বর্ধমান মেডিক্যাল
লাঠি-রড নিয়ে বেধড়ক মার সাংবাদিকদের
র্মবিরতি ও বিক্ষোভের ছবি তোলার ‘অপরাধে’ সংবাদমাধ্যমের কিছু প্রতিনিধিকে রাস্তায় ফেলে পেটানোর অভিযোগ উঠল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে। বুধবার দুপুরে হাসপাতালের রাধারানি ওয়ার্ডের সামনে আক্রান্ত হন সাংবাদিকেরা। লাঠি, রডের ঘায়ে আহত হন পাঁচ জন। আনন্দবাজার পত্রিকার চিত্র সাংবাদিক উদিত সিংহ-সহ দু’জনের চোট গুরুতর। হাসপাতালেরই জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে দু’জনকে ভর্তি করানো হয় একটি নার্সিংহোমে।
জখম আলোকচিত্রী উদিত সিংহ।
রাতে বর্ধমানের সাংবাদিকেরা গণস্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র পুলিশের কাছে জমা দেন। রাত পর্যন্ত অবশ্য কেউ ধরা পড়েনি। ঘটনার সময় বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী উপস্থিত থাকলেও কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠছে, সামান্য কোনও গণ্ডগোল বাধলেই জুনিয়র ডাক্তারদের বারবার কর্মবিরতি ডেকে সাধারণ রোগীদের হয়রান করা নিয়েও। এ দিনের ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। হামলাকারীদের কড়া শাস্তির দাবি তুলেছে সাংবাদিকদের স্থানীয় সংগঠনগুলি। বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা বলেন, “যে ভাবে চিকিৎসকেরা সাংবাদিকদের আক্রমণ করেছেন, তা নিন্দার ভাষা নেই।” হাসপাতালের ডেপুটি সুপার তাপসকুমার ঘোষের মন্তব্য, “জুনিয়র ডাক্তারেরা যে ভাবে সাংবাদিকদের উপরে চড়াও হয়েছেন, তাতে লজ্জিত।”
সাংবাদিকদের উপরে জুনিয়র ডাক্তারদের হামলা নতুন নয়। মাস তিনেক আগেই বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজেও জুনিয়র ডাক্তারদের একটি বড় অংশের হাতে মার খেয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।
জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির খবর
সংগ্রহে গিয়ে হামলার মুখে সাংবাদিকেরা।
হাসপাতালে জখম চিত্র
সাংবাদিক উদিত সিংহ।
কেন বারবার সংবাদমাধ্যমকেই জুনিয়র ডাক্তারেরা আক্রমণের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিচ্ছেন, সে প্রশ্নে রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কোনও পরিস্থিতিতেই এমন ঘটনা কাম্য নয়। পারস্পরিক অবিশ্বাস থেকেই হয়তো এমন ঘটছে। আমি দু’পক্ষের সঙ্গেই কথা বলব। এই মুহূর্তে সব পক্ষের সংযত থাকাটাই জরুরি।”
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, এ দিন রেশমি খাতুন (১৬) নামে হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক হাঁপানির রোগিণীর মৃত্যুকে ঘিরে ঘটনার সূত্রপাত। চিকিৎসায় গাফিলতিতে ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ তুলে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বচসা বাধে মৃতের পরিবারের। হাতাহাতিও হয়। এর পরেই জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতির ডাক দিয়ে হাসপাতাল চত্বরে মিছিল করেন। সাংবাদিকরা সেই খবর সংগ্রহে যেতেই মারমুখী হয়ে ওঠেন জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। যে কোনও ঘটনার ক্ষেত্রেই সংবাদমাধ্যমের একাংশ তাঁদের দায়ী করেন, এই অভিযোগে লাঠি, রড নিয়ে তাঁরা চড়াও হন। মাটিতে ফেলে পেটানো হয় সাংবাদিকদের। অনেকের ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া হয়। মাথা ফাটে উদিত সিংহের।
এই রোগিণীর মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগ নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত।
খবর পেয়ে আরও সাংবাদিক সেখানে পৌঁছন। তাঁদের অভিযোগ, ফের জুনিয়র ডাক্তারেরা তাঁদের ঘেরাও করেন। হাসপাতালে পৌঁছন জেলাশাসক। র্যাফ ও পুলিশবাহিনী নিয়ে যান ডিএসপি অম্লানকুসুম ঘোষ। তাঁরা আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করেন। বর্ধমান মেডিক্যালের অধ্যক্ষ মঞ্জুশ্রী রায় জানান, হাসপাতালের সুপার ও ডেপুটি সুপারকে অবিলম্বে এই ঘটনায় জড়িত জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের ডেপুটি সুপার বলেন, “জুনিয়র ডাক্তারেরা রোগীর বাড়ির লোকেদেরও মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা এই ঘটনায় জড়িত কয়েক জনের নাম জেনেছি। পুলিশ চাইলে সেগুলি জানিয়ে দেব।” জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, ‘‘হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখা হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বুধবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.