সুরাহা কবে
ফাঁসের সড়ক
রাস্তা একই। কিন্তু যান চলাচলের ছবি দুই রকম। এক অংশে যানজট প্রায় নেই বললেই চলে। অন্য অংশে যানজট লেগেই আছে। রাস্তাটি হাওড়া-আমতা রোড।
হাওড়া-আমতা রোডের শানপুর থেকে জাপানি গেট পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের অধীন। জাপানি গেট পার হয়ে বাঁকড়াবাজার থেকে শুরু হয়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক পার করে আমতা পর্যন্ত রাস্তাটি হাওড়া জেলা পুলিশের অধীনে। স্থানীয় বাসিন্দা ও যানচালকরা জানান, পুলিশ কমিশনারেট হওয়ার পরে শানপুর থেকে জাপানি গেট পর্যন্ত অংশে যানজট প্রায় নেই বললেই চলে। কিন্তু বাঁকড়াবাজার থেকে জাতীয় সড়কের শলপ বাজার পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তায় যানজট লেগেই থাকে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এই অংশে প্রায়ই ট্রাফিক আইন মানা হয় না। রাস্তার দু’পাশে জবরদখল রয়েছে। তা ছাড়া রাস্তা জুড়ে বাস ও ট্রেকার দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু হেলদোল নেই হাওড়া জেলা পুলিশের।
এর ফলে সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ। শানপুর থেকে সহজে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক যাওয়ার জন্য হাওড়া-আমতা রোডেই যাতায়াত করেন সুবল নস্কর। জাপানি গেট সহজে পেরিয়ে গেলেও তার পরেই সমস্যা শুরু হয়। বাঁকড়াবাজার এলাকা থেকে শুরু হওয়া যানজট ঠেলে সলপ পৌঁছতেই সুবলবাবুর পাক্কা দেড় ঘণ্টা সময় লেগে যায়। নিত্যযাত্রীরা জানান, পুলিশ কমিশনারেট হওয়ার আগে পর্যন্ত পুরো হাওড়া-আমতা রোড জুড়েই যানজট হত। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসে হাওড়া সিটি পুলিশ তৈরি হওয়ার পরেই শানপুর থেকে জাপানি গেট পর্যন্ত ট্রাফিককর্মীর সংখ্যা বেড়েছে। মিলিছে সুফলও। কিন্তু বাকি অংশটুকু একই রয়ে গিয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ।
এমনিতেই রাস্তাটির এই অংশ সংঙ্কীর্ণ। অভিযোগ, তার উপরে দু’পাশে বাজার, ঝুপড়ি, দোকান, গুমটি গজিয়ে উঠেছে। মুম্বই রোড, হাওড়া এবং হুগলির বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে সংযোগকারী এই রাস্তায় গাড়ির চাপ এমনই বেশি। স্থানীয় বাসিন্দা মিনতি কোলের কথায়: “রাস্তার উপরেই বাজার-দোকান বসে। গা ঘেঁষে গাড়ি চলে যায়। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। বাচ্চাদের নিয়ে যাতায়াত করাই দায় হয়ে উঠেছে।”
বাঁকড়াবাজারের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুন্সিডাঙা মোড়। সেখানে রাস্তার পাশেই ব্যবসায়ীরা দোকান করেছেন। রাস্তায় মালপত্র রাখা। মাল ওঠাতে-নামাতে রাস্তার পাশে প্রায়ই ছোট-বড় গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তা দখল করে তৈরি হয়ে গিয়েছে মিনিবাস, ট্রেকার ও রিকশাস্ট্যান্ড।
দ্বিমুখী এই রাস্তায় ডিভাইডার না-থাকায় বেপরোয়া ভাবে যান চলাচল করে। ট্রাফিক পুলিশের দেখা মেলাই ভার। স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল হক বলেন, “পথচারীদের প্রাণ হাতে যাতায়াত করতে হয়। পুলিশ কিছুই করে না।”
ডোমজুড়ের বিধায়ক তৃণমূলের রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “হাওড়া-আমতা রোডটি জাতীয় সড়ক পর্যন্ত হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের অধীনে আনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন জানিয়েছি। জবরদখলকারীদের উচ্ছেদের জন্য স্থানীয় মানুষ ও পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। রাস্তাটিকে দুই লেন করার বিষয়ে পূর্ত দফতরের সঙ্গে কথা বলব।”
হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “জেলা পুলিশের অংশের যানজটের বিষয়ে ওদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যদিও হাওড়া জেলা পুলিশের সুপার রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “জেলা পুলিশে প্রয়োজনের তুলনায় ট্রাফিক পুলিশকর্মীর সংখ্যা খুবই কম। তাই এখনই সমস্যা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।”

ছবি: রণজিৎ নন্দী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.