মুখোমুখি ১...
আমি শুধু একটা বিশেষণই বুঝি... তার নাম সাফল্য

পত্রিকা: একটা বিখাত বাংলা গান আছে, ‘আসছে আষাঢ় মাস, মন তাই ভাবছে/ কী হয়, কী হয়, কী জানি কী হয়...’। বাঙালি এখন অদৃশ্যে গুনগুন করে ‘আসছে আইপিএল, মন তাই ভাবছে/ কী হয়, কী হয়, কী জানি কী হয়...’ আর এ বার তো এপ্রিল মাস পড়তে না পড়তে আরও বেশি করে গাইছে! এ বার তো দাদা ভার্সেস খান...

সৌরভ: কেন প্রতি বছর হয় আমি ভার্সেস কে কে আর, বুঝতে পারি না। কত প্লেয়ার গেছে একটা টিম থেকে আরেকটা টিমে। কে কে আর চ্যাপ্টার শেষ আমার জীবনে। তিন বছর খেলেছি ওখানে। বাট এখন শেষ। ক্লোজড।
কে কে আর ছাড়াও তো অনেক খেলা আছে। আমি বুঝতে পারছি লোকের ইমোশন জড়িয়ে রয়েছে। বাট ওদেরও বুঝতে হবে, খেলার দুনিয়ায় এ ভাবেই চলে। বিশেষ করে ফ্র্যান্চাইজিদের ওয়ার্ল্ডে। দশটা করে টিম থাকে। লোকে ঘুরেফিরে খেলে। এ তো আর ইন্ডিয়ান টিম নয় যে একটাই টিম।
কত প্লেয়ার আছে। ইউসুফ পাঠান, রাহুল, আমি, গৌতম গম্ভীর, যুবরাজ। চার-পাঁচ জন বাদ দিলে সবাই তো টিম বদলেছে। আমার মনে হয় না, এর বেশি কিছু এর মধ্যে খুঁড়ে বের করা উচিত।

পত্রিকা: তবে সবাই ক্যালেন্ডারে ৫ মে তারিখটার দিকে তাকিয়ে আছে। ইডেনে দাদা ভার্সেস খান।
সৌরভ: এ ভাবে দেখা উচিত নয়। কে কে আর ইজ আ গুড সাইড। আমাদের টিমটাও খারাপ নয়। যারা সে দিন ভাল খেলবে, জিতবে।

পত্রিকা: তবু আপনি যাই বলুন, ম্যাচ অফ দ্য চ্যাম্পিয়নশিপ বলে হাইপ শুরুই হয়ে গেছে। দাদা ভার্সেস খান।
সৌরভ: ইট ইজ নেভার দাদা ভার্সেস খান। আই হ্যাভ গট আ লট অফ রিগার্ড ফর হিম। এই সব করেই লোকে আমার বারোটাটা বাজায়।
পুনে ওয়ারিয়র্স-এর প্র্যাক্টিসে
পত্রিকা: ‘ডন টু’ দেখেছেন?
সৌরভ: না দেখিনি (একটু সময় নিয়ে) অস্ট্রেলিয়ায় ছিলাম তো। এসে দেখলাম... তবে আমি ‘রা ওয়ান’ দেখেছি।

পত্রিকা: শাহরুখ খানের সঙ্গে গত বছরের পুণে ম্যাচের পর আর দেখা হয়েছে?
সৌরভ: একবারই দেখা হয়েছিল। মুম্বই এয়ারপোর্টে।

পত্রিকা: কত দিন আগে?
সৌরভ: মাস চারেক হল।

পত্রিকা: কী কথা হল?
সৌরভ: ওই কী রকম আছি জিজ্ঞেস করছিল। ও কোথায় যেন সিনেমার প্রোমোশনে যাচ্ছিল। একদিন শাহরুখের বউয়ের সঙ্গে দেখা হল। একই ফ্লাইটে আমরা পুণে যাচ্ছিলাম। পাশাপাশি বসে অনেকক্ষণ কথা হল।

