সম্পাদক সমীপেষু...
বিস্মৃত ব্রহ্মবান্ধব
বিপ্লবী ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের জন্মসার্ধশতবর্ষ (১৮৬১-১৯০৭) নিঃশব্দে চলে গেল। জন্মসার্ধশতবর্ষ পালনে কী সরকারি, কী বেসরকারি কোনও স্তরেই তেমন উৎসাহ দেখা গেল না। এটা বড় দুঃখের, লজ্জারও।
কিছু দিন আগে হুগলি জেলার খন্যান গ্রামে ব্রহ্মবান্ধবের জন্মভিটা দেখে এলাম। ভিটা বলতে চার পাশে জঙ্গল আর বাঁশঝাড়। গরু-ছাগল চড়ছে। এরই মধ্যে এক জায়গায় একটি মলিন স্মৃতিফলক সাক্ষ্য দিচ্ছে, একদা এখানে স্বদেশি আন্দোলনের কট্টরপন্থী নেতা, বাগ্মী, পণ্ডিত, ‘সন্ধ্যা’ পত্রিকার সম্পাদক ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় (পিতৃদত্ত নাম ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সারা জীবন বিতর্ক বয়ে বেড়ানো এমন এক বর্ণময় চরিত্রের মানুষের প্রতি রবীন্দ্রনাথও কম আকর্ষণ অনুভব করেননি। ‘চার অধ্যায়’ উপন্যাসে ব্রহ্মবান্ধবের ছায়া তার জ্বলন্ত প্রমাণ। আমরা যে ইতিহাস-বিস্মৃত জাতি, সাহিত্যসম্রাটের সেই কথার প্রমাণ আর একবার মিলে গেল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিনীত নিবেদন, ব্রহ্মবান্ধবের জন্মস্থানটি মর্যাদার সঙ্গে রক্ষা করার ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
লেখকের প্রকৃত নাম
বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ‘ব্রিজের নীচে, সময় ওদের ছোঁয় না’ (৮-২) শীর্ষক লেখাটির ‘আমাদের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী’ স্তম্ভে অসমিয়াভাষী প্রখ্যাত লেখক ও সাহিত্য আকাদেমির এককালীন সভাপতি রূপে ধীরেন ভট্টাচার্যের নাম উল্লেখ করছেন। সবিনয় জানাই যে, ওই লেখকের নাম ধীরেন ভট্টাচার্য নয়, হবে ডা. বীরেন্দ্রকুমার ভট্টাচার্য। ‘ইয়ারু ইঙ্গম’ গ্রন্থের জন্য তিনি সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। ‘মৃত্যুঞ্জয়’ উপন্যাসের জন্য ‘জ্ঞানপীঠ’ সম্মানেও ভূষিত হয়েছিলেন। অসমিয়া ভাষায় তিনিই প্রথম এই স্বীকৃতি পান।
শেষ থেকে শুরু
রবিবাসরীয়তে (১৯-২) রবার্ট ম্যাকি বলেছেন যে, অ্যাটেনবরো তাঁর গাঁধী ছবিতে প্রথমেই গাঁধীর মৃত্যু দেখিয়ে একটা অভিনব চাল চেলেছেন। অনেক ছবিতেই ওটা করা হয়েছে। মেহবুব খান তাঁর বিখ্যাত ছবি ‘মাদার ইন্ডিয়া’য় (১৯৫৭) এবং রাজ কপূর ওঁর ‘মেরা নাম জোকার’-এ (১৯৭১) শেষের দৃশ্যকে ছবির প্রথমেই দেখিয়েছেন।
সবাই বেপরোয়া
অসভ্য সমাজ, অসভ্য আচরণ সম্পর্কে কিছু কথা। আমার বাল্যকালে আমি দেখেছি যে, কোনও পাড়াতে যথেচ্ছ ভাবে বা অসভ্যের মতো মাইক বা বক্স বাজানো যেত না। রীতিমত থানা থেকে অনুমতি নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাইক বাজানো হত, তাও রাত ন’টা পর্যন্ত। কেউ অতিরিক্ত সময় বাজালেই থানা থেকে এসে ওই মাইক বাজেয়াপ্ত করত। সে সব আইন-কানুন আজ কোথায় গেল? সবাই বেপরোয়া। সমাজটাই যেন বেপরোয়া হয়ে চলেছে।
প্রসঙ্গ পটচিত্র
কালীঘাটের পটচিত্র প্রদর্শনী প্রসঙ্গে শ্রদ্ধেয় মৃণাল ঘোষের মন্তব্যের (২১-১) পরিপ্রেক্ষিতে দু’একটি কথা। শ্রীঘোষ লিখেছেন অন্তত ১৯২০-র দশকের আগে পর্যন্ত সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের কেউই এ দিকে বিশেষ নজর দেননি। ১৯২৬ সালে অজিত ঘোষের লেখায় এ ছবির বৈভব সম্বন্ধে সচেতন হন দেশবাসী।
১৯২৬-এর অনেক আগেই কিন্তু নন্দলাল বসু কালীঘাট পটচিত্রে গভীর ভাবে আগ্রহী ও প্রভাবিত হয়েছিলেন। ১৯১৩-১৪ সালেই তিনি কালীঘাট শৈলীতে বহু ছবি এঁকে দোকান থেকে দু’-চার আনা দামে বিক্রির ব্যবস্থা করেছিলেন।
শিল্পরসিক অনেকে সে ছবি কিনেওছিলেন। তা ছাড়া তিনি ওই সময়কার বেশ কিছু পটচিত্র সংগ্রহও করেছিলেন, যা রক্ষিত আছে শান্তিনিকেতনের নন্দন সংগ্রহশালায় (দ্র: Kalighat Paintings in Nandan Museum, Jayanta Chakraborty, 1986)। আগ্রহী ছিলেন মুকুল দে-ও। শিল্পী নিবারণচন্দ্র ঘোষ ও কালীচরণ ঘোষের কাছ থেকে তিনি ছ’টি পট কেনেন ১৯২০ সালে। কলকাতায় ভারতীয় জাদুঘরের শিল্প সংগ্রাহকদের নজর থাকায় সেই সুদূর ১৮৮৯ সালেই ৩৯টি ও ১৮৯০ সালে ১টি অনবদ্য ছবি সংগৃহীত হয়।
শ্রীঘোষ আরও লিখেছেন, তার আগে থেকেই হয়তো বিদেশিরা সংগ্রহ করেছিলেন। হয়তো নয়, সত্যিই। লন্ডনের ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্ট মিউজিয়ামে প্রথম দুটি পটচিত্র সংগৃহীত হয় যথাক্রমে ১৮৭৯ ও ১৮৮০ সালে। (প্রদর্শনীর ২৯ নং ও ৩১ নং ছবি দুটি)। এর পর ১৬টি পট ১৮৮৯ সালে।
সাহিত্যিক রুডইয়ার্ড কিপলিং তাঁর বাবার সংগৃহীত ২৮টি পট ১৯১৭ সালে ওই মিউজিয়ামে দান করেন। তাঁর বাবা সেগুলি কালীঘাট থেকে সংগ্রহ করেছিলেন ১৮৭০ থেকে ১৮৯০-এর দশকের বিভিন্ন সময়ে। তবে শুধু বিদেশিরা কেন, দেশি ক্রেতারাও ছিলেন। (দ্র: Kalighat Paintings, Mapin Publishing, 2011).


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.