ফিরিয়ে দিল চার হাসপাতাল, বাড়িতে শুয়ে কাতরাচ্ছেন বৃদ্ধ
দিনভর বারাসত ও কলকাতার চার-চারটে হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা জুটল না দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম বৃদ্ধের। মঙ্গলবার শেষ পর্যন্ত ৬৫ বছরের মুকুন্দ বালাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন তাঁর পরিজনেরা। বাড়িতেই যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন ওই বৃদ্ধ। রোগীকে স্থিতিশীল না-করে হাসপাতাল থেকে ফেরানো যাবে না বলে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তার বাস্তবতা নিয়েই আরও এক বার প্রশ্ন তুলে দিল এই ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার রাতে সাইকেলের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন বারাসতের বরবরিয়া এলাকার সৈনিকনগরের বাসিন্দা মুকুন্দবাবু। পা ও কোমরে আঘাত লাগে তাঁর। অভিযোগ, মুকুন্দবাবুকে প্রথমে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে এক্স-রে করিয়ে আনতে বলেন। পরে তাঁর পায়ে প্লাস্টার করে দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও ব্যথা না কমায় চিকিৎসকেরা তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে ‘রেফার’ করেন। বারাসত থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে মুকুন্দবাবুকে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে আসেন বাড়ির লোকেরা। মুকুন্দবাবুর জামাই সঞ্জয় পাল বলেন, “আর জি করের চিকিৎসকেরা এক্স-রে রিপোর্ট দেখে হাসাহাসি করে বারাসত হাসপাতালের সমালোচনা করেন। বলেন, কোমরের হাড় ভেঙেছে আর প্লাস্টার হয়েছে পায়ে। এর পরে তাঁদের নির্দেশ মতো আউটডোরের চারটি ঘরে আমরা ঘুরতে থাকি। কিন্তু কেউই চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা করেননি। অনেক ক্ষণ পরে চিকিৎসকেরা জানান, তাঁদের যন্ত্র খারাপ। তাই আমাদের কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে যেতে হবে।”
বারাসত হাসপাতালের সামনে মুকুন্দ বালা। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ
মুকুন্দবাবুর পরিজনেরা জানিয়েছেন, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে জানানো হয়, সেখানেও হাড়ের চিকিৎসার নির্দিষ্ট যন্ত্র খারাপ। তাই তাঁদের নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে যেতে বলা হয়। এনআরএসের চিকিৎসকেরা অবিলম্বে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন বলে জরুরি কাগজপত্র তৈরি করেন। কিন্তু তার পরে হঠাৎ জানান, শয্যা নেই। তাই অস্ত্রোপচার হবে না। মুকুন্দবাবুর পুত্রবধূ মীনা বালা বলেন, “আমরা বলি, সারা দিন ধরে রোগীকে নিয়ে ঘুরছি। মানুষটা যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। আর আমাদের ফিরিয়ে দেবেন না। কিন্তু কেউ কথায় কান দেননি। উপরন্তু পুলিশ এসে আমাদের চলে যেতে বলে।” দিনভর ঘোরার পরে রাতে বারাসতেই ফেরেন তাঁরা।
কিন্তু কেন এমন করল ওই চার হাসপাতাল? বারাসত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, তাঁদের হাসপাতালে কোমরের হাড় ভাঙার চিকিৎসা হয় না। তাই তাঁরা কলকাতায় রেফার করেন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও আর জি কর কর্তৃপক্ষ জানান, অস্ত্রোপচারের জন্য নির্দিষ্ট যন্ত্র খারাপ থাকায় তাঁদেরও কিছু করার ছিল না। আর এনআরএস কর্তৃপক্ষের সাফাই, অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে অস্ত্রোপচার করার পরে রোগীকে রাখার মতো জায়গা ছিল না।
তা হলে কি এ ভাবেই বিনা চিকিৎসায় কষ্ট পাবেন রোগীরা? স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অসিত বিশ্বাস বলেন, “এমনটা হওয়ার কথা নয়। রোগীর পরিজনেরা অভিযোগ করলে খতিয়ে দেখা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.