পুরাতত্ত্ব কার্যালয়ে আর্থিক অনিয়ম নিয়ে রিপোর্ট পেশ
বাম আমলে পুরাতত্ত্ব আধিকারিকের দফতরে আর্থিক অনিয়ম নিয়ে মুখ্যসচিবের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। তাতে আর্থিক শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য তিন জনকে দায়ী করা হয়েছে বলে এক সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন।
ক্ষমতায় এসেই বিগত জমানার আর্থিক অনিয়ম খুঁজে বার করতে অর্থ দফতরকে বিশেষ অডিট করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যসচিব সমর ঘোষ জানান, অর্থ দফতরের অভ্যন্তরীণ অডিট শাখা অডিট চালিয়ে পুরাতত্ত্ব অধিকর্তার কার্যালয়ে কিছু অনিয়মের হদিস পেয়েছিল। সেই অনিয়মের জন্য কারা দায়ী, তা চিহ্নিত করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়। রাজ্যের শিল্প পুনর্গঠন দফতরের সচিব সুব্রত গুপ্ত এই কমিটির প্রধান। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন অর্থ দফতরের অভ্যন্তরীণ অডিট বিভাগের যুগ্ম-কমিশনার এবং রাজ্য সরকারের যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার এক অফিসার।
কী আছে তাঁদের রিপোর্টে? সুব্রতবাবুকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি শুধু বলেন, “আমরা রিপোর্ট জমা দিয়েছি। এ ব্যাপারে মুখ্যসচিবই যা বলার বলবেন।” মুখ্যসচিবের বক্তব্য, “তদন্ত কমিটি দায়ীদের চিহ্নিত করে আমার কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। রিপোর্ট খতিয়ে দেখে রাজ্য সরকার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।”
১৯৯০ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত টানা ১৯ বছর রাজ্যের পুরাতত্ত্ব অধিকর্তা ছিলেন গৌতম সেনগুপ্ত। পরে তিনি ‘লিয়েন’-এ দিল্লিতে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর জেনারেলের কার্যভার নেন। সরাসরি কারও নাম উল্লেখ করা না হলেও সরকারি মহলের একাংশ মনে করছে, তাঁর আমলে আর্থিক অনিয়ম হয়ে থাকলে তার দায় গৌতমবাবুর উপরেও বর্তায়। দায় বর্তাতে পারে অ্যাকাউন্টস বিভাগের তৎকালীন যুগ্ম-অধিকর্তা ও দফতরের তৃতীয় কোনও কর্মীর উপরেও। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার গৌতমবাবুর বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, ওই রিপোর্ট নিয়ে তাঁকে কেউ কিছু জানাননি। তাই তিনি এ ব্যাপারে কিছু বলবেন না।
পুরাতত্ত্ব অধিকর্তার কার্যালয়ের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ তুলেছে অর্থ দফতরের অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটি?
রাজ্যের প্রাচীন সৌধ ও স্থাপত্যগুলির সংরক্ষণের জন্য দ্বাদশ অর্থ কমিশন ২০০৬-০৭ সালে ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। ২০০৯-১০ পর্যন্ত তার কাজ চলে। সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, ওই অর্থের মধ্যে ৩ কোটি টাকা খরচের যথাযথ হিসেব পুরাতত্ত্ব অধিকর্তার দফতর থেকে পায়নি অভ্যন্তরীণ অডিট শাখা। অথচ, ওই সব কাজের বরাত দেওয়ার চিঠিপত্র মিলেছে। এ ছাড়া, ৬০ লক্ষ টাকার কোনও হদিসই পাওয়া যায়নি। কী কারণে সেই টাকা তোলা হয়েছে, পাওয়া যায়নি তার নথিও।
এ ছাড়া, পুরাতত্ত্ব অধিকর্তার দফতরের ‘সেন্টার ফর আর্কিওলজিক্যাল স্টাডিজ অ্যান্ড ট্রেনিং (কাস্ট)’ দ্বাদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ করা ৪০ কোটির মধ্যে ৬ কোটি টাকা পেয়েছিল। তার মাত্র ৪০ শতাংশ টাকা খরচের হিসেব পাওয়া গিয়েছে।
পুরাতত্ত্ব অধিকর্তা নিজেই কেন ওই ‘কাস্ট’-এর সচিবের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তোলা হচ্ছে সেই প্রশ্নও। এ ব্যাপারে গৌতমবাবুর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে বলা হয়, যে কাস্ট-এর সচিব থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, সেই কেন্দ্রটি কিন্তু গৌতমবাবুর নিজের তৈরি করা নয়। তৎকালীন রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়েই তা গড়া হয়েছিল। পে অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস কার্যালয়ের অনুমোদন নিয়েই পুরাতত্ত্ব অধিকর্তার দফতর দ্বাদশ অর্থ কমিশনের দেয় টাকা বিভিন্ন খাতে খরচ করেছে। সে জন্য কোনও ভাবেই গৌতমবাবুকে দায়ী করা যায় না। কারণ, দ্বাদশ অর্থ কমিশনের দেওয়া টাকা খরচের ব্যাপারে একটি কাজও তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের তৎকালীন সচিবের লিখিত অনুমোদন ছাড়া করা হয়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.