পত্রিকা: একেক সময় কি মনে হয় যে, আপনি যে তিন বছর কে কে আর-এ ছিলেন তখন এখনকার সিইও ভেঙ্কি মাইসোর গোছের কেউ টিমটার সঙ্গে ছিলেন না যিনি প্লেয়ারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগে একটা মানবিক স্পর্শ আনতে পারতেন। এসআরকে-র পক্ষে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা সম্ভব নয়। কিন্তু যাঁরা টিম চালান, তাঁরা মানবিক হলে একটা তফাত কি হত না?
সৌরভ: জানি না... অ্যাম নট টু শিওর। আমি ভেঙ্কি মাইসোরের সঙ্গে কোনও দিন কাজ করিনি।

পত্রিকা: অনেকেরই মনে হয় যে লোকটা গ্রেগ চ্যাপেলের ডেরায় বসে তার সামনে নিজেকে প্রমাণ করেছে। তার আবার শাহরুখ খানের সামনে আইপিএল খেলে নিজেকে প্রমাণ করার কী দায় আছে?
সৌরভ: প্রমাণ করার নেই তো। সবাই খেলছে, আমিও খেলছি।

পত্রিকা: আইপিএল খেলার পাশাপাশি পরের বছরের কি লক্ষ্য হতে পারে না বাংলাকে রঞ্জি ট্রফি দেব? রঞ্জি ফাইনালে আমার অভিষেক হয়েছিল। কেরিয়ার শেষ করব অধিনায়ক হিসেবে রঞ্জি জিতে।
সৌরভ: নামেন্টালি আমার পক্ষে ডিফিকাল্ট পুরো সিজন রঞ্জি খেলা। আমার পক্ষে মোটিভেট করা খুব ডিফিকাল্ট। আমি বারবার বারণ করি আমায় ক্যাপ্টেন্সি দিতে। ওই মানসিক হার্ডলটা আমি কিছুতেই ক্রস করতে পারছি না যে, দিনের পর দিন ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করতে পারব। মোটিভেশনটাই পাই না।

পত্রিকা: আগে তো করেছেন?
সৌরভ: আগে করেছি তখন সামনে ইন্ডিয়া টিমে ফিরে আসাটা লক্ষ্য ছিল। বাট তখনও কাজটা খুব পরিশ্রমের ছিল। আগামী বছর যদি রঞ্জি খেলিও কিছুতেই মনে হয় না পুরো সিজনটা সামলাতে পারব বলে।

পত্রিকা: আজকে ধোনির ০-৮ ধরাশায়ী হওয়ার যুগে কি শশাঙ্ক মনোহরকে কোথাও ধন্যবাদ দিচ্ছেন? যিনি ভাল ফর্মে থাকা আপনাকে অবসর নিতে এক রকম বাধ্য করেছিলেন?
সৌরভ: শশাঙ্ক মনোহরের কোনও ভূমিকাই ছিল না আমার অবসরে। মুখ্য ভূমিকা ছিল নির্বাচকদের। যারা ইরানি ট্রফি থেকে আমাকে বাদ দিয়ে সিগনালটা দিয়েই দিয়েছিল। নির্বাচকদের হাবেভাবে বোঝাই যাচ্ছিল ঠিক হোক কি বেঠিক হোক, ওরা আমার জন্য একজন পরিবর্তের তালাশে। অফ কোর্স ওটা বেঠিকই ছিল। রিটায়ারমেন্টের এক সপ্তাহ আগে আমি এশিয়ান প্লেয়ার অফ দ্য উইক হয়েছিলাম।
কিন্তু কী করা যাবে! ওরা তাই ভেবেছিল। আমাদের প্রোফেশনের ধর্মটাই তাই। আমাদের নির্বাচিত হতে হয়। যদি সচিন তেন্ডুলকর না হন, আপনাকে নির্বাচনের ভরসায় বসে থাকতে হবে।

পত্রিকা: তবু কোথাও মনে হয় না সরে যেতে বাধ্য করার জন্য আপনি অন্তত মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রেখে চলে যেতে পারলেন?
সৌরভ: হয়তো আরও এক বছর আমায় খেলতে দিলে মর্যাদা ইনট্যাক্ট রেখেই চলে যেতে পারতাম। হয়তো পারফর্ম করে দিতাম। কিছুই বলা যায় না স্পোর্টসে। হয়তো পারতাম না। কাজেই আমার কোনও তেতো ভাবটাব নেই। যা হয়েছে, হয়েছে। আমি ১১৩টা টেস্ট ম্যাচ খেলে শেষ করেছি। হয়তো সেটা ১৪০-এ গিয়ে দাঁড়াত। তাতে আমি বেশি ভাল প্লেয়ারও হয়ে যেতাম না, বেশি খারাপ প্লেয়ারও হতাম না। জীবন এ ভাবেই চলে।

