পুলিশ-স্বরাষ্ট্র দফতরের বিরুদ্ধে সরব মানবাধিকার কমিশন |
মাওবাদী নেতা কিষেণজির মৃত্যু কী ভাবে হল তা নিয়ে রাজ্য সরকার এখনও কেন রিপোর্ট পাঠায়নি, স্বরাষ্ট্রসচিব জ্ঞানদত্ত গৌতমকে ডেকে বৃহস্পতিবার তা জানতে চাইল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপারেরা কেন দেরিতে রিপোর্ট দেন, স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে তা-ও জানতে চান কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি নারায়ণচন্দ্র শীল।
বুধবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার রঞ্জিতকুমার পচনন্দাকে ডেকে পাঠিয়ে তাঁক সামনেই পুলিশের অকর্মন্যতা নিয়ে বিঁধেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তার পরে এ দিন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান স্বরাষ্ট্র দফতর ও পুলিশের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করলেন স্বরাষ্ট্রসচিবের সামনেই। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি শীল বলেন, “কিষেণজির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ কী ভাবে কোথায় হয়েছিল, কী করে তাঁর মৃত্যু হল, তা রাজ্য পুলিশ এবং রাজ্য সরকারের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল। পুলিশ তাদের রিপোর্ট দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু অনেক দিন কেটে যাওয়া সত্ত্বেও স্বরাষ্ট্র দফতর রিপোর্ট দেয়নি। স্বরাষ্ট্রসচিবকে আমি তা জানিয়েছি।” জেলা থেকে পুলিশ-কর্তারা যে মানবাধিকার কমিশনে সময় মতো রিপোর্ট দেন না, সে ব্যাপারেও স্বরাষ্ট্রসচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিচারপতি শীল। তিনি বলেন, “বিভিন্ন ঘটনায় পুলিশ সুপারেরা একেবারেই সময় মতো রিপোর্ট দেন না। সে কথাও স্বরাষ্ট্রসচিবকে জানিয়েছি।” কমিশন সূত্রের খবর, কেন পুলিশ সুপারেরা রিপোর্ট দেন না, তা খতিয়ে দেখার জন্য স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশও দেন কমিশনের চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যান বলেন, “স্বরাষ্ট্রসচিবকে আমি কোনও রকম ভর্ৎসনা কিন্তু করিনি।”
|
ট্রাম সংস্থার ২৫০ কর্মীর বেতন দ্রুত দিতে নির্দেশ |
নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা ট্রাম কোম্পানির কিছু কর্মীর বেতন বন্ধ করে দিয়েছে রাজ্যে সরকার। অবিলম্বে ট্রাম সংস্থার ২৫০ জন কর্মীর বেতন চালু করতে হবে এবং ১৫ দিনের মধ্যে সব বকেয়া বেতন মিটিয়ে দিতে হবে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু।
নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিভিন্ন পরিবহণ নিগমের এক শ্রেণির কর্মীর বেতন আটকে দিয়েছিল। অভিযোগ ওঠে, ট্রাম সংস্থায় ২৫০ জন কর্মীর নিয়োগ ‘পদ্ধতি’ মেনে হয়নি। তাঁদেরও বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই সব কর্মীর প্রত্যেকেই কমপক্ষে দু’বছর কাজ করেছেন এবং এত দিন বেতনও পেয়ে এসেছেন। হঠাৎ বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই কর্মীরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। ট্রাম সংস্থার পক্ষে আদালতে জানানো হয়, কোম্পানির যা আয়, তা দিয়ে সব খরচ মেটানো সম্ভব নয়। আগের সরকার ট্রাম সংস্থাকে ভর্তুকি দিত। তার ফলে ওই সব কর্মীকেও বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল। আবেদনকারীদের আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ বলেন, সংবিধান অনুযায়ী কোনও কর্মীরই বেতন বন্ধ করা যায় না। বেতন দেওয়া হবে, এই শর্তেই সব সংস্থার কর্মীরা কাজ করেন। খেয়ালখুশি মতো বেতন দেব না কিংবা সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে না এমন অজুহাত সম্পূর্ণ আইন-বিরোধী বলে অরুণাভবাবু আদালতে জানান। বিচারপতি জানিয়ে দেন, অবিলম্বে ওই কর্মীদের বেতন চালু করতে হবে এবং বকেয়া মেটাতে হবে ১৫ দিনে।
|
সাদিকে ভর্ৎসনা করলেন স্পিকার |
বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে ‘অসম্মানজনক’ মন্তব্যের জন্য সিপিএম বিধায়ক এস এম সাদিকে ‘ভর্ৎসনা’ করলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সাদির মন্তব্য বিধানসভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশও দেন তিনি। সরকার ও বিরোধী পক্ষের বিধায়করা যাতে পরস্পরের প্রতি মন্তব্যের ক্ষেত্রে ‘সংযত’ থাকেন, সেই অনুরোধও জানান। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বের পরে সরকার পক্ষের মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সাদির বুধবারের মন্তব্যের প্রতিবাদে বলেন, “যে অভিযোগ ওই বিধায়ক করেছেন, তা তাঁকে সভায় প্রমাণ করতে হবে।” স্পিকার বলেন, “গত তিনদিন ধরে সরকার-বিরোধী দলের যে আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণ চলছে, তা না-হওয়াই বাঞ্ছনীয়। রাজ্যপালের ভাষণ সংক্রান্ত আলোচনার ১০% এই ভাবে কেটেছে।” নতুন বিধায়ক হয়েছেন যাঁরা, এই ধরনের ঘটনা তাঁদের ক্ষেত্রেও ক্ষতিকর হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র স্পিকারের বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়ে বলেন, “আমি আপনার নির্দেশ মাথা পেতে নিচ্ছি।” সাদিও তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মেনে জানান, বক্তব্য সঠিক ভাবে প্রকাশ করতে তাঁর ভুল হয়েছিল।
|
ভাঙনে কেন ক্ষতিপূরণ নয়, প্রশ্ন কেন্দ্রকে |
রাজ্যে নদীর ভাঙন নিয়ে একটি ‘স্টাডি পেপার’ বা সমীক্ষা-নথি তৈরি করছে সেচ দফতর। সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বৃহস্পতিবার বিধানসভায় জানান, মুখ্যমন্ত্রীর মাধ্যমে তা কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হবে। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, সেই প্রশ্নটিও কেন্দ্রের কাছে তোলা হবে। এ দিন বিধানসভায় সিপিএম বিধায়ক তজমুল হোসেনের নদীবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের উত্তরে মানসবাবু জানান, ওই সব কাজের জন্য একটি ‘মনিটরিং ভিজিল্যান্স কমিটি’ গড়া হয়েছে। সময়মতো প্রকল্পের কাজ হচ্ছে কি না, তা দেখা; ত্রুটি ঘটলে সেটা চিহ্নিত করা; রিপোর্ট দাখিল এবং তার ভিত্তিতে পদক্ষেপের জন্যই এই কমিটি। মানসবাবু বলেন, “শুখা মরসুমে সংস্কারের কাজ হয় না, অথচ বর্ষার সময়েই কাজ শুরু হয় সেচ দফতরের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। নতুন সরকার সেটা মাথায় রেখেই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” |