উত্তর কলকাতা: পাইকপাড়া
কামারহাটি
সমস্যা আবর্জনায়
চার দিকে ময়লার স্তূপ। ময়লার চাপে ভেঙে পড়েছে এক দিকের পাঁচিল। অন্য দিকের পাঁচিলও যে কোনও সময়ে ভেঙে পড়তে পারে। আবর্জনা চলে আসছে রাস্তায়। অভিযোগ, ময়লা থেকে ছড়াচ্ছে দূষণ। এমনই অবস্থা কামারহাটি পুরসভার ভার্মি কম্পোস্ট প্ল্যান্টের।
পুরসভা সূত্রে খবর, জেএনএনইউআরএম-এর অন্তর্গত এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০০৭-এ। শেষ হয় ২০১০-এর ডিসেম্বরে। খরচ পড়েছিল ৭ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা। প্ল্যান্টটি কেএমডিএ তৈরি করে। প্ল্যান্টটি চালানোর দায়িত্ব পায় বায়ো ভিশন সংস্থা। এই প্রকল্পে বাড়িতে দু’টি পাত্র রাখা থাকে। একটি পাত্র জৈব, অন্যটি অজৈব আবর্জনার জন্য। প্ল্যান্টে এই জৈব আবর্জনা থেকে সার তৈরি করে বিক্রি করা হয়।
অভিযোগ, বাকি অজৈব আবর্জনা নিয়ে পরিকল্পনায় স্পষ্ট করে কিছু বলা না থাকায় তা জমে থাকছে। এর থেকেই ছড়াচ্ছে দূষণ। তা ছাড়া সংস্থাটির অভিযোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাসিন্দারা জৈব-অজৈব আবর্জনা আলাদা করে ফেলছেন না। ফলে প্ল্যান্টে এনে ময়লা আলাদা করতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। লিঙ্ক রোডের ধারে প্রায় সাত একর জায়গা জুড়ে রয়েছে কামারহাটি পুরসভার ভার্মি কম্পোস্ট প্ল্যান্ট। অভিযোগ, ময়লার চাপে ভেঙে পড়েছে বিটি রোড থেকে আগরপাড়া স্টেশন রোডের দিকের লিঙ্ক রোডের ধারের পাঁচিল। আবর্জনা চলে আসছে রাস্তায়। অন্য দিকের পাঁচিলেরও খারাপ অবস্থা। আশপাশের কারখানাগুলির অভিযোগ, এই পাঁচিলটি ভাঙলে প্রাণহানির আশঙ্কা আছে। তা ছাড়া, আবর্জনা থেকে দূষণও ছড়াচ্ছে। যদিও পুরসভা সূত্রে খবর, বিষয়টি কেএমডিএ-কে জানানো হয়েছে।
কামারহাটি পুরসভার মোট ওয়ার্ড ৩৫টি। এর মধ্যে ১৯টি ওয়ার্ড থেকে ময়লা সংগ্রহ করে বায়ো ভিশন।
বায়ো ভিশন সূত্রে খবর, ১৯টি ওয়ার্ড থেকে দৈনিক প্রায় ৩০ টন ময়লা সংগ্রহ করা হয়। যার মধ্যে ৪০ শতাংশ জৈব আবর্জনা। এটি ভার্মি কম্পোস্টে ব্যবহৃত হয়। বাকি ময়লা পড়ে থাকে। পড়ে থাকা ময়লা নিয়েই সমস্যা হচ্ছে। কেএমডিএ-র এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, “প্ল্যান্ট তৈরির পরে তা চালানোর দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট পুরসভার। রক্ষণাবেক্ষণও পুরসভাকেই করতে হবে। তা ছাড়া পড়ে থাকা অজৈব আবর্জনা নির্দিষ্ট করে দেওয়া ল্যান্ডফিলিং অঞ্চলে ফেলার কথা। প্ল্যান্টের মধ্যে সেই ব্যবস্থা আছে। বাকি ময়লা পুনর্নবীকরণে ব্যবহার করা যেতে পারে।” এ ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না বলে বায়ো ভিশন সংস্থা স্বীকার করে নিয়েছে। তা ছাড়া বাকি ১৬টি ওয়ার্ডের ময়লা পুরসভা সংগ্রহ করে বাছাই না করেই ল্যান্ডফিলিং অঞ্চলে ফেলছে।
ওই সংস্থা সূত্রে খবর, পড়া থাকা ময়লা রেন ওয়াটার হার্ভেস্টিং, জৈব গ্যাস ও বিদ্যুৎ তৈরির মতো কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু তাতে প্রায় ২ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা খরচ হবে। আলাদা করে ময়লা তোলা প্রসঙ্গে কামারহাটির পুরপ্রধান সিপিএমের তমাল দে বলন, “এক সঙ্গে সব ওয়ার্ডে কাজ শুরু করা কঠিন। তাই আমরা ধাপে ধাপে প্রকল্পের কাজ শুরু করেছিলাম। আবর্জনা পরিষ্কার করতে প্রতি বছর পুরসভা প্রায় এক কোটি টাকা খরচ করে। এর মধ্যে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা দিতে হয় বায়ো ভিশন-কে। পুরসভার পক্ষে এর বেশি ব্যয় করা সম্ভব নয়। রাজ্য সরকারের সহযোগিতা দরকার।”




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.