ধর্মঘটে সরকারি কর্মীদের যোগদান নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মতপার্থক্য’ আরও উসকে দিতে আসরে নামলেন নিরুপম সেন। সিপিএমের এই পলিটব্যুরো নেতার কটাক্ষ, পশ্চিমবঙ্গের সব মন্ত্রীর পদই ‘আলঙ্কারিক’। কারও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই। যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা একটি ‘কেন্দ্র’ থেকেই নেওয়া হয় বলেও মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেন নিরুপম।
ধর্মঘটের দিন সরকারি কর্মীদের কর্ম ক্ষেত্রে আসা-না আসার অধিকার রয়েছে বলে মত প্রকাশ করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু তার পরে তাঁর দফতরেরই সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ২৮ ফেব্রুয়ারির ধর্মঘটে অনুপস্থিত স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের এক দিনের বেতন কাটা হবে। মন্ত্রী ও সরকারের এই দুই রকম অবস্থান নিয়ে কটাক্ষ করে নিরুপম বলেন, “রাজ্যের মন্ত্রীদের তো নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার নেই। তাই এই অবস্থা।” সিপিএম নেতৃত্ব মনে করছে, পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রিসভায় এর আগে কংগ্রেসের মন্ত্রীদের সঙ্গে মমতার বিরোধ বেধেছে। কিন্তু তৃণমূলেরই কোনও মন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধ এই প্রথম। ধর্মঘটের বিষয়ে মমতার সঙ্গে ব্রাত্যর সম্পর্ক যথেষ্ট খারাপ হয়েছে বলেও সিপিএম নেতাদের ধারণা। আর তা বুঝেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর মধ্যের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে চাইছেন সিপিএম নেতারা। আজ সেই জন্যই বিতর্ক উসকে দিতে চেয়েছেন নিরুপম। সিপিএমের সুবিধা হল, দল ও সরকারের ক্ষোভের মুখে পড়লেও ব্রাত্য এখনও নিজের অবস্থানে অনড়। এ বিষয়ে নীরব থাকার কৌশল নিয়েছেন তিনি। কিন্তু স্কুল ও কলেজের শিক্ষক সমিতিগুলির অনেকেই এই বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন।
|
রাজ্যের দুই শীর্ষ বনকর্তার লেখা চিঠির প্রতিলিপি চেয়ে পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী। অতনু রাহা ছিলেন রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (হেড অফ দ্য ফরেস্ট)। সম্প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশে এম এ সুলতানকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই করাতকল বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে ডানা ছাঁটা হয় এম এ সুলতানের। প্রধান মুখ্য বনপাল (প্রশাসক) হিসেবে ফিরিয়ে আনা হয় অতনুবাবুকে। এর পর থেকে দুই শীর্ষকর্তার মধ্যে কার নির্দেশ বন দফতরের শেষ কথা, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এম এ সুলতান সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, তাঁর ‘ক্ষমতার পরিধি’ কতটা। অন্য দিকে, দিন কয়েক আগে অতনু রাহা বিভাগীয় কর্মীদের চিঠি দিয়ে জানান, সরকারি নির্দেশে ‘সংশয়ে’র অবকাশ নেই। চিঠিতেই তিনি জানান, দফতরের বিভাগীয় ও প্রশাসনিক কাজকর্ম তাঁর অনুমোদনেