ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, স্ট্রোক, হৃদরোগের মতো ছোঁয়াচে নয় এমন জটিল ব্যাধির চিকিৎসা এবং নিয়ন্ত্রণে উত্তরবঙ্গের ৩ জেলায় আলাদা সেল চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। শনিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিন জেলার সদর হাসপাতালের সুপার, চিকিৎসকদের একাংশকে নিয়ে তারই প্রাথমিক প্রশিক্ষণ পর্ব শুরু হল। ৪ দিন ধরে প্রশিক্ষণ চলবে। কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তায় ওই কাজ হচ্ছে। দেশের ১০০টি জেলায় প্রকল্প চালু করা হচ্ছে। তার মধ্যে রাজ্যে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং উত্তর দিনাজপুর জেলা রয়েছে।
এ দিন প্রশিক্ষণ শিবিরের সূচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। তিনি জানান, দার্জিলিং জেলা হাসপাতাল ছাড়াও এই জেলায় শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল রয়েছে। সেল চালু করার ক্ষেত্রে সেখানে জায়গার সমস্যা রয়েছে। সে কারণে এই জেলায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই সেল চালু হলে ভাল হয়। রুদ্রবাবু বলেন, “ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্যানসারের চিকিৎসায় সচেতনতা প্রচার এবং পরিষেবায় জোর দিতে এই সেল খোলা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। প্রাথমিক ভাবে রাজ্যের যে ৩ জেলায় প্রকল্প চালু হচ্ছে, তা সফল হলে অন্যত্র এই কাজ করার আর্জি জানানো যাবে। সে কথা মাথায় রেখে প্রকল্পের কাজ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানানো হয়েছে।”
কী করা হবে এই প্রকল্পে? স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য স্তরে একটি এনসিডি (নন কমিউনিকেবল ডিজিজ) সেল খোলা হবে। জেলা স্তরেও থাকবে একটি সেল। ব্লক, গ্রামীণ হাসপাতাল, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে কী ভাবে তাঁরা ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, ক্যানসার, হৃদরোগে আক্রান্তদের প্রাথমিক পরিষেবা দেবেন। প্রাথমিক ভাবে রোগ চিহ্নিত করতে রক্ত বা অন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা গ্রামীণ হাসপাতাল স্তরেই করার ব্যবস্থা থাকবে। রোগ নিরাময়ে কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে, সে ব্যাপারে বাসিন্দাদের সচেতন করা হবে। সেই উদ্দেশ্যে ৪ মাস ধরে জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণের পর এনসিডি সেল কাজ শুরু করবে।
প্রকল্পের মুখ্য সংযোজক অখিল বিশ্বাস জানান, জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ সেলের ‘নোডাল অফিসার’ থাকবেন। ওই সমস্ত রোগ বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য নথিভুক্ত করার কাজ হবে। তাতে রোগ নিরাময় এবং নিয়ন্ত্রণের কাজ সহজ হবে। |