|
|
|
|
বকেয়া পাবেন বিধবা স্ত্রী |
স্বাধীনতা সংগ্রামীর পেনশন
বন্ধ করায় কেন্দ্রের জরিমানা
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
|
স্বাধীনতা সংগ্রামীর স্বীকৃতি দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারই পেনশন চালু করেছিল। পরে ‘প্রামাণ্য তথ্য’-এর অভাবের কথা বলে তা বন্ধও করে দেয়। তার পরে মামলা, পাল্টা মামলা।
এর মধ্যেই মৃত্যু হয় ওই স্বাধীনতা সংগ্রামীর। তাঁর বিধবা স্ত্রীকে বছরের পর বছর প্রাপ্য পেনশন না-দেওয়ার দায়ে অবশেষে কেন্দ্রের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে হাইকোর্ট বুধবার নির্দেশ দিয়েছে, পেনশন বাবদ বকেয়া সমস্ত টাকা ১০ শতাংশ সুদ-সহ মিটিয়ে দিতে হবে দু’সপ্তাহের মধ্যে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ধরমপুরের বাসিন্দা চুনীলাল মান্না পেনশনের জন্য ১৯৮৭ সাল থেকে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা লড়তে লড়তে ’৯৬ সালে মারা যান। তার পর থেকে তাঁর বিধবা স্ত্রী প্রতিমারানি মান্না ওই মামলা লড়তে থাকেন। বুধবার বিচারপতি পিনাকী ঘোষ ও বিচারপতি মৃণালকান্তি চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, প্রতিমাদেবী স্বামীর পেনশন পাবেন। সুদ-সহ তাঁর বকেয়া প্রাপ্যও মিটিয়ে দিতে হবে কেন্দ্রকে।
হয়রানির ইতিহাস অবশ্য তারও অনেক আগেকার। আবেদনকারিণীর আইনজীবী অমরেশ প্রধান জানান, কেন্দ্রীয় সরকার ১৯৭৪ সালে চুনীলালবাবুকে জানায়, স্বাধীনতার যোদ্ধা হিসেবে তাঁকে মাসে ২০০ টাকা পেনশন দেওয়া হবে। ’৮৭ সাল পর্যন্ত ওই হারে পেনশন পেয়ে এসেছেন তিনি। কিন্তু তার পরে কেন্দ্র হঠাৎ জানায়, চুনীলালবাবু যে স্বাধীনতা-যোদ্ধা ছিলেন, তার কোনও প্রামাণ্য তথ্য তাদের কাছে নেই। তাই তিনি আর পেনশন পাবেন না।
এই অপমান সহ্য করতে না-পেরে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে প্রতিকার চান চুনীলালবাবু। মহিষাদল থানাকে এই ব্যাপারে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ওই থানা খোঁজখবর নিয়ে জানায়, স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দিয়ে ’৪৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল খেটেছেন চুনীলালবাবু। এই রিপোর্ট পেয়ে বিচারপতি মহারাজা সিংহ কেন্দ্রীয় সরকারকে অবিলম্বে ফের পেনশন চালু করার এবং বকেয়া প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
সেই নির্দেশের পরেও বকেয়া না-মিটিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা করে কেন্দ্র। ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন রায় দেয় চুনীলালবাবু ও প্রতিমাদেবীর অনুকূলে। কিন্তু হাইকোর্টের এই রায় সত্ত্বেও বৃদ্ধা প্রতিমাদেবী কবে পেনশনের টাকা হাতে পাবেন, তা নিয়ে আইনজীবীরা সন্দিহান।
কারণ এর পরেও কেন্দ্র যদি ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ পালন না-করে, তা হলে প্রতিমাদেবীকে আবার হাইকোর্টে আদালত অবমাননার মামলা করতে হবে। তাঁর পেনশন এবং বকেয়া প্রাপ্য হাতে পাওয়ার বিষয়টি বিলম্বিত হতেই থাকবে। |
|
|
|
|
|