পত্রিকা: মনে করা যাক আপনি মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ইংল্যান্ডে ০-৪ হেরেছেন। এ বার যাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়া। কী ভাবে এগোতেন?
সৌরভ: আমি নিশ্চয়ই অন্য ভাবে প্রিপেয়ার করতাম। ধোনিকে অবশ্য আমি পুরোটা দায়ী করব না। ও হয়তো ততটা সময়ই পায়নি।
তবে ধোনিকে আমি একটাই পরামর্শ দিতে চাই। মাহি, তুমি যদি চাও লোকে তোমাকে গ্রেট ক্যাপ্টেন বা খুব ভাল অধিনায়ক হিসেবে মনে রাখুক, তা হলে বিদেশে টেস্ট পারফরম্যান্সের ওপর জোর দাও। দিনের শেষে লোকে ওটা দিয়েই ক্যাপ্টেন্সি মাপে।
আমি, ধোনি, ধোনির দশ বছর পরের অধিনায়ক, সবাইকে এই প্রশ্নটা দিয়েই কাটাছেঁড়া করা হবে যে, ভাই তুমি বিদেশে ক’টা জিতেছ? এমএসকে তাই বিদেশে জেতার কৌশল রপ্ত করতে হবে। বিদেশে ওর টেস্ট ক্যাপ্টেন্সির রেকর্ড...

পত্রিকা: জঘন্য...
সৌরভ: জঘন্যবোধহয় ওটাই সবচেয়ে উপযুক্ত শব্দ। তা ছাড়া এমএসকে টেস্টে নিজের ভূমিকা সম্পর্কে আরও সচেতন হতে হবে। এত গয়ংগচ্ছ ভাব দিয়ে চলবে না। ইন্ডিয়ান টেস্ট ক্যাপ্টেন মানে নিজে আগে পারফর্ম করে টিমের কাছে পারফরম্যান্স চাইতে হবে। অথচ ওয়ান-ডে এলেই ওর বডি ল্যাঙ্গুয়েজটা বদলে যায়। দেখলেই বুঝতে পারবেন এই লোকটা অন্য চরিত্র। এটা কেন হবে?

পত্রিকা: এটা কেন হল? টেস্টে ০-৮। আর ওয়ান ডে-তে ০-৩।
সৌরভ: আমরা খুব খারাপ খেলেছি। ১৬ টেস্ট ইনিংসের মধ্যে মাত্র দু’টোতে আমরা ৩০০ ক্রস করেছি। ব্যাটাররা যাচ্ছেতাই খেলেছে। এটাই তো গল্প।

পত্রিকা: বিপর্যয়ের কি আর একটা কারণ হতে পারে যে বেশি বয়সি টিম?
সৌরভ: হ্যাঁ, হতেই পারে। গ্রেট প্লেয়াররা এখনও যথেষ্ট ভাল। কিন্তু তাদের বয়স বেড়ে গিয়েছে। আমার আর একটা জিনিস মনে হয়। ধোনির টেস্ট ক্যাপ্টেন্সি ওর ওয়ান-ডের মতো চৌখস নয়। ওর ফিল্ড সাজানো, ওর বোলিং চেঞ্জ, ওর টিমকে একসঙ্গে করা, সব কিছুই যেন আলাদা।
আমার যে টিমটা অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিল তাতে স্টিল অনেক বেশি ছিল।

পত্রিকা: এদের চেয়ে অনেক বেশি?
সৌরভ: হ্যা। অনেক বেশি।

পত্রিকা: টিমটার চুরমার হওয়া দেখে কখনও কি লোভ হয়নি যে যাই। গিয়ে কোচ হয়ে টিমটার হাল ধরি।
সৌরভ: না মনে হয়নি। এখন নয়, পরে কখনও। প্রোভাইডেড ওরা আমাকে চাকরিটা দেয়।

