পাবলিক-প্রাইভেট পাটনারশিপে রাজ্যের প্রথম জল প্রকল্পের শিল্যানাস হল বাঁকুড়ার ছাতনায়। রবিবার দুপুরে ছাতনা ব্লকের কাঁকি গ্রামে দ্বারকেশ্বর নদের ভূগর্ভ থেকে পাম্পের সাহায্যে জল তুলে পাঁচটি মৌজায় নলবাহিত জল সরবরাহ করার প্রকল্পের কাজের সূচনা করেন জনস্বাস্থ্য কারিগরী মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বাঁকুড়া-পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের মত খরা কবলিত এলাকায় পানীয় জল পৌঁছে দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। সে জন্য পাবলিক-প্রাইভেট পাটনারশিপে রাজ্যের প্রথম জল প্রকল্পটি এখানেই শুরু করা হচ্ছে।”
মন্ত্রী বলেন, পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে কেন্দ্রীয় সরকার ১১০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। বড়জোড়ায় দামোদর নদ থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল এনে প্রথম পর্যায়ে জেলার ১৪টি ব্লকে সরবরাহ করা হবে। দ্বিতীয় দফায় বাকি আটটি ব্লকে জল পৌঁছে দেওয়া হবে।” |
আগামী দু’বছরের মধ্যে এই প্রকল্প রূপায়ণ করা হবে বলে মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, পুরুলিয়ার ২০টি ব্লকে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ছাতনা থানার জোড়হিড়ায় স্পঞ্জ আয়রন-সহ কয়েকটি প্রকল্পের একটি কারখানার সঙ্গে রাজ্য সরকার যৌথভাবে এই প্রকল্পটি নিয়েছে। আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় দু’কোটি টাকা। কারাখানা পাবে উত্তোলন করা জলের ২৫ শতাংশ। বাকি জল পাবেন কাঁকি, দিকপুর, মুরগাবনি, রাজাডাল ও বনগ্রামের বাসিন্দারা। মন্ত্রীর আশ্বাস, “ছ’মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে।” প্রকল্পের শিলান্যাস করতে যাওয়ার পথে খড়বনা মোড়ে মন্ত্রীকে কালো পতাকা দেখান বিজেপি-র কর্মীরা। বিজেপি’র জেলা সহ সভাপতি জীবন চক্রবর্তীর অভিযোগ, “ওই কারখানা কর্তপক্ষ নিজেরাই বেশি জল নিয়ে বাসিন্দাদের বঞ্চিত করবে। তাই আমরা এ ভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছি।”
সুব্রতবাবু রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরেরও মন্ত্রী। এ দিন দুপুরে বাঁকুড়া শহরে সার্কিট হাউসে তিনি জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। জেলাশাসক মহম্মদ গুলাম আলি আনসারি, এসডিও এবং বিডিওরা ওই বৈঠকে ছিলেন। তিনি পঞ্চায়েত দফতরের বিভিন্ন কাজ খতিয়ে দেখেন। মন্ত্রী আধিকারিকদের জানান, সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই আরও ভাল কাজ করতে হবে। তিনি আধিকারিকদের ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্পে কাজের উপরে জোর দিতে বলেছেন। এই প্রকল্পে টাকার অভাব হবে না বলে আশ্বাস দেন। বাঁকুড়ার পথে দুর্গাপুর ব্যারাজের কাছে তৃণমূল কর্মীরা মন্ত্রীর কাছে ব্যারাজ সংস্কারের দাবি জানান। পরে বড়জোড়ায় ১০০ দিনের কাজ খতিয়ে দেখেন তিনি। বাসিন্দারা জলের সমস্যার কথা মন্ত্রীকে জানান। মন্ত্রী বলেন, “অপেক্ষা করুন। সমস্যা মিটবে।” |