আগের ঘোষণাও উধাও
রেল-বাজেটে অসন্তোষ
ত কয়েকটি রেল-বাজেটে দুই মেদিনীপুরের জন্য গুচ্ছ-গুচ্ছ প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এ বারের রেলবাজেটে মমতার দলেরই রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী আগের ঘোষিত প্রকল্পের অনেকগুলির নামোল্লেখ পর্যন্ত করলেন না! এই অবস্থায় এ বারের বাজেটকে ‘হতাশাজনক’ বলেই চিহ্নিত করেছেন মেদিনীপুরের সিপিআই সাংসদ প্রবোধ পণ্ডা। তাঁর কথায়, “পুরনো সামান্য যে-ক’টি প্রকল্পের কথা এ বারও উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলিও কবে রূপায়িত হবেতার দিশা নেই বাজেটে।”
দেশের তিনটি জায়গায় সুরক্ষা-কেন্দ্র গড়া বলে বলে বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছে। বেঙ্গালুরু, লখউয়ের পাশাপাশি সেই তালিকায় নাম রয়েছে খড়্গপুরের। সিপিআই সাংসদ অবশ্য বলেন, “আগে খড়্গপুরে লোকো-পাইলট ট্রেনিং সেন্টার হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসে তার শিলান্যাসও করে গিয়েছেলেন। তার পর আর কাজ এগোয়নি। এমন কিছু জনপ্রিয় ঘোষণা প্রতিবারই হয়ে থাকে। কিন্তু, ঘোষণা মতো কাজ হয় না।” পাঁশকুড়া-চন্দ্রকোনা রোড (ভায়া ঘাটাল) রেললাইনের দাবি দীর্ঘদিনের। মমতা রেলমন্ত্রী থাকাকালীন কিছু-আশ্বাস ঘোষণা ছিল। কিন্তু এ বারের বাজেটে ওই লাইনের কথা উল্লেখই নেই! ফলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্থানীয় মানুষের মধ্যে। ঘাটালের গুরুত্ব উত্তরোত্তর বাড়ছে। আশপাশ এলাকার বহু মানুষ এখানে আসেন। কিন্তু স্থানীয় মানুষকে ট্রেন ধরার জন্য হয় চন্দ্রকোনা রোড, পাঁশকুড়া, নয়তো মেদিনীপুরে আসতে হয়। ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়া রেল লাইন তৈরির দাবিও অনেক আগের। আগের রেলবাজেটে আশ্বাস ছিল। এ বারের বাজেটে তারও উল্লেখ না থাকায় ক্ষুব্ধ অনেকেই।
গতবারের ঘোষিত সব প্রকল্পের কী হল, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলে মেদিনীপুরের সিপিআই সাংসদ বলেন, “আগে বলা হয়েছিল বেলদা-কাঁথি রেললাইন হবে। এ বার বলা হল কাঁথি-এগরা। তা হলে বেলদা পর্যন্ত কী লাইন হবে না? আমরা তো কিছুই বুঝতে পারছি না!” তাঁর বক্তব্য, “এ ভাবেই কয়েকটি প্রকল্পের কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, গত বার দিঘা-বালিচক লাইনের কথা বলা হয়েছিল। এ বার বলা হয়েছে দিঘা-এগরা লাইন হবে। তবে, লালগড়ে রেল চলার ‘স্বপ্ন’ এখনও জিইয়ে রাখছে রেল দফতর। গত বারের বাজেটেই লালগড়ে রেললাইন হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। এ বারের বাজেটেও ভাদুতলা-ঝাড়গ্রাম (ভায়া লালগড়) রেললাইনের সমীক্ষার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।” কিন্তু সাংসদের বক্তব্য, “বাজেটে উল্লেখ করা হচ্ছে। কিন্তু কাজ হচ্ছে কোথায়? এক বছরে এখানে লাইন তৈরির কাজ এক ছটাকও তো এগোয়নি।” দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এক আধিকারিকের অবশ্য দাবি, “নতুন লাইন তৈরির আগে কিছু পদ্ধতি মানতে হয়। সেই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে লাইন তৈরি অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে সেই পদ্ধতিগত কাজ এগোচ্ছে।”
রেলবাজেটে এ বার আর দুই মেদিনীপুরের জন্য কোনও মডেল স্টেশনেরও উল্লেখ নেই। নেই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, তমলুক স্টেশনে মাল্টি-ফাংশনাল কমপ্লেক্স গড়াও কথাও। নেই খড়্গপুরে নার্সিং কলেজ, খড়্গপুর, মেদিনীপুর, মেচেদায় হাসপাতাল তৈরির উল্লেখও। যদিও আগে এ সব ঘোষণা হয়েছিল। খড়্গপুরকে আন্তর্জাতিক স্টেশন করারই বা কী হবেকেউ জানে না! রেলবাজেটের সমালোচনায় সরব হয়েছে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তাপস সিংহ বলেন, “এ বারের বাজেট দিশাহীন। উল্লেখযোগ্য কোনও পদক্ষেপ নেই।” তাঁর অভিযোগ, “রেলে বহু শূন্যপদ পড়ে রয়েছে। বেকার যুবক-যুবতীরা আশায় বুক বাঁধছেন। কিন্তু, শূন্যপদ পূরণেরও কোনও উদ্যোগ নেই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.