বাইরের দেওয়ালে ঝুলছে কলকাতা পুরসভার সতর্কবার্তা ‘বিপজ্জনক বাড়ি’। নড়বড়ে, দুর্বল রেলিং ধরে চারতলায় উঠতে একতলা এবং দোতলা পেরোতে হয় কাঠের সিঁড়ি দিয়ে। বাড়িটির ভিতরেই রয়েছে বেশ কয়েকটি অফিস। ৭৬ ই আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের সেই বাড়ির ভিতরে এমনই অফসেট প্রিন্টিংয়ের অফিসে বৃহস্পতিবার সকালে আগুন লাগে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে।
কিন্তু ‘বিপজ্জনক বাড়ি’ হিসেবে নোটিস টাঙানোর পরেও তার ভিতরে এ ভাবে অফিস চলার বিষয়টি কী করে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে গেল, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে। এর উত্তর নেই কোনও মহলেই। দায় নিয়ে ঠেলাঠেলি চলছে প্রশাসনিক দফতরগুলির মধ্যে। |
কলকাতা পুরসভার ডিজি (বিল্ডিং) অনিন্দ্য কারফর্মা বলেন, “এই বাড়ির বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে। তবে এ রকম অজস্র বাড়ি রয়েছে। দমকল ও পুলিশকে জানিয়েছি। আমরা আর কী করতে পারি!”
কার্যত একই সুর ডি জি (দমকল) দুর্গাপ্রসাদ তারানিয়ার বক্তব্যেও। তাঁর কথায়, “কলকাতার অর্ধেকেরও বেশি বিপজ্জনক বাড়ি এই অবস্থায় রয়েছে। সব বাড়ি কী ভেঙে দেওয়া সম্ভব? আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল পৌনে এগারোটা নাগাদ ওই বাড়ির চারতলায় ‘ফোটো স্ক্যান’ নামে একটি অফসেট প্রিন্টিংয়ের অফিসে আগুন লাগে। সেখানকার মিটার ঘর থেকে কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অনেকে। কর্মীদের দাবি, অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্রের সাহায্য তাঁরা নিজেরাই প্রাথমিক অবস্থায় আগুনের সঙ্গে মোকাবিলা করেন। পরে দমকল এসে আগুন পুরোপুরি নেভায়।
তবে অফিস বাড়ির ভিতরে ঢুকে দেখা যায়, দোতলা পর্যন্ত সিঁড়ি কাঠের। চারতলায় পৌঁছনোর সরু একটি সিঁড়ি। রেলিং নড়বড়ে। যে অফিসটি পুড়েছে, সেটির মেঝে কাঠ দিয়ে বাঁধানো। ভিতরে প্লাইউডের ছোট ছোট কিউবিক্ল। আছে ফল্স সিলিং-ও। যার একটি অংশ আগুনে পুড়ে গিয়েছে।
এমন বিপজ্জনক বাড়িতে কেন এই ভাবে অফিস সাজানো হয়েছে, তা নিয়ে কর্মীরা কেউ কোনও কথা বলতে চাননি। অফিস কর্তৃপক্ষকে অবশ্য ঘটনাস্থলে দেখাই যায়নি। |