স্বাস্থ্য ব্যাঙ্কের অর্থ কী, স্বাস্থ্যকর্তারাই ধোঁয়াশায়
রাজ্য বাজেটে ‘সকলের জন্য স্বাস্থ্য ব্যাঙ্ক’-এর ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। কিন্তু এই ‘স্বাস্থ্য ব্যাঙ্ক’ বিষয়টি আদতে কী, দিনের শেষে সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না স্বাস্থ্যকর্তারা। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কেউ বলছেন, ‘বাজেট বক্তৃতা এখনও দেখিনি’। কেউ বা বলেছেন, ‘ব্যাঙ্কের ধারণাটা আমাদের কাছে ঠিক স্পষ্ট নয়, পরে বুঝে নেব।’ তবে তাঁরা জানিয়েছেন, ক্ষমতায় আসার পরে প্রথম বার স্বাস্থ্য ভবন পরিদর্শনে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘স্বাস্থ্য ব্যাঙ্ক’ তৈরির পরিকল্পনার কথা আবছাভাবে উল্লেখ করেছিলেন। সেই ‘ব্যাঙ্ক’-এর চেহারাটা এখনও স্পষ্ট হয়নি কারও কাছেই।
বিরোধী দলনেতা, তথা প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সূযর্কান্ত মিশ্রকে স্বাস্থ্য ব্যাঙ্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর মন্তব্য, “ব্যাঙ্ক ব্যাপারটার এখন খুব চল হয়েছে। প্রথমে শুনলাম এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক, যেখানে আগে গেলে আগে চাকরি পাওয়া যাবে। তার পরে শুনলাম ল্যান্ড ব্যাঙ্ক, যদিও সেখানে জমি পাওয়া যায় না। এখন আবার শুনছি স্বাস্থ্য ব্যাঙ্ক। ঠিক কী করতে চাইছেন জানি না।”
মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যে পরবর্তী পাঁচ বছরের যে লক্ষ্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন, তাতে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দায়বদ্ধতা বাড়ানোর মাধ্যমে রোগীর স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছিল। সকলের জন্য হেলথ কার্ড চালু, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে মান নিশ্চিত করা, বাইরের সংস্থার মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরিষেবার মান যাচাই ইত্যাদির কথাও উল্লেখ হয়েছিল। বাজেটেও এগুলোর কথাই বোঝাতে চাওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্যকর্তারা মনে করছেন। কিন্তু তার সঙ্গে ‘ব্যাঙ্ক’ শব্দটির কী যোগ, সেই সূত্রটাই তাঁরা খুঁজে বের করতে পারছেন না। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “গরিবদের জন্য বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও আদতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা হয় না। প্রয়োজনীয় ওষুধগুলোই হাসপাতালে মজুত থাকে না। ফলে রোগীর নিজস্ব খরচের পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে যায়। এই দিকটাতেই মুখ্যমন্ত্রী রাশ টানতে চাইছেন।”
বাজেট বক্তৃতাতেও স্বাস্থ্য ব্যাঙ্ক বিষয়ে বিশেষ কিছু লেখা নেই। ‘পাবলিক সেক্টর হেলথ সিস্টেম-এর মাধ্যমে’ ওষুধ সরবরাহের বিষয়টি রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “সামগ্রিক ভাবে স্বাস্থ্যখাতেই ব্যয় বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। ওষুধের ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আউটডোরে ওষুধ খাতে বরাদ্দ দ্বিগুণ হচ্ছে। মা ও শিশুর ওষুধ এবং জীবনদায়ী ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।” কিন্তু মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের বিষয়টি তো জেলা স্তরে জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশনের অন্তর্ভুক্ত। সেই পরিকল্পনার উল্লেখ রাজ্য বাজেটে আসে কী ভাবে? স্বাস্থ্যকর্তাদের জবাব, “সে ক্ষেত্রেও রাজ্যের ব্যয়ের কিছু অংশ থাকে। সেই খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হতে পারে।” এ বার স্বাস্থ্যে ব্যয় বরাদ্দ ৮৭১.৮৭ কোটি থেকে বেড়ে ১,০৪৯ কোটি করার প্রস্তাব রয়েছে। এর ফলে পরিষেবার মান আরও অনেকটাই উন্নত করা যাবে বলে স্বাস্থ্যকর্তারা আশাবাদী। স্বাস্থ্য বাজেটে রাজ্যে সাতটি স্বাস্থ্য জেলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঝাড়গ্রামে স্বাস্থ্য জেলা তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। ২৩টি ‘মোবাইল মেডিক্যাল ইউনিট’ এবং ১০টি নতুন ‘সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট’ তৈরির কথাও বলা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.