ব্যাঙ্ক ডাকাতির তদন্তে নেমে খোঁজ মিলল এমন এক সমাজবিরোধীর যাকে বহুদিন ধরে খুঁজছে তিন জেলার পুলিশ। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাদিক খুন, ডাকাতি, অস্ত্র পাচারের অভিযোগ।
বাসুদেব হাওলাদার উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের বাসিন্দা। সেখানে জোড়া খুনের মামলায় সাড়ে তিন বছর জেল খেটে ছাড়া পাওয়ার পর নবদ্বীপের স্বরূপগঞ্জ এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে ব্যবসা শুরু করে। পুলিশের অনুমান ব্যবসার আড়ালে এখান থেকেই বিভিন্ন জেলার পরিচিত অপরাধীদের দিয়ে দল তৈরি করে খুন, ডাকাতি, অস্ত্র ব্যবসা জমিয়ে তুলেছিল সে।
৪ জানুয়ারি নবদ্বীপের স্বরূপগঞ্জে একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার ডাকাতিতে অভিযুক্তদের মূল পান্ডাকে সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার আড়াই মাসের মধ্যে ২২ মার্চ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নদিয়ার ফকিরতলা থেকে পুলিশ ফাঁদ পেতে গ্রেফতার করে বাসুদেব হাওলাদার নামে এক কুখ্যাত খুনিকে। ২৩ মার্চ নবদ্বীপের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তাকে পেশ করা হয় এবং পুলিশের তরফে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করা হয়। বিচারক সেই নির্দেশ দেন। তাকে জেরা করে নানান দুষ্কর্মের তথ্য উদ্ধার করেছে পুলিশ। নদিয়ার পুলিশ সুপার সব্যসাচীরমন মিশ্র বলেন, “ধৃত ওই ব্যক্তি কুখ্যাত দুষ্কৃতী। নদিয়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ বিভিন্ন জেলায় তার দুষ্কর্মের সন্ধান পেয়েছি আমরা। ইতিমধ্যে ব্যাঙ্ক ডাকাতিতে যুক্তদের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। তারা বিভিন্ন জেলার নিজস্ব থানায় ধরা পড়েছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২১ ডিসেম্বর রাতে বিরহীর কাছে রাজু দাস নামে এক ব্যক্তি খুন হয়েছিল। পাঁচজন মিলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর একটি ধাবায় খাওয়াদাওয়ার পর তাদের চারজন মিলে পঞ্চম ব্যক্তিকে খুন করেছিল। পুলিশি জেরায় বাসুদেব স্বীকার করেছে যে সেই রাজু দাসকে গুলি করেছিল। অস্ত্র পাচারের সঙ্গেও জড়িয়ে ছিল বাসুদেব। ফকিরতলায় যে বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় সেখান থেকে পাঁচ কেজি বোমার মশলাও উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্বরূপগঞ্জের ব্যাঙ্ক ডাকাতির তদন্ত করতে গিয়ে স্থানীয় হরিশপুর এবং ভালুকা থেকে দুটি মোটরবাইক উদ্ধার করে পুলিশ। সেই সূত্র ধরে তল্লাশি চালিয়ে ক্যানিং থেকে ডাকাতিতে খোওয়া যাওয়া ৬০ হাজার টাকাও উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার নবদ্বীপের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অরিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে ব্যসুদেবকে হাজির করানো হয়। আদালতের সরকারি কৌসুলি নব্যেন্দু মণ্ডল বলেন, “বিচারক ১৪ দিনের জেল হাজতের নিদের্শ দিয়েছেন। ধৃত ব্যক্তি বহু দুষ্কর্মে যুক্ত বলে প্রমাণ মিলেছে।” |