উত্তরের চিঠি
পুকুর চুরিতে বিপন্ন জলের পাখি
দিনের পর দিন পুকুর ভরাট করে তৈরি হচ্ছে বহুতল। এই পুকুর চুরি বিপন্ন করে তুলছে জলের পাখিদের অস্তিত্ব। বিশেষ করে জলপিপি, ডাহুক, জলময়ূর, সরাল বা পানকৌড়ির মতো পাখিরা বাস্তুহারা হচ্ছে। এরা আমাদের আশেপাশে ছোটখাট জলাশয় বা বিলগুলোতে থাকে। সেখান থেকেই খাবার জোগাড় করে এবং এই সব জলাশয়কেই প্রজননের স্থান হিসেবে ব্যবহার করে। কিন্তু বর্তমানে এই সব বিলগুলোকে সুনিপুণ ভাবে বালি দিয়ে বুজিয়ে প্লট তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে। মৎস্য দফতরের নিয়ম অনুযায়ী ০.৩৫ হেক্টর বা পাঁচ কাঠার সমান বা তার বেশি কোনও এলাকা যদি ন্যূনতম বছরে ছয় মাস জলের তলায় থাকে (প্রাকৃতিক ভাবেই হোক বা সরাসরি) তবে সেই জলাশয় মাছ চাষ ছাড়া অন্য কোনও কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
নতুন বাসার সন্ধানে জলের পাখি।
১৯৯৩-এ এই আইন চালু হলেও বাস্তব পরিস্থিতি বলছে অন্য কথা। মানুষের বাস্তুর দাম যত বেড়েছে, তত বেড়েছে জলচর পাখি ও অন্যান্য জীবদের বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঘটনা। পঞ্চায়েত, বিডিও অফিস, ভূমি দফতর, জেলা প্রশাসন, মৎস্য দফতর কেউই এই আইনকে কঠোর ভাবে বাস্তবে প্রয়োগ করতে সচেষ্ট হয়নি। এই সব জলাশয় সর্বসাধারণের সম্পত্তি। সে অর্থে কেউই এর মালিক নয়। তাই তা নিয়ে যে যা খুশি করতে পারে এটা আমাদের বদ্ধমূল ধারণা। কোথায় কোন জলা ভরাট হচ্ছে, এর ফলে কোন কোন পাখি বাস্তুচ্যুত হচ্ছে, ভাবার মতো সময় বা ইচ্ছে কোনওটাই আমাদের নেই। এ ঘটনা দীর্ঘ দিন চলতে থাকলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবে, তা অন্তত মনে রাখা দরকার। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সচেতন হন।
উত্তরবঙ্গে মেট্রোরেল
শিলিগুড়ি আমাদের রাজ্যের দ্বিতীয় রাজধানী। দার্জিলিং, কার্সিয়াং, মিরিক, গ্যাংটক-এর মতো বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে বহু লোক ঘুরতে আসেন। তাঁরা শিলিগুড়িকে কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করেন। আশপাশের জেলার বৃহৎ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও এখান থেকেই জিনিসপত্র বেচাকেনা করেন। বিভিন্ন জেলা থেকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীরা এখানে পড়াশুনো করতে আসেন। শিলিগুড়িতে চিকিৎসার জন্যও উত্তরবঙ্গের নানা জায়গা থেকে বহু মানুষ আসেন। কিন্তু পরিবহণ ব্যবস্থার দৈন্যতার দরুণ রোগীর আত্মীয়রা ফিরে যেতে পারেন না। বহু পয়সা খরচ করে তাঁদের হোটেলে থাকতে হয়। কারণ এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যম মাত্র দু’টি। সরকারি ও বেসরকারি পরিবহণ সংস্থা এবং ইন্টার সিটি এক্সপ্রেস। মাটির ওপর দিয়ে চলায় যানজটের জন্য দু’টি মাধ্যমেই যাত্রীদের প্রচুর সময় নষ্ট হয়। সড়কের বেহাল দশায় সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের জন্য উন্নতিমূলক গুচ্ছ গুচ্ছ প্রকল্প নিয়েছেন। দার্জিলিং-কে সুইজারল্যান্ড করে তুলবেন। জিটিএ-র মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। শিলিগুড়িতে মিনি মহাকরণ গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছেন। ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রি গড়ে তোলার ভাবনা করেছেন, আরও কত কী! এ বার মনে হয় এখানে মেট্রো চালু করার কথা ভাবা দরকার। তা হলেই সাধারণ মানুষ প্রকৃত উপকৃত হবেন।
রান্নার গ্যাসের আকাল
দৈনন্দিন জীবনের জন্য রান্নার গ্যাস অত্যাবশ্যকীয় পণ্য। কিন্তু দিনহাটায় ডিলাররা গ্যাসের বিলি ব্যবস্থা নিয়ে ছেলেখেলা করছে। গ্যাস মেলে বুকিং-এর ৭০-৮০ দিন পর। গ্যাস-সিলিন্ডার নেওয়ার দিনও সশরীরে গো-ডাউনে উপস্থিত থাকতে হবে। সেখানে গেলে দেখা যাবে সকাল ছ’টার মধ্যে ইট পেতে লাইন দখল করা রয়েছে। প্রতি দিন সকাল দশটা থেকে একটার মধ্যে একটি গাড়ি সম্ভবত শ’তিনেক ভর্তি সিলিন্ডার নিয়ে হাজির হয়। ততক্ষণে লাইনে ৪০০ খালি সিলিন্ডার দাঁড়িয়ে। কপাল ভাল থাকলে সিলিন্ডার মিলবে। নতুবা পর দিন আবার যেতে হবে। এমনটাই চলছে। বুকিং-এর পর মাঝের এক দিন অফিস কামাই করে স্লিপ কাটাতে যেতে হয়। তার পর আর এক দিন ভর্তি সিলিন্ডার আনতে। মোটের ওপর ৩ দিন নষ্ট। এই অঞ্চলে গ্যাসের হোম ডেলিভারির বহু দিন বন্ধ হয়ে গেছে। সে কথা কেউ ভাবতেই পারেন না। তবে ওপর মহলের কথা আলাদা। প্রশাসনের লোকেরা চাইলেই সময় মতো সিলিন্ডার পান। রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও লাইনে দাঁড়াতে হয় না। তাই হয়তো তাঁরা আন্দোলন করে পূর্বের হোম ডেলিভারি সিস্টেম চালু করার সময় পান না। শুধু সাধারণ মানুষ গ্যাস-সিলিন্ডার জোগাড় করার বিষয়টিতে ভীষণ রকম অসহায়। দেশ-সমাজ-এলাকার যারা দণ্ডমুণ্ডের কর্তা তাঁরা একটু ভাবুন। প্রমাণ করুন আপনারা এখনও জীবিত আছেন।
এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।
‘উত্তরের চিঠি’
এ বি পি প্রাঃ লিঃ,
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড,
শিলিগুড়ি ৭৩৪৪০১



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.