চাঁচল
নিহত বধূ কাদের সমর্থক, চাপান-উতোর তিন দলের
মোবাইল চুরি নিয়ে বিবাদের জেরে পেটে গরম লোহার রড ঢুকিয়ে এক বধূকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে মালদহের চাঁচলে। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এক সিপিএম নেতা এবং তাঁর দাদাকে ধরেছে পুলিশ। আর তার পরেই নিহত বধূর পরিবার কাদের সমর্থক তা নিয়ে চাপান-উতোর বেধেছে কংগ্রেস, তৃণমূল এবং সিপিএমে। যদিও কাঞ্চন মালো নামে ওই বধূর স্বামী তপন মালোর বক্তব্য, তাঁরা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। এমনকী, খুনটিও রাজনৈতিক কারণে হয়নি।
মোবাইল চুরি নিয়ে বিবাদের জেরে শুক্রবার রাতে চাঁচলের গোবিন্দপাড়া গ্রামে পড়শি এক যুবক শুভ মালো কাঞ্চনদেবীর (৪৫) পেটে গরম লোহার রড ঢুকিয়ে দেন বলে অভিযোগ। রবিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান বধূটি। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শুভর কাকা তথা সিপিএমের মালতীপুর লোকাল কমিটির সদস্য বিজয় মালো এবং শুভর বাবা সাকরাতু মালোকে রবিবারই গ্রেফতার করে পুলিশ। শুভ এখনও পলাতক।
সোমবার সকালে তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য কাঞ্চনদেবীর বাড়িতে যান। পৌঁছন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রও। পরিবারটিকে ২০ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্য দেওয়া ছাড়াও কাঞ্চনদেবীর ছেলের পড়াশোনার ব্যয় বহনের আশ্বাস দেন মন্ত্রীরা। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর অভিযোগ, “মালদহে আমাদের সংগঠন বাড়তে দেখে সিপিএম আতঙ্কিত হয়ে ওই হামলা করেছে। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে মহিলাদের জন্য পঞ্চাশ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করা হবে। সেই কারণেও আমাদের সমর্থক কাঞ্চনদেবীর উপরে এই হামলা হয়ে থাকতে পারে।”
চাঁচলের গোবিন্দপাড়া গ্রামে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও সাবিত্রী মিত্র। সোমবার বাপি মজুমদারের তোলা ছবি।
যদিও কাঞ্চনদেবীকে দলীয় সমর্থক দাবি করে চাঁচল-২ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, “কাঞ্চন মালোর পেটে যখন গরম লোহার রড ঢোকে, তখন তৃণমূল নেতারা কোথায় ছিলেন? আমাদের দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরাই কাঞ্চনদেবীকে ওই রাতে হাসপাতালে নিয়ে যান।” তাঁর অভিযোগ, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজনৈতিক ফয়দা তোলার মতলবে তৃণমূল কাঞ্চনদেবীর পরিবারকে নিজেদের সমর্থক বলে দাবি করছে।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আলমের বক্তব্য, “খুন হওয়া মহিলার পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে মন্ত্রীরা যেতেই পারেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তৃণমূল রাজনীতি করছে।”
একই অভিযোগ সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রের। তিনি অবশ্য কংগ্রেস এবং তৃণমূলদু’পক্ষকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। আর সিপিএমের চাঁচল জোনাল কমিটির সম্পাদক হামিদুর রহমান দাবি করেছেন, কাঞ্চন মালো খুনের পিছনে রাজনীতি নেই। ঘটনাটা পারিবারিক বিবাদের জের। তাঁর বক্তব্য, “কাঞ্চন মালো এবং ওই খুনের অভিযোগে যাঁদের পুলিশ গ্রেফতার ধরেছেদু’টি পরিবারই আমাদের কর্মী-সমর্থকদের।”
সাবিত্রী মিত্রের পাল্টা জবাব, “দলের কে, কখন তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন, তা জেলা কংগ্রেসের নেতারা খোঁজই রাখেন না। কাঞ্চন মালো ও তাঁর স্বামী অনেকদিন আগেই তৃণমূলে ঢুকেছেন। আর সিপিএম নিজেদের নেতাদের বাঁচাতে কাঞ্চন মালোকে দলের সমর্থক বলে দাবি করেছে।”
রাজনীতি করেন?
নিহত বধূর স্বামী তপন মালোর জবাব, “গরিব মানুষ। খেটে খাই। ভোট দেওয়ার সময় যাকে ভাল লাগে তাকে দিই। কোনও দল করি না।”
কাঞ্চনদেবীকে খুনের পিছনে কি কোনও রাজনৈতিক কারণ আছে?
তপনবাবু বলেন, “একটা মোবাইল চুরির মিথ্যা অভিযোগে আমার স্ত্রী-র উপরে হামলা হয়েছে। রাজনীতি কোথায়?”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.