সুরক্ষা-বিধি না মানার পরিণামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ধৃত মেদিনীপুরের বেসরকারি হাসপাতালের ৪ কর্তার মধ্যে এক জনকে ৩ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত। অন্য ৩ কর্তার ২৬ মার্চ পর্যন্ত জেল-হেফাজত হয়েছে।
বুধবার সকালের অগ্নিকাণ্ডের পর দুপুরেই হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পীযূষ পাল এবং বোর্ড অব ডিরেক্টর্সের সদস্য অলোক ঘোষকে ধরেছিল পুলিশ। রাতে গ্রেফতার হন অন্য দুই ডিরেক্টর পার্থসারথি মণ্ডল ও মনোজ পতি। ধৃতদের বিরুদ্ধে অগ্নিবিধির একাধিক ধারা এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৮৫ ধারায় (দাহ্যবস্তু মজুত রাখা এবং তা রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে অবহেলাজনিত দুর্ঘটনা) অভিযোগ এনেছে পুলিশ। আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশের তরফে কলকাতায় স্টেট ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। বুধবার রাতেই হাসপাতালটি ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে। ‘দগ্ধ’ বাতানুকূল যন্ত্র ও আরও কিছু সরঞ্জাম বস্তায় ভরে আলাদা ভাবে রাখা হয়েছে, যাতে ফরেন্সিক তদন্তের ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা না হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে ধৃতদের মেদিনীপুরের সিজেএম কল্লোল দাসের এজলাসে হাজির করা হয়। সরকারি আইনজীবী অর্ধেন্দু সাহা ধৃত অলোক ঘোষকে পুলিশ হেফাজতে রাখার আবেদন করে বলেন, “অলোকবাবুর কাছে হাসপাতাল সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র রয়েছে। |
তদন্তের প্রয়োজনে সে-সব হাতে পাওয়া দরকার। অভিযুক্তকেও জেরা করা দরকার।” ওই আবেদনের বিরোধিতা করে অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী অরূপ বর্মা বলেন, “কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে ইচ্ছা করে আগুন লাগাননি। এটা দুর্ঘটনা। যে কাগজপত্রের জন্য পুলিশ হেফাজত চাওয়া হয়েছে, সে-সব এখনই পুলিশকে দেওয়া যায়।” সব বিধি মেনে হাসপাতাল চলছিল বলে তিনি দাবি করেন।
কলকাতার আমরি-কাণ্ডের সঙ্গে এই ঘটনার ফারাক বোঝাতে অরূপবাবু দাবি করেন, “আমরি হাসপাতালের কর্তারা পালিয়ে গিয়েছিলেন। আমার মক্কেলদের কিন্তু ঘটনাস্থল থেকেই ধরেছে পুলিশ।” ওই আইনজীবীকে থামিয়ে বিচারক নিজেই কেস-ডায়েরি দেখে বলেন, “হাসপাতাল মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্রনগরে হলেও পুলিশ অভিযুক্তদের ধরছে বটতলাচক থেকে।” এর পর আর কিছু বলেননি অরূপবাবু। শুনানি চলাকালীন এ দিন তদন্তকারী অফিসারের কাছেও সিজেএম জানতে চান, ঠিক কী কারণে ধৃতদের এক জনকে পুলিশ হেফাজতে চাওয়া হচ্ছে। তঅফিসারের বক্তব্য শুনে সন্তুষ্ট হয়েই অলোকবাবুকে ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। |