এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার তুলকালাম বাধে চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ক্ষিপ্ত মানুষজন হাসপাতাল সুপারকে রাত পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখেন। সঠিক তদন্ত করে অভিযুক্তদের শাস্তির পাশাপাশি ক্ষতিপূরণেরও দাবি তোলেন বিক্ষোভকারীরা। হাসপাতালের এক কর্মীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম অমর রাজবংশী (২৪)। তাঁর বাড়ি চন্দননগর বাগবাজারের লালদিঘির ধারে।
জেলা পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত ১৯ মার্চ দিনমজুর কাজ করতে করতে একটি পেরেক অমরের বাঁ পায়ের তলায় ফুটে যায়। সেই জায়গা থেকে সংক্রমণ ছড়ায়। ওই দিন বিকেলেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ওই যুবককে। হাসপাতালের মেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ অমরের মৃত্যু হয়।
হাসপাতাল-লাগোয়া লালদিঘির পাড়ের হরিজন পল্লির বাসিন্দা ওই যুবকের মৃত্যুর খবর ছড়াতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এলাকার মানুষ। তাঁরা হাসপাতালে চড়াও হয়ে মেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ঢুকে পড়েন। ওয়ার্ডের টেবিল-চেয়ার উল্টে দেওয়া হয়। মারমুখী জনতাকে দেখে ভয়ে নার্স-আয়ারা পালিয়ে যান। রোগীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। |
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেন। চন্দননগর থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছনোয় হাসপাতালে সে ভাবে ভাঙচুর চালাতে পারেনি জনতা। যদিও, এর পরে তারা হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট অসীমকুমার প্রামাণিককে ঘেরাও শুরু করে। ঘণ্টাখানেক সেখানে বিক্ষোভ চলে। রোগীর আত্মীয়-স্বজন দাবি তোলেন, ওই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ওই দিনমজুরের পরিবারকে।
মৃতের স্ত্রী জয়া রাজবংশীর অভিযোগ, “ঠিক মতো চিকিৎসা করলে স্বামী মারা যেত না। বার বার বললেও ভাল ভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থাই করা হয়নি।” সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগও করে মৃতের পরিবার। এ বিষয়ে সুপার অসীমকুমার প্রামাণিক বলেন, “বিক্ষোভকারীদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে। বিভাগীয় তদন্ত হবে। তবে গাফিলতির অভিযোগ ঠিক নয়। যুবকের পায়ের ক্ষত থেকে রক্তে সংক্রমণ থেকেই মৃত্যু হয়েছে।”
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের অবশ্য জানানো হয়েছে, হাসপাতালের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছিল সেখানে একটি পিকেট বসানোর জন্য। কিন্তু সেই কাজ করা হয়নি। যার ফলে, সেখানে এ ভাবে বিক্ষোভকারীরা তাণ্ডব চালাতে পারল।
|
বছর দেড়েকের একটি শিশুর শ্বাসনালিতে অস্ত্রোপচার করে আটকে যাওয়া একটি লোহার রড বের করলেন আসানসোল মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। বারাবনির কেলেজোড়ার বাসিন্দা শেখ কবির জানান, বুধবার তাঁর ছেলে আবু বকর একটি প্রায় এক ফুটের লোহার রড নিয়ে খেলা করছিল। রডটি খানিকটা বঁড়শির আকারের। শিশুটি তা মুখে ঢোকাতে শুরু করে। বাড়ির কেউ প্রথমে তা খেয়াল করেননি। এক সময়ে রডটি গলার কাছে শ্বাসনালিতে আটকে যায়। বাড়ির লোকজন তা বের করার চেষ্টা করেন। তা সম্ভব না হওয়ায় শিশুটিকে বারাবনির কেলেজোড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে আসানসোলে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির লোকজনের সঙ্গে খোশমেজাজেই রয়েছে আবু বকর। চিকিৎসক ললিত রায় বলেন, “শিশুটিকে ওই অবস্থায় দেখে বুঝতে পারি, অস্ত্রোপচার ছাড়া উপায় নেই। রাতেই প্রায় ৪০ মিনিট অস্ত্রোপচার করে রডটি বের করা হয়।” তিনি জানান, হাসপাতালে যে পরিকাঠামো রয়েছে তাতে এই ধরনের অস্ত্রোপচারে খানিকটা ঝুঁকি থেকে যায়। তাই হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে বলে দাবি ললিতবাবুর। |