষদে দু’ধরনের কর্মী আছেন। চুক্তিভিত্তিক এবং স্থায়ী। স্থায়ী কর্মীদের রাজ্যপাল নিয়োগপত্র দেন। সরাসরি সরকারি কর্মী হিসাবেই তাঁরা গণ্য হন। ধর্মঘটের দিনে গরহাজিরার জন্য তাঁদের বিষয়ে জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্তারা প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন। চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ক্ষেত্রে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়নি।”
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের ৪০ জন কর্মী-সহ জেলার আরও প্রায় ৬০ জন সরকারি কর্মী মার্চ মাসের বেতনে এক দিনের টাকা কম পেয়েছেন।
পুরুলিয়া জেলা পরিষদের ক্ষেত্রেও ২০ জন কর্মীর বেতন কাটা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) প্রকাশ পাল। পুরুলিয়ার জেলাশাসকের দফতরের ১৫ জন কর্মীরও মাইনে কাটা গিয়েছে। বীরভূম জেলা পরিষদেও ঘটেছে একই ঘটনা। এখানে ২ জন কর্মীর বেতন কাটা গিয়েছে।
বীরভূমের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমার দফতরের ৮ জন কর্মী এবং জেলা পরিষদের দু’জন কর্মীর বেতন কাটা হয়েছে।”
বীরভূমেরই রামপুরহাট মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের চার কর্মীর বেতন কাটা গিয়েছে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন কো-অর্ডিনেশন কমিটির রামপুরহাট মহকুমা শাখা সম্পাদক, নাজিরখানার রাজস্ব মুন্সেফ তাপস গুপ্ত।
এই জেলায় ব্লক-স্তরেও বেশ কিছু কর্মীর বেতন কাটা গিয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানান, সাধারণ ধর্মঘটের দিন বিভিন্ন জেলার আরও কিছু সরকারি কর্মী কাজে আসেননি। তাঁদেরও শো-কজ করা হয়েছে। উত্তর ‘সন্তোষজনক’ না হলে ওই কর্মীদেরও বেতন কাটা হবে। কমে যাবে চাকরির মেয়াদ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.