ঠিকাদারের দাবি, ক্লাবঘর তৈরির জন্য ৫০ হাজার টাকা ‘চাঁদা’ চাওয়া হয়েছে তাঁর কাছে। অন্য দিকে ক্লাব কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, নিম্নমানের মালপত্র দিয়ে কাজ করছেন ঠিকাদার। প্রতিবাদ করায় ‘অপবাদ’ দেওয়া হচ্ছে ক্লাবের নামে। দু’পক্ষের এই চাপান-উতোরের জেরে মাস খানেক ধরে বন্ধ পাম্প স্টেশন তৈরির কাজ। ঘটনাটি মথুরাপুর ১ ব্লকের কৃষ্ণচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের বড়াশি গ্রামের। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই ঠিকাদার। সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই পাম্প স্টেশনটি চালু হলে আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পরিস্রুত পানীয় জল পাবেন বলে জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতর। |
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বড়াশি গ্রামে ১৫ কাঠা জমিতে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতর ওই পাম্প স্টেশনটি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কাজের বরাত পেয়েছেন বরেন চক্রবর্তী নামে এক ঠিকাদার। গত ২ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরুও হয়েছিল। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই ক্লাব সদস্য ও গ্রামবাসীদের একাংশের ‘চাপে’ তা বন্ধ হয়ে যায় বলে অভিযোগ। বরেনবাবু জানান, কাজ শুরুর কয়েক দিনের মধ্যেই স্থানীয় ক্লাবের কিছু ছেলে এবং কয়েক জন গ্রামবাসী তাঁর কাছে আসেন। ক্লাব ঘর তৈরির জন্য ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। ওই ঠিকাদারের কথায়, “আমি বলেছিলাম, ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে পারি। কিন্তু ওঁরা রাজি হননি। নিম্নমানের মালপত্র দিয়ে আমি কাজ করাচ্ছি বলে হঠাৎ অভিযোগ তোলেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।” তাঁর দাবি, “ওঁদের বলেছিলাম, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে ইমারতি মালপত্র কিনতে যাব। তাতেও রাজি নন। এ সবের জেরে কাজ বন্ধ রেখেছি।” বিডিও ও স্থানীয় পঞ্চায়েতকে সমস্যার কথা জানিয়েছেন ওই ঠিকাদার।
ক্লাবের সদস্যদের পক্ষে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন গ্রামবাসী বলেন, “নিম্ন মানের মালপত্র দিয়ে কাজ হচ্ছিল। সে জন্যই আমরা প্রতিবাদ করেছি।” ক্লাবঘর তৈরির নাম করে ‘চাঁদা’ চাওয়া হয়নি বলে তাঁদের দাবি। কিন্তু ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোথাও অভিযোগ করলেন না কেন? এ ব্যাপারে স্পষ্ট উত্তর নেই ক্লাবের সদস্যদের কথায়। পাম্প স্টেশনটি তৈরি হলে গ্রামের মানুষই উপকৃত হবেন। তা হলে বাধা দেওয়া হচ্ছে কেন? ক্লাবের ভূমিকায় গ্রামবাসীদের আর এক পক্ষ যথেষ্ট ‘বিরক্ত’।
স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্য সিপিএমের আস্রিক নাইয়া অবশ্য ক্লাবের পক্ষেই মুখ খুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, “নিম্নমানের মাল ব্যবহার করে নির্মাণের প্রতিবাদ করেছিলেন ক্লাবের কিছু সদস্য এবং গ্রামবাসীদের একাংশ। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ওই ঠিকাদার উল্টে কিছু টাকা ক্লাবকে দেওয়ার ইঙ্গিত দেন। ওয়ার্কঅর্ডার দেখতে চাইলে তা দেখাতেও অস্বীকার করেন।”
সমস্যার সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মথুরাপুর ১ বিডিও দীপ্তার্ক বসু। কৃষ্ণচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের সাধনা হালদারের কথায়, “নির্মাণ বন্ধ আছে। তবে টাকার দাবি তোলা হয়েছে বলে শুনিনি। শুক্রবার সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসে মীমাংসা সূত্র বের করা হবে।” |