লিটল ম্যাগাজিন মেলায় সামিল হতে সকাল থেকেই জমজমাট কৃষ্ণনগর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ। দিন ভর চলছে চেনা-অচেনা ম্যাগাজিনের বিকিকিনি। চলছে মত বিনিময়। সাহিত্যপ্রেমীদের হাতে হাতে ঘুরছে বই। লিটল ম্যাগাজিনের এই সম্ভার চিনে নিতে ভিড় করছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারাও।
এ বারই প্রথম লিটল ম্যাগাজিন চর্চাকেন্দ্রের আয়োজনে কৃষ্ণনগর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে শুরু হয়েছে সারা বাংলা লিটল ম্যাগাজিন মেলা। ৫০টিরও বেশি প্রকাশক ও সম্পাদক সাজিয়েছেন তাঁদের লিটল ম্যাগাজিনের পসরা। শনিবার শুরু হওয়া দু’দিনের এই মেলায় ভিড় করেছেন শহরের বইপ্রেমী মানুষেরা।
লিটল ম্যাগাজিন চর্চাকেন্দ্রের সম্পাদক কৌশিক দে বলেন, “পরিকাঠামোর সমস্যার জন্য লিটল ম্যাগাজিন সব সময়ে সব জায়গায় পৌঁছে দেওয়া যায় না। ফলে অনেকের কাছেই এই ম্যাগাজিনের হাল-হকিকত পৌঁছয় না। অনেক ক্ষেত্রেই ম্যাগাজিনের নাম জানলেও তা হাতেই পান না অনেক মানুষ। তাই এই ধরনের মেলার গুরুত্ব অপরিসীম।” তিনি আরও বলেন, “এই মেলার মধ্যে দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে লিটল ম্যাগাজিনের বিশাল একটা সম্ভার খুলে যাবে। বাড়বে পরিচিতিও। সম্ভাবনা ও সমস্যা নিয়ে চলবে আলোচনা। মেলায় এই যোগাযোগের ফলেই বেরিয়ে আসবে নতুন পথও।” |
২০১০ সালে কৃষ্ণনগরে তৈরি হয়েছিল লিটল ম্যাগাজিন চর্চাকেন্দ্র। প্রথম থেকেই এই সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল শহরে একটা টিল ম্যাগাজিন মেলা শুরু করা। পাশাপাশি শহরে একটি স্থায়ী লিটল ম্যাগাজিন সংগ্রহশালা ও পাঠাগার তৈরি করা। তবে প্রথমিক ভাবে তাদের উদ্যোগ খনিকটা বাস্তবায়িত হয়েছে। শুরু হয়েছে মেলা। তবে জমির অভাবে দ্বিতীয় প্রস্তাবটি এখনও বিশ বাঁও জলেই। কৌশিকবাবু বলেন, “বাংলা সাহিত্যে লিটল ম্যাগাজিনের গুরুত্ব অনেক। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘বঙ্গদর্শন’ থেকে শুরু করে প্রমথ চৌধুরীর ‘সবুজ পত্র’, বুদ্ধদেব বসুর ‘কবিতা’ থেকে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘কৃত্তিবাস’ বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। জন্ম দিয়েছে অনেক সাহিত্যিকেরও।” মেলায় কলকাতার ‘দিবারাত্রির কাব্য’, হাবড়ার ‘উজাগড়’, চাপড়ার ‘আনন্দম’, চাকদহের ‘ডিঙি’-র পাশে জায়গা করে নিয়েছে কৃষ্ণনগরের ‘বার্তাবাহী’। পত্রিকার সম্পাদক সঞ্জীব চক্রবর্তী বলেন, “এই ধরনের মেলা বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করবে।” |