খসে পড়েছে সিমেন্টের চাঁই। দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যখন তখন। চারদিকে নেই কোনও দেওয়াল। রোদ-জলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে প্রয়োজনীয় নথিও। এমনই বেহাল দশা কালনা মহকুমা আদালতের বিচার প্রার্থীদের বসার জায়গাটির।
মহকুমার ৫টি ব্লকের কয়েকহাজার মানুষের নিত্য আনাগোনা এই আদালতে। বিচার-সহ নানা প্রয়োজনে আসা সাধারণ মানুষের জন্য প্রায় তিন দশক আগে তৈরি করা হয়েছিল একটি কংক্রিটের ছাউনি। ভিতরে প্রায় ৩০ জনের বসার জায়গা। কিছুদিন পর থেকেই সাধারণ মানুষদের পাশাপাশি মুহুরি, সরকারি আইনজীবী ও টাইপিস্টরাও ওই জায়গায় বসতে শুরু করেন। অথচ এখনও কোনও সংস্কার না হওয়ায় কার্যত নষ্ট হতে বসেছে ওই ছাউনিটি। নিরুপায় হয়ে তার ভিতরেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
মুহুরি সংগঠনের সভাপতি সনৎ প্রামানিক জানান, বর্তমানে ওই শেডের তলায় বসে ১৫ জন কেরানি কাজ করেন। রয়েছেন ৭ জন টাইপিস্ট, ১০ জন সরকারি আইনজীবী। কাজ করেন নোটারি ম্যাজিস্ট্রেটরাও। তিনি বলেন, ‘শেডটি তৈরির সময়ে চত্বরে ৩টি আদালত ছিল । বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬টি। ফলে চত্বরে যেমন মানুষের ভিড় বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে ল-ক্লার্কদের সংখ্যা। অথচ বসার জায়গা রয়ে গিয়েছে একই।” |
তাঁর কথায়, আদালত চত্বরে বসার কোনও জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়ে ওই শেডের তলাতেই বসতে হয় তাঁদের। সম্প্রতি সৌমেন মজুমদার নামে এক মুহুরির টেবিলের উপরে ভেঙে পড়ে একটি বড় সিমেন্টের চাঁই। সৌমেনবাবু বলেন, “সেই দিন অন্য প্রয়োজনে বাইরে ছিলাম। ভিতরে থাকলে প্রাণহানিও হতে পারত।” সনৎবাবুর ক্ষোভ, বারবার মহকুমাশাসকের কাছে বিষয়টি জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। তাঁর কথায়, এরকম আরও দু’টি শেড আদালত চত্বরে অবিলম্বে প্রয়োজন।
অন্য দিকে, আলাদা বসার জায়গা না থাকায় সরকারি আইনজীবীরাও চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। সরকারি আইনজীবা মলয় পাঁজা বলেন, “ঘরের অভাবে কেস ডায়েরি সংক্রান্ত নথি আমাদের বাড়ি নিয়ে গিয়ে দেখতে হয়। অথচ তা নিয়মবিরুদ্ধ। নির্দিষ্ট একটি ঘরে বসার জায়গার পাশাপাশি ওই নথিগুলি রাখলে কাজের সুবিধা হয়।” পাশাপাশি আদালতে শৌচাগারের পরিকাঠামো নেই বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। তিনি জানান, গ্রাম-গঞ্জ থেকে আসা মহিলারা এতে খুবই অসুবিধায় পড়েন।
বুধবার কালনার মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচি বলেন, “বেশ কিছু ভবন তৈরির কাজ চলছে। সেগুলি তৈরি হলে আদালত-সহ বেশ কিছু সরকারি দফতরের পরিকাঠামোর উন্নতি হবে।” যদিও মুহুরিদের বসার জায়গার প্রসঙ্গে তিনি জানান, তাঁদের জন্য পরিকাঠামোর বিষয়টি পরে ভাবা হবে। |