পত্রিকা: ধরা যাক আপনি ক্রিকেট লেখেন। আপনার চোখের সামনে ধড় ধড় করে একেকটা লেজেন্ড চলে যাচ্ছে। কুম্বলে, সৌরভ, দ্রাবিড়। আপনি তখন কী লিখতেন? মনের অবস্থা কী হত?
সৌরভ: বুঝতাম এটা ন্যাচারাল প্রসেস। পৃথিবীর তাই নিয়ম। স্পোর্টসেরও তাই নিয়ম। একেক জনের বয়স ৩৯, ৪০। আমি ক্রিকেট রাইটার হলে খুশি হতাম এই ভেবে যে ওরা এত দিন যে ছিল। এত দিন যে ওরা টানতে পারল। বুঝতাম খেলাটার নিয়মই এই। কোথাও না কোথাও ইয়াংদের জন্য জায়গাটা ছেড়ে দিতে হয়। ওদেরও তো বড় হওয়ার জন্য সময় দিতে হবে। একটা মরসুমে তো রাহুল দ্রাবিড় তৈরি হয়নি। একটা সিজনে তেন্ডুলকরও আসেনি। গাওস্করও আসেনি। কাজেই বাচ্চাগুলোকে ঠেলে জলে ফেলে দিতে হবে। যাতে সাঁতার শিখে নিতে পারে।

পত্রিকা: অথচ আপনি চলে যাওয়ার তিন বছর বাদেও ছ’ নম্বরে কাউকে পাওয়া গেল না। তিন নম্বরেও কাউকে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না।
সৌরভ: ওই কোয়ালিটির প্লেয়ার চট করে পাবেন না। কিন্তু টানা সুযোগ দিয়ে যেতেই হবে। যখন গাওস্কর শেষ করেছিলেন, কে জানত তেন্ডুলকর বলে কেউ অপেক্ষায় রয়েছে। কে জানত পরপর উঠে আসবে দ্রাবিড়, গাঙ্গুলি, লক্ষ্মণ।

পত্রিকা: আপনার পরামর্শ এই তিন জনের জন্য। কোহলি। রোহিত। রায়না।
সৌরভ: কোহলি আর রোহিত এদের মধ্যে বেটার প্লেয়ার। রায়না টেস্ট ক্রিকেটের জন্য ভাল নয়। তার মধ্যে কোহলিকে আমি বলব মাথা নিচু করে রান করে যাও। আমার মনে হয় ওকে একটু তাড়াতাড়িই ভাইস-ক্যাপ্টেন করে দেওয়া হয়েছে। ওকে আমি বলতে চাই নিজের প্রতি মন দাও। নিজের ক্রিকেটটাকে সামলাও। আমাদের জেনারেশনের মনটা আনো, যে ভাল ক্রিকেট খেলতে পারার পাশে সবই তুচ্ছ।

পত্রিকা: চোখের সামনে টিম ইন্ডিয়াকে ০-৮ হারতে দেখে কী মনে হচ্ছিল? যে টিমটার গর্ব আপনার অধিনায়কত্বে চুঁইয়ে, চুঁইয়ে পড়ত?
সৌরভ: মর্মান্তিক লাগছিল কমেন্ট্রি বক্সে বসে। আর প্রত্যেকটা হার আমি কিনা লাইভ বসে দেখেছি। পারথে হেরে গেছি আড়াই দিনে। বার্মিংহামে ফ্ল্যাট পিচে আড়াই দিনে। যেখানে গেছি, সেখানে হেরেছি। ভীষণ হতাশ লাগত। একটা-দু’টো ম্যাচ লড়ে হারলে বোঝা যায়।

পত্রিকা: তবু আপনার অন্তিম পোস্ট মর্টেম কী? বিশ্বকাপ জেতার আত্মতুষ্টিতে হারলাম?
সৌরভ: আত্মতুষ্টি হতে পারে না। টানা এত দিন আত্মতুষ্টিতে হারা যায় নাকি? আমার তো মনে হয় বোর্ডের ধোনির সঙ্গে বসা উচিত। সটান জিজ্ঞেস করা উচিত যে, তুমি কী চাইছ? কী ভাবছ? প্রত্যেক ক্যাপ্টেনের একটা সেল্ফ লাইফ থাকে। তুমি সে সম্পর্কে কী ভাবছ?

