গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সাধন দাসের চিঠি পড়লাম। লেখাটিতে তথ্যগত কিছু ভুল রয়েছে১) মেলাটির নাম গুমানি দেওয়ান মেলা নয়। গুমানী দেওয়ান রাজ্য কবিয়াল মেলা। ২) মেলাটি ৫ মার্চ থেকে শুরু হয়নি। ৭-১০ মার্চ চারদিনের মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আমন্ত্রণে চারণকবি বারবার শান্তিনিকেতনে গিয়ে কবিগুরুর সামনে কবিগান পরিবেশন করেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। কিন্তু জানতে ইচ্ছে করে, এরকম প্রামাণ্য তথ্য তিনি কোথায় পেলেন? মনে হয় তিনি আব্দুর রাকিবের ‘চারণকবি গুমানী দেওয়ান’ বইখানিকে একমাত্র প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। কিন্তু আব্দুর রাকিব ভাবাবেগে বইখানি লেখার ফলে অনেক জায়গায় তথ্যের অপলাপ ঘটিয়েছেন। গুমানীর সঙ্গে যোগাযোগের ব্যাপারে ওই গ্রন্থকার যে আলুবাবুর কথা উল্লেখ করেছেন, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘এরকম কোনও ঘটনার কথা জানা নেই’ বলেন।
এ ছাড়া রবীন্দ্রনাথ কবিগান সম্পর্কে উচ্চধারণা পোষণ করতেন না। গুমানীর গান শুনে তাঁর পূর্বতন ধারণা ভেঙে গেলে, নিশ্চয়ই তিনি তাঁর ধারণা ভঙ্গের কথা লিখতেন। শান্তিনিকেতনে সেই সময়ে শান্তিদেব ঘোষ প্রমুখ অনেক ব্যক্তিত্বই ছিলেন। তাঁরাও কেউ কোথাও কবিগুরু-কবিয়াল সম্রাটের দেখা হওয়ার কথা উল্লেখ করেননি। গুমানী দেওয়ান নিঃসন্দেহে এক জন উচ্চমানের কবিয়াল। তিনি সাধারণ মানুষের ভাললাগার কবিয়াল। এর চেয়ে বড় পুরস্কার আর কিছু হতে পারে না। তাঁর রচনা মুদ্রিত আকারে পাই ‘শ্রীশ্রী বন্যেশ্বর শিব মাহাত্ম’। ‘ছিন্ন কুসুম’, ‘তিনি কে’ অমুদ্রিত গ্রন্থ। এছাড়াও অসংখ্য কবিতা, ছড়া, পাঁচালি লিখেছেন, যা পাণ্ডুলিপি আকারেই আছে। এছাড়াও সবিনয়ে জানাই, মেলাটি শুধু সরকারি উদ্যোগে হয় না। স্থানীয় মানুষ, বাংলার কবিয়াল সমাজ, লোকশিল্প অনুরাগী ব্যক্তিসকলের মিলিত উদ্যোগে মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। সাধনবাবুর কেন এখন মনে হল, মেলাটি দায়সারা গোছেরশুধুই নিয়মরক্ষার স্মরণ। কবিগান শিক্ষার জন্য গুমানী দেওয়ান দেড় বিঘা জমি দান করে গিয়েছেন। আরও বিভিন্ন বিষয়ে তিনি উদ্যোগী হন, কিন্তু কোনও কারণে তা করে যেতে পারেননি।
দীপক বিশ্বাস, বহরমপুর
|
সম্প্রতি বেশ কয়েক মাস ধরে জঙ্গিপুর, রঘুনাথগঞ্জ শহরে রান্নার গ্যাসের আকাল দেখা দিয়েছে। চাহিদার তুলনায় গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ কম হওয়ায় জঙ্গিপুরে ওই সঙ্কট তীব্র আকার নেয়। গ্যাস নেই বলে জানানোর পরে মাস খানেক পেরিয়ে গেলেও গ্রাহকদের গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ করা হচ্ছে না। ফলে অনেক গৃহস্থের বাড়িতে গ্যাসের উনুনে রান্না প্রায় বন্ধ হতে বসেছে। গ্যাস সিলিন্ডার সঙ্কটের কারণ প্রসঙ্গে জঙ্গিপুরের ইন্ডিয়ান অয়েল-এর গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহকারী দফতর থেকে জানানো হয় যে, দুর্গাপুর প্ল্যান্ট থেকে গ্যাস সিলিন্ডার আসছে চাহিদার তুলনায় কম। কিন্তু গ্যাস ব্যবহারকারী মোট গ্রাহক সংখ্যা কত? গুদামে এই মুহূর্তে কত গ্যাস সিলিন্ডার মজুত রয়েছে? চাহিদার সঙ্গে সরবরাহের অসামঞ্জস্য কত?