উত্তরবঙ্গে যাচ্ছে তদন্তকারী দল
মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি বহাল রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই
চিকিৎসায় গুরুতর গাফিলতি প্রমাণিত হওয়ায় দেড় বছর আগেই রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করেছে বলে জানিয়েছে। অথচ বিশ্বজিৎ ঘোষ নামে ওই অর্থোপেডিক সার্জন বহাল তবিয়তে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে কাজ করে চলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কয়েক মাস আগে আবার তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডেপুটেশনে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বিশ্বজিৎবাবু যে রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই সরকারি চাকরিতে বহাল রয়েছেন, এই খবর দু’সপ্তাহ আগে স্বাস্থ্যভবনে পৌঁছয়। তার পরে এখনও তাঁকে সাসপেন্ড বা বরখাস্ত করা হল না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে স্বাস্থ্য দফতরের মধ্যেই। এ ভাবে অন্য কোনও জেলায় আর কোনও সরকারি চিকিৎসক রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কি না, তা রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতরের টেকনিক্যাল অফিসার অসিত বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী দল শনিবারই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে যাচ্ছেন। এ দিকে শিক্ষা-স্বাস্থ্য অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিশ্বজিৎবাবুকে কাজে আসতে বারণ করে দ্রুত চিঠি পাঠানো হচ্ছে।
যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই বিশ্বজিৎবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন, ২০০০ সালে তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে একটি চিকিৎসায় গাফিলতির মামলা দায়ের হয়েছিল। বসিরহাটে তাঁর ব্যক্তিগত চেম্বারে এক বয়স্ক রোগীর চিকিৎসা করেছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যু হওয়ায় বাড়ির লোক অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর দাবি, বছর দু’য়েক আগে তিনি শেষ বার শুনানিতে হাজির হয়েছিলেন। সেই শুনানিতে মেডিক্যাল কাউন্সিল কী বলেছিল, তা তিনি ভুলে গিয়েছেন!
মেডিক্যাল কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ জানান, দেড় বছর আগেই চিকিৎসায় গাফিলতি প্রমাণিত হওয়ায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য বিশ্বজিৎবাবুর রেজিস্ট্রেশন বাতিল হয়ে যায়। তিনি আর রেজিস্ট্রেশন ফেরানোর আবেদনও জানাননি। ফলে এখনও সেটা বাতিল হয়েই আছে। বিষয়টি তাঁকে এবং মেডিক্যাল কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও একাধিক অধ্যক্ষ এসেছেন। তাঁরা কেউ কোনও ব্যবস্থা নিলেন না কেন? পূর্বতন অধ্যক্ষ জ্যোতিবিকাশ সাহা ও তাপস ভট্টাচার্যের দাবি, তাঁরা কিছুই জানতেন না।
এই ঘটনায় স্বাস্থ্যকর্তারা উদ্বিগ্ন মূলত দু’টি কারণে। প্রথমত তাঁরা বুঝতে পারছেন, মেডিক্যাল কলেজগুলির মধ্যে বিভিন্ন চিকিৎসকের ‘অন্যায়’ ঢাকাচাপা দিতে চিকিৎসকদেরই একাধিক গোষ্ঠী সক্রিয়। দ্বিতীয়ত, জেলা হাসপাতাল বা মেডিক্যাল কলেজগুলিতে কী ঘটছে, তার অনেক কিছুই ঠিক সময় স্বাস্থ্য দফতরে এসে পৌঁছচ্ছে না। অসিতবাবুর কথায়, “কী ভাবে এই তথ্য দেড় বছর ধরে স্বাস্থ্য দফতরের কানে এল না, কেন ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেরি হল, কেনই বা একাধিক অধ্যক্ষ বিষয়টি টের পেলেন না, সব খবর নিতে হবে।” বর্তমান অধ্যক্ষ অনুপ রায় কী ভাবে সেই তথ্য জানলেন এবং স্বাস্থ্যভবনে জানালেন? অনুপবাবুর বক্তব্য, “যা বলার স্বাস্থ্যভবনে বলে দিয়েছি। আর কিছু জিজ্ঞাসা করবেন না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.