পত্রিকা: শেষ ন’ মাস রাজ্যে নতুন সরকার। নানা বিতর্ক। নানা সাফল্য। নানা ব্যর্থতা।
সৌরভ: আমায় রাজনীতি নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করবেন না। ওটা নিয়ে কথা বলতে চাই না।

পত্রিকা: ও কে। অন্য প্রসঙ্গ। ‘দাদাগিরি’ আপনার ট্রেডমার্ক শো, এখন মিঠুন করেন। দাদাগিরি অন্য কেউ করছে দেখে কী মনে হয়?
সৌরভ: আমি করতে পারিনি। মিঠুনদা করছে। জীবনটা এ রকমই। কেবিসি-ও তো অমিতাভ বচ্চনের পর শাহরুখ খান করেছিল।

পত্রিকা: তেন্ডুলকরের ১০০ সেঞ্চুরির পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞেস করছিআপনার প্রিয় তেন্ডুলকর কাহিনি কোনটা?
সৌরভ: আমি যখন ওকে প্রথম দেখি, ওর বয়স ১৫। নেট থেকে বেরোতই না। সারাক্ষণ প্র্যাকটিস করত। সেই লোকটাকে ২০০৩ বিশ্বকাপে দেখলাম প্লেয়ার অফ দ্য টুর্নামেন্ট হতে। একদিনও নেট না করে। শুধু ছুড়িয়ে, ছুড়িয়ে প্র্যাক্টিস করত। আরেক বার কেপ টাউনে ব্যাট করতে দেখেছিলাম। সেঞ্চুরি করল সাউথ আফ্রিকার সঙ্গে। সারাক্ষণ সাফ্ল করল। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম কোনও দিন তো করিস না। হঠাৎ সাফ্ল করলি? বলল ক্রিজে গিয়ে ঠিক করলাম। ভাবতে পারেন টেস্ট ম্যাচে ক্রিজে গিয়ে কেউ ঠিক করতে পারে! এই হল জিনিয়াস!

পত্রিকা: সম্প্রতি এক বলিউড পরিচালক ট্যুইট করেছেন, আমাদের সিনিয়ররা কখন রিটায়ার করবে তা নিয়ে চ্যাপেল ভাইদের পরামর্শ শুনতে চাই না।
সৌরভ: হা, হা, হা! ইট ডাজ নট ম্যাটার হোয়াট দে সে।

পত্রিকা: অনেকে মনে করে অবসর না নিয়ে দ্রাবিড়দেরও থেকে যাওয়া উচিত ছিল যাতে ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বদলা নেওয়া যায়।
সৌরভ: কীসের বদলা? প্রতিশোধ তো তখনই সম্ভব যদি আমরা ইংল্যান্ডে গিয়ে ইংল্যান্ড, আর অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারি। সেটা যখন সম্ভব নয়, তখন ঘরে জিতে কী হবে? অস্ট্রেলিয়াকে আমাদের মাঠে হারিয়ে প্রতিশোধ হয় না।

পত্রিকা: সে দিন আপনাকে নিয়ে তোলা একটা তথ্যচিত্রের ডিভিডি বেরোলদ্য ওয়ারিয়র প্রিন্স।
সৌরভ: হু।

পত্রিকা: বয়কট আপনাকে বলতেন প্রিন্স অফ ক্যালকাটা। অথচ বরাবরই আপনি এমন রাজকুমার যাকে রাস্তায় নেমে যুদ্ধ করতে হয়েছে। তা হলে কোন বিশেষণটা আপনার জন্য ঠিক?
সৌরভ: লাইফে সবাইকে যুদ্ধ করতে হয়। লাইফ ইজ নেভার ইজি। যত ওপরে যাবেন, তত বেশি যুদ্ধ। তত বেশি বাঁচার লড়াই। দেশের প্রধানমন্ত্রীও ছাড় পায় না। নীচের লেভেলে হলে লোকে অনেক সময় সহানুভূতি দেখায়। ওপরে ও সব মায়াদয়া দেখানোর জায়গা নেই।

পত্রিকা: এখনও যে লড়তে হচ্ছে এটা কেমন লাগে?
সৌরভ: সব সময় উপভোগ করি না। কিন্তু এটাই আমার পেশার ধরন।

পত্রিকা: তা হলে কোন বিশেষণটা আপনার জন্য ঠিক?
সৌরভ: আমি শুধু একটা বিশেষণই বুঝি আর তাকে তাড়া করি। তার নাম সাফল্য। সাকসেস। সেটা করতে গিয়ে আমাকে প্রিন্স, ওয়ারিয়র যা ইচ্ছে বলা হোক। এগুলো স্রেফ নাম। এগুলোতে আমার কোনও আসক্তি নেই। আমি বুঝি রান আর উইকেট।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.