পুড়ে গেল সিএসটিসি-র রেকর্ড রুমের নথিপত্র। রবিবার বেলঘরিয়ার নীলগঞ্জ রোডে সিএসটিসি-র সেন্ট্রাল ওয়ার্কশপের দোতলায় আগুন লাগে। দমকল আসার আগেই বেশ কিছু জরুরি নথি পুড়ে যায়। এর পিছনে অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা করেছেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র ও সিএসটিসি-র চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় বিধায়ক তাপস রায়। একটি তদন্ত কমিটিও তৈরি করেছে রাজ্য সরকার।
সিএসটিসি সূত্রে খবর, রবিবার রেকর্ড রুম বন্ধ ছিল। বেলা ১১টা নাগাদ ওয়ার্কশপে ডিউটিতে থাকা কিছু কর্মী ঘরটির জানালা দিয়ে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন। ওয়ার্কশপ লাগোয়া বেলঘরিয়া ডিপোর কর্মীরা গিয়ে তালা ভেঙে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে দমকলের ৪টি ইঞ্জিন যায়। ততক্ষণে নথিপত্রের বেশিরভাগই পুড়ে গিয়েছে। পাশেই সিটুর এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের অফিস ও কম্পিউটার রুম। সেখানে ছড়ানোর আগে আগুন নেভে।
|
ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে সিপিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন পরিবহণমন্ত্রী। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “বলা হচ্ছে, আমি দফতরের তেল পুড়িয়ে গাড়ি চড়ছি। কিন্তু আমি ক্রীড়া দফতরের গাড়ি চড়ি। রেকর্ড রুমে অডিট চলছিল। আগের সরকারের মন্ত্রীরা ব্যক্তিগত দরকারে কত টাকার তেল পুড়িয়েছেন, সব তথ্য বেরোচ্ছিল। তা ধামাচাপা দিতে এই অন্তর্ঘাত।’’ সিএসটিসি-র এক কর্তা অবশ্য বলেন, “রেকর্ড রুমে বাসের তথ্য থাকে। মন্ত্রীদের গাড়ির তেল ব্যবহারের নয়।”
সিএসটিসি-র চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক তাপসবাবুও বলেন, “অল্পের জন্য কম্পিউটার রুম বেঁচেছে। অডিটের সময়ে অগ্নিকাণ্ড সন্দেহের উদ্রেক করছে।” মদনবাবু ও তাপসবাবু রেকর্ড রুমের পাশে সিটু অফিসের অস্তিত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। মদনবাবু বলেন, ‘‘রেকর্ড রুম আর সিটুর অফিসের মাঝে শুধু একটা প্লাইউডের দেওয়াল। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে বাম আমলে কী ভাবে নথিপত্র নিয়ন্ত্রিত হত।’’
সিটুর অনুগামী ওয়েস্ট বেঙ্গল রোড ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মুখোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, “মন্ত্রীরা এখন সব কিছুতে সিপিএমের ভূত দেখছেন। কর্মীরা কখনও নিজেদের নিগমের সর্বনাশ চান না। বরং পরিবহণমন্ত্রীই বিভিন্ন ডিপোয় গিয়ে জমির দরের খোঁজ করছেন। সরকারি পরিবহণ বেসরকারি হাতে দিতে চাইছেন। তদন্তেই সব বোঝা যাবে।” সিএসটিসি-র ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সঞ্জয় ভট্টাচার্য-সহ তিন আধিকারিককে নিয়ে গঠিত একটি কমিটি অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাঁদের রিপোর্ট দেওয়ার কথা। |