চিকিৎসক মণি ছেত্রী, চিকিৎসক প্রণব দাশগুপ্ত এবং রাধেশ্যাম অগ্রবালের পরে আমরি হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডের মামলায় সেখানকার আরও এক কর্তার জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। তিনি সত্যব্রত উপাধ্যায়, ওই হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট (রক্ষণাবেক্ষণ)। অগ্নিকাণ্ডের কয়েক দিন পরে তিনি গ্রেফতার হন।
আলিপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজের আদালতে শুক্রবার সত্যব্রতবাবুর জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল। অভিযুক্ত এবং সরকার পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পরে ভারপ্রাপ্ত বিচারক অসিত দে দু’জন জামিনদার এবং নগদ ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে শর্তসাপেক্ষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সত্যব্রতবাবুর পাসপোর্ট মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারকের কাছে জমা রাখতে হবে এবং আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি কলকাতার বাইরে যেতে পারবেন না।
সরকার পক্ষের আইনজীবী শক্তি ভট্টাচার্য এ দিনও সত্যব্রতবাবুর জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি আদালতে জানান, ১৯৯৮ সাল থেকে সত্যব্রতবাবু বিভিন্ন সময়ে আমরি হাসপাতালের বিভিন্ন দায়িত্বে থেকেছেন। পরিচালন
|
সত্যব্রত উপাধ্যায় |
সমিতির সদস্য হিসেবে বিভিন্ন ধরনের সিদ্ধান্তও নিয়েছেন। তিনি ওই হাসপাতালের প্রশাসনিক নিরাপত্তা এবং দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন। হাসপাতালের বেসমেন্টে ওষুধের দোকান এবং দাহ্য পদার্থ জড়ো করার বিষয়টিও জানতেন তিনি। শক্তিবাবু বলেন, ওই দাহ্য পদার্থ অবিলম্বে সরানো হবে বলে হলফনামা দিয়ে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। তার পরিণামেই ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে হাসপাতালে আগুন লাগে এবং তাতে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। ওই অভিযুক্ত আমরি-কর্তা সেই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না বলে সরকার পক্ষের আইনজীবী সওয়াল করেন। অভিযুক্তের আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় আদালতে বলেন, তাঁর মক্কেল আমরির চিকিৎসক বা ডিরেক্টর ছিলেন না। সামরিক বাহিনীর চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পরে ১৯৯৮ সালে তিনি ওই হাসপাতালে যোগ দেন। কয়েক বছর পরে সেখানকার চাকরি ছেড়েও দিয়েছিলেন তিনি। অগ্নিকাণ্ডের বছর দুয়েক আগে তিনি ফের ওই হাসপাতালে যোগ দেন। মিলনবাবুর বক্তব্য, সত্যব্রতবাবু হাসপাতালের উপদেষ্টার কাজ করতেন। তিনি ছিলেন বেতনভুক কর্মচারী। ওই হাসপাতালের তিন ডিরেক্টর যে ইতিমধ্যে জামিন পেয়ে গিয়েছেন, সেই প্রসঙ্গও টেনে আনেন অভিযুক্তের কৌঁসুলি। মিলনবাবু আদালতের কাছে জানতে চান, হাসপাতালের ডিরেক্টরেরা জামিন পেলে তাঁর মক্কেলের জামিনের আর্জি মঞ্জুর করতে অসুবিধা কোথায়?
দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে আদালত সত্যব্রতবাবুর জামিন মঞ্জুর করে। আমরির কয়েক জন কর্তা এখনও জেল-হাজতে আছেন। ওই হাসপাতালের অন্য তিন ডিরেক্টরকে ধরতেই পারেনি পুলিশ। যদিও গা-ঢাকা দেওয়া ওই তিন কর্তা রাহুল তোদি, আদিত্য অগ্রবাল ও প্রীতি সুরেখার আগাম জামিনের আবেদন বৃহস্পতিবারেই খারিজ হয়ে গিয়েছে। |