ভাটপাড়ায় ‘পাল্টা’ মিছিলে সিপিএমকে টেক্কা তৃণমূলের
বামফ্রন্টের মহামিছিলের পাল্টা মহামিছিল করে দৃশ্যতই তাদের ‘টেক্কা’ দিল তৃণমূল। শনিবার সিপিএম তথা বামফ্রন্টের মিছিলের আড়ে-বহরে দ্বিগুণ মিছিল করল তৃণমূল সোমবার। বামফ্রন্টের দাবি ছিল, তাদের মিছিলে পঁচিশ হাজারের বেশি লোক হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছিল, লোক হয়েছে দশ হাজারের সামান্য বেশি। আর এ দিন তৃণমূলের নেতাদের দাবি, অন্তত ৮০ হাজার মানুষ ছিলেন তাঁদের মিছিলে। পুলিশ জানিয়েছে, মিছিলে লোক ছিল ৪৫ হাজারের বেশি।
তৃণমূলের মিছিলে এ দিন ‘মুখ্য আকর্ষণ’ ছিলেন রেলমন্ত্রী মুকুল রায়। তাঁর পাশাপাশি হেঁটেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার রাজনীতিতে তাঁর বিরোধী শিবিরের নেতা অর্জুন সিংহ। ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও। প্রত্যাশিত ভাবেই, দেখা যায়নি ব্যারাকপুরের সাংসদ তথা প্রাক্তন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদীকে। অর্জুনকে পাশে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দৃশ্যতই উচ্ছ্বসিত মুকুল প্রশ্ন করেছেন, ‘‘কী মনে হচ্ছে? মানুষ আমাদের সঙ্গে? না ওদের (সিপিএমের) সঙ্গে?” তারপরেই বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় যে সরকার গড়েছেন, তা যে আমজনতার সরকার, এই মিছিলই তার প্রমাণ! স্বতঃস্ফূর্তভাবে দলমত নির্বিশেষে মানুষ আমাদের সঙ্গে সামিল হয়েছেন। ওদের নেতারা গাড়ি চড়ে মিছিল করেছিলেন। মানুষের সঙ্গে মিশতে পারেননি। কিন্তু আমরা তো মা-মাটি-মানুষের কথা বলি। তাই সবার সঙ্গে হেঁটে পা মিলিয়েছি।’’
তৃণমূলের মিছিলে মুকুল রায় ও অর্জুন সিংহ। নিজস্ব চিত্র
মিছিলের শেষে অর্জুন বলেন, “আশি হাজারের কাছাকাছি মানুষ মিছিলে যোগ দিয়েছেন। আমরাও এতটা অনুমান করিনি। আমি, মুকুলদা মিছিল শেষ করার পরেও কাঁকিনাড়া থেকে বহু মানুষ হাঁটা শুরু করেছেন।’’ ব্যারাকপুরের গোয়েন্দাপ্রধান দীপনারায়ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘গন্ডগোলের আশঙ্কায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল। নিরাপত্তার জন্য কড়া নজরদারি ছিল। কিন্তু রেলমন্ত্রী যে এই মিছিলে যোগ দেবেন, তা আনুষ্ঠানিক ভাবে আমাদের জানানো হয়নি।’’ অর্জুন বলেন, ‘‘এখানে মানুষ আমায় ভালোবাসেন। শ্রদ্ধা করেন। তাই অন্য কোনও নেতার আসার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু ওরা যদি বিমান বসুকে আনতে পারে, তা হলে আমাদেরও মুকুল রায় আছেন।’’
বামেদের মিছিল শনিবার কাঁকিনাড়ার যেখান থেকে শুরু হয়েছিল, সেখান থেকেই মিছিল শুরু করে তৃণমূল। শেষও হয় জগদ্দল গোলঘরে। বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সমাবেশ বা মিছিলের ‘পাল্টা’ কর্মসূচি নিচ্ছে তৃণমূল। রাজ্যবাসী শেষ যা দেখেছেন যাদবপুরে। এ দিনও বামেদের মিছিলের ‘পাল্টা’ হিসেবেই মিছিলের কর্মসূচি নেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বিশেষত, বামদের মিছিলের অর্জুনের গ্রেফতারের দাবিতে হওয়ায় পাল্টা শক্তি প্রদর্শনেরও ‘দরকার’ ছিল। মুকুলের অবশ্য দাবি, ‘‘পাল্টা কর্মসূচি নয়। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কুৎসার প্রতিবাদ করবই। ৩৪ বছর পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সরকার কিছু কাজ করতে চাইছে। কী ভাবে তা বন্ধ করা যায়, মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূলকে কী ভাবে হেয় করা যায়, তার জন্য যাঁরা উঠে পড়ে লেগেছেন, তাদের বলছি, যত কুৎসা করবেন, মিথ্যা বলবেন, এ ভাবেই প্রতিবাদ হবে।’’
শনিবার বামেদের মিছিলের জন্য জগদ্দল, শ্যামনগর ও কাঁকিনাড়ার প্রধান সড়ক ঘোষপাড়া রোড অবরুদ্ধ ছিল। এ দিন মিছিলের অনেক আগেই ট্রাক, ম্যাটাডর করে মিছিলে যোগ দিতে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা আসতে শুরু করেন। ওই পথে যান-চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হলেও ট্রাক-লরির ভিড়ে বাইক বাহিনী ঢুকে তীব্র যানজট তৈরি হয়। শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা মিছিলে ছিলেন। গৌতম দেব, বিমান বসুর কুশপুতুল কাঁধে নিয়ে মিছিল হয়। সাজানো হয় কঙ্কাল। তাতে লক্ষ্মণ শেঠ, সুশান্ত ঘোষদের নামের প্ল্যাকার্ড লাগানো।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.