|
|
|
|
মুর্শিদাবাদ-লালবাগ পুরসভায় দলীয় কাউন্সিলরদের ‘বিদ্রোহ’ |
কংগ্রেস পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা |
শুভাশিস সৈয়দ • লালবাগ |
কংগ্রেস পরিচালিত মুর্শিদাবাদ-লালবাগ পুরর্বোডের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনল দলেরই তিন কাউন্সিলর। পুরপ্রধান কংগ্রেসের সৌমেন দাসের অপসারণ দাবি করে সোমবার ওই অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ে পুরসভায়। অনাস্থায় কংগ্রেসের প্রতীকে জয়ী তিন কাউন্সিলর-সহ ৮ জন সই করেছেন। তার মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা লালবাগ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি মেহেদি আলম মির্জা। গত পুর নির্বাচনে ১৬ আসনের ওই পুরসভায় ১০টি আসনই দখল করেছিল কংগ্রেস। চার জন নির্দল সদস্য ছাড়া জনবাদী ফরওয়ার্ড ব্লক এবং তৃণমূল একটি করে আসন পেয়েছিল। পরে তৃণমূেলের টিকিটে জয়ী চম্পা দাসও কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় কংগ্রেসের আসন বেড়ে দাঁড়ায় এগারো। অনাস্থা আনলেন কেন? মেহেদি আলম মির্জা বলেন, “জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী পুরভোটের প্রচারে এসে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু গত দু-বছর ধরে পুর-এলাকায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে।” এ ব্যাপারে সৌমেনবাবু অবশ্য বলেন, “জেলা সভাপতি আমায় সরতে বললে তবেই পদ ছাড়ব।”
মেহেদি আলম ছাড়া কংগ্রেসের অন্য দুই কাউন্সিলর সাইদা বিবি (মুর্শিদাবাদ শহর কংগ্রেস সভাপতি আবদুস সাত্তারের স্ত্রী) এবং তপন মণ্ডল। বাকি পাঁচ কাউন্সিলরের মধ্যে বিশ্বজিৎ ধর, গোকুল বিশ্বাস, ভদ্দরি মণ্ডল ও মাধুরী মণ্ডল নির্দল হিসেবে জয়ী হয়েছেন। চম্পা দাস তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীক চিহ্নে জয়ী হলেও পরে তিনি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। পুরপ্রধান সৌমেনবাবু ব্যর্থ হলে জেলা কংগ্রেস সভাপতির কাছে চিঠি না পাঠিয়ে সরাসরি তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হল কেন? তার কোনও স্পষ্ট উত্তর অবশ্য ‘বিদ্রোহী’ কংগ্রেস কাউন্সিলরদের কাছে মেলেনি। তবে তাঁরা যে দিন কয়েক ধরেই পুরসভার নির্দল সদস্যদের সঙ্গে ‘গোপনে’ বৈঠক করছিলেন তা জানা গিয়েছে।
কংগ্রেসের কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি বিপ্লব চক্রবর্তীর অভিযোগ, “দলের দশ কাউন্সিলরের মধ্যে তিন জন পুরপ্রধানকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিলেন আর বাকি সাত জন তা জানতেই পারল না। অধীর চৌধুরী সিদ্ধান্ত নিয়ে সৌমেন দাসকে পুরপ্রধান পদে বসান। এখন অধীর চৌধুরী নির্দেশ দিলেই তো সৌমেন দাস সরে যেত। কিন্তু পুরপ্রধানকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে জেলা কংগ্রেস সভাপতিকে তা জানানো হয়েছে। দলবিরোধী কাজের জন্য মেহেদি আলম মির্জা-সহ তিন জন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে যারা ‘দল ভাঙার খেলায়’ মেতেছে, সেই তিন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে দল যদি কোনও পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে দলই ‘ঠকবে’ বলে তিনি জানান।
শহর কংগ্রেস সভাপতি আবদুস সাত্তার অবশ্য ওই ঘটনায় দলবিরোধী কিছু দেখছেন না। তাঁর কথায়, “পুরসভার উন্নয়নের ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে পুরপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কিন্তু তিনি আমাদের কোনও কথায় আমল দেননি। এই অবস্থায় পুরপ্রধানকে অপসারণ করতে অনাস্থা প্রস্তাব আনা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। তবে এটা কোনও দলবিরোধী কাজ নয়।” |
|
|
|
|
|