এই সমস্ত তথ্য জানতে চাইলে তার কোনও সদুত্তর মেলেনি। লিখিত বিজ্ঞপ্তি জারি করে ওই তথ্য প্রকাশ্যে টাঙিয়ে দেওয়া না হলে প্রকৃতই গ্যাস সিলিন্ডার জোগানের আকাল চলছে নাকি কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চলছে, তা নিয়ে গ্যাস গ্রাহকদের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরের উচিত গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
কাশীনাথ ভকত, জঙ্গিপুর
|
কান্দি শহরে রেলের কোনও আসন সংরক্ষণ কেন্দ্র নেই। এতে ভীষণ অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে কান্দিবাসীদের। এমনিতেই কান্দি এলাকায় আজ পর্যন্ত রেলপথ তৈরি হয়নি। ফলে কান্দি এলাকার বাসিন্দাদের প্রায় ৩০ কিমি দূরে সালার বা বহরমপুর স্টেশনে গিয়ে ট্রেন ধরতে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন কান্দিতে রেলপথ স্থাপনের জন্য রেল বাজেটে কিছু অর্থ মঞ্জুর করেন। রেলপথ তৈরির জন্য প্রাথমিক সমীক্ষার কাজও শুরু হয়। কিন্তু ওই কাজের যা গতি, তাতে রেলপথ তৈরির কাজ আদৌ শুরু হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে কান্দিতে রেলের আসন সংরক্ষণ কেন্দ্রও গড়ে ওঠেনি।
যদিও কান্দিতে বেশ কয়েকটি দোকানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে টিকিট কাটার সুবিধা রয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে টিকিট কাটার জন্য বাড়তি ৪০-৫০ টাকা অর্থ চাওয়া হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী ওই বাড়তি অর্থ কোনও ভাবেই দাবি করতে পারেন না তাঁরা। কিন্তু কোনও উপায় না থাকায় গ্রাহকেরা সেই অর্থ দিতে বাধ্য হন। যার কোনও রসিদও তাঁদের দেওয়া হয় না। এ দিকে কাছে-পিঠে কোনও আসন সংরক্ষণ কেন্দ্র না থাকায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে টিকিট কাটার দোকানের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অবিলম্বে রেলের আসন সংরক্ষণ কেন্দ্র খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
অময় চক্রবর্তী, কান্দি
|
গত ১৪ মার্চ রেল বাজেট পেশ করা হলেও সেখানে কাটোয়া-ফরাক্কা (ভায়া জঙ্গিপুর রোড) শাখায় ডবল লাইনের উল্লেখ নেই। কয়েক দিন আগে পূর্বতন রেলমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রেল দফতর একটি দ্রুতগামী ট্রেনের বদলে প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালু করে দায় সারে। জঙ্গিপুর মহকুমার মানুষ অনেক আশায় বুক বেঁধেছিলেন যে, রেলমন্ত্রীর হাত ধরে ডবল লাইনের প্রস্তাব এবারের বাজেট থাকবে। কিন্তু ওই স্বপ্ন বাস্তবায়িত না হওয়ায় এলাকাবাসী দারুণ ভাবে ক্ষুব্ধ।
শান্তনু রায়, রঘুনাথগঞ্জ |