এক দিকে আন্তর্জাতিক মন্দা তথা ইউরো-সঙ্কট কাটানোর পথ খোঁজা। অন্য দিকে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে অস্থিরতা কমানো।
আগামী কাল নয়াদিল্লিতে ‘ব্রিকস’ সম্মেলনের মঞ্চে দু’টি সমস্যারই সমাধান খুঁজবেন ভারত, চিন, রাশিয়া, ও দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপ্রধানরা। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে এ কথা জানিয়ে বলা হয়েছে, ব্রিকস-ভুক্ত রাষ্ট্রগুলির মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেন মসৃণ করার জন্য চুক্তি হবে। চারটি দেশের ব্যাঙ্ক-ব্যবস্থার সমন্বয়ের জন্যও পদক্ষেপ করা হবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিষয়গুলিকেও একই রকম গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। |
ব্রিকস সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের সঙ্গে
চিনের প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও। বুধবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: রয়টার্স |
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের কথায়, শীর্ষ বৈঠকের শেষে একটি ‘দিল্লি ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করা হবে। সেই ঘোষণাপত্রেই থাকবে ভবিষ্যতের পথনির্দেশিকা। বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, এমন একটি সময়ে শীর্ষ সম্মেলনটি হতে চলেছে, যখন আন্তর্জাতিক সমস্যাগুলিকে উপেক্ষা করার কোনও উপায়ই নেই। এর আগে গত বছরের শেষার্ধে ওয়াশিংটনে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে নয়াদিল্লি চেষ্টা করেছিল বেজিংকে পাশে নিয়ে ইউরো সঙ্কট থেকে বেরোনোর পন্থা তৈরি করতে। গ্রিস, পর্তুগাল, ইতালির মতো মন্দাগ্রস্ত দেশগুলির রাষ্ট্রীয় বন্ড যাতে কিনে নেয় চিন, সে জন্য অনুরোধ করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। তাতে খুব একটা সাড়া পাওয়া যায়নি। ভারতের বক্তব্য, এশিয়ার সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি চিনের উপর ধারাবাহিক ভাবে চাপ বজায় রাখা প্রয়োজন। ব্রিকস-এ রাশিয়া, ব্রাজিলকে পাশে নিয়ে এই কাজটিই করতে চাইছে নয়াদিল্লি। |
চিনের প্রেসিডেন্ট হু জিনতাওয়ের ভারত সফরের প্রতিবাদ তিব্বতিদের। নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই |
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর ইরান থেকে তেল আমদানি নিয়ে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে উদ্বিগ্ন সাউথ ব্লক। আমেরিকার সঙ্গে ইরানের উত্তাপ যত বাড়ছে, সার্বিক ভাবে দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার রাজনীতিও তত উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। খাদ্যশস্য-ওষুধ ইত্যাদি রফতানির বিনিময়ে তেহরানকে তেলের দাম দেওয়া যায় কিনা, সে দিকটিও খতিয়ে দেখতে বাণিজ্য মন্ত্রক থেকে কর্তাদের পাঠানো হয়েছে। ভারতের পাশাপাশি রাশিয়াও চাইছে, ইরানের সঙ্গে আমেরিকার জটিলতা যুদ্ধ-পরিস্থিতির দিকে যেন না যায়। সেটা হলে অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি তেলের দাম বেড়ে এক মারাত্মক অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরি হবে গোটা এলাকায়। ব্রিকস সম্মেলনে এই নিয়ে সম্মিলিত আওয়াজ তুলতে চাইছে গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি। |