উত্তরের চিঠি
ধ্বংসের মুখে আত্রেয়ী খাঁড়ি
ডাঙা খাঁড়ি বালুরঘাটের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়ে মিশে গিয়েছে আত্রেয়ীর বুকে। কিন্তু খাঁড়ির অবস্থা মোটেই ভাল নয়। আমাদের উদ্যোগহীনতায়, ও ভাবনাচিন্তার দীনতায় খাঁড়ি ধ্বংসের দিকে চলেছে। জনসংখ্যা বাড়ায় এর গতিপথে বসতি গড়ে উঠেছে। সংকুচিত হয়েছে খাঁড়ির পথ। অপ্রশস্ত খাত বর্ষার সময় বেশি জল ধারণ করতে পারে না। এ জন্য বন্যার ব্যাপকতা দিন দিন বাড়ছে। বালুরঘাট পৌরসভা নোংরা আবর্জনা, প্লাস্টিক জমা করছে জলের পাশে। ঘটছে জলদূষণ। পাশের পেট্রোল পাম্প থেকে তেল এসে জলে মিশে জলকে দূষিত করছে। জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ (বায়োলজিক্যাল অক্সিজেন ডিম্যান্ড) কমছে। ফলে জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। খাঁড়ির ধারে প্রাতঃকৃত্য করা কিছু মানুষের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। খাঁড়িকে ঘিরে বেঁচে থাকা মানুষরা মাছের অভাবে জীবিকার ধারা বদলাতে বাধ্য হচ্ছেন।
নোংরার পাহাড় জমেছে আত্রেয়ীর বুকে।
এর থেকে পরিত্রাণ পেতে খাঁড়ি সংস্কার ও সেচ দফতরকে নিয়ে ওয়াটার ম্যাপিং করে খাঁড়ি দখল আটকাতে হবে। তলদেশের পলি তুলে নদীর গভীরতা বাড়াতে হবে। এতে বন্যার সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে। বাড়াতে হবে মাছ চাষ। এখান থেকেই স্থানীয় অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হতে পারে। জেলার উন্নতির প্রয়োজনে এই খাঁড়িকে কাজে লাগানো যেতে পারে। এ জন্য প্রত্যেকের সম্মিলিত আন্তরিক উদ্যোগ চাই।
নেশার গ্রাস
কাশির সিরাপ ও ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে নেশা করার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। মালদহ শহরে বেশ কয়েক বছর ধরে চোলাই মদ, গাঁজা ইত্যাদির পাশাপাশি এ ধরনের নেশার খুব চল হয়েছে। অন্য আর এক ধরনের নেশার প্রবণতাও খুব বাড়ছে। তা হল অ্যাডেসিভ। এটি অল্প খরচে খুব ভাল নেশার জিনিস। বিক্রিও খুব বেশি। সরকার অ্যাডেসিভের লাগামছাড়া বিক্রি বন্ধের ওপর রাশ না টানলে এ নেশা চলতেই থাকবে।
মাদকাসক্তি বন্ধের জন্য চাই সচেতনতা। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও গণমাধ্যম এ ব্যাপারে উদ্যোগী হলেও সমাজের একটা অংশের কাছে পৌঁছনো যাচ্ছে না। আমরা প্রত্যেকেই যদি একক ভাবে অন্তত এক জনকে মাদকাসক্তি থেকে নিরস্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাই, তা হলে বিরাট সংখ্যক মানুষকে এই আসক্তি থেকে নিবৃত্ত করা যাবে।
বেহাল হাসপাতাল
প্রত্যেকটি মানুষের কাছেই জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। এই পৃথিবী ছেড়ে কেউই চলে যেতে চান না। তাই অসুস্থ মানুষকে নিয়ে আত্মীয়স্বজন হাসপাতালের শরণাপন্ন হন। কিন্তু হাসপাতালের বেহাল পরিষেবা রোগীর আত্মীয়দের সংকটজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন করে তোলে। এমনই বিপর্যস্ত অবস্থা বালুরঘাট জেলা সদর হাসপাতালের। পরিকাঠামোগত অনুন্নয়ন এবং চিকিৎসক ও কর্মচারীদের কর্মতৎপরতার অভাব ও গাফিলতিতে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মৃত্যু সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এই হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে পর্যাপ্ত রক্ত নেই। অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই। এমনকী স্যালাইনের জোগানের অভাব রয়েছে। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলেও রোগীদের চিকিৎসায় সেগুলিকে ব্যবহার করা হয় না। যেমন, কম্পিউটার দ্বারা চক্ষু পরীক্ষার মেশিন থাকলেও তা ব্যবহার করা হয় না। চিকিৎসকরা হাসপাতাল চত্বরের বাইরে ওষুধের দোকানে অবাধে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন। সে সময় রোগীর সংকটজনক পরিস্থিতি হলে এদের পাওয়া যায় না। কারণ তখন তাদের মোবাইল বন্ধ থাকে। এটা তাদের কাছে সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু সময় মতো চিকিৎসার অভাবে রোগীর মৃত্যু হয়। কিছু দিন আগে শুধু এই কারণে যমজ শিশুর একটি মারা গিয়েছিল। এ ছাড়া রয়েছে হাসপাতালে কাজ করা চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অমানবিকতা। তারা এক সঙ্গে সাত-আট জন রোগীর দায়িত্ব নেয়। কিন্তু এক জনেরও দেখভাল করে না। যদিও এর জন্য পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। বালুরঘাট হাসপাতালের পরিবেশও অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। সিঁড়ি, বারান্দার যেখানে সেখানে মল-মূত্র ছড়িয়ে থাকে। হাসপাতালটিতে রোগীর তুলনায় শয্যা সংখ্যা কম হওয়ায় রোগীদের মাটিতে শুতে হয়। পাশে অবাধে ঘুরে-বেড়ায় কুকুর-বেড়াল। এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বেন। কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, তাঁরা যেন বালুরঘাট জেলা সদর হাসপাতালের বর্তমান অরাজকতা দূর করে সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। যাতে মুমূর্ষু রোগী ও তার পরিজনেরা মানবিকতার মুখ দেখতে পান। উপযুক্ত পরিষেবার অভাবে স্বজন-মৃত্যু মর্মান্তিক ব্যাপার।
এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।
‘উত্তরের চিঠি’
এ বি পি প্রাঃ লিঃ,
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড,
শিলিগুড়ি ৭৩৪৪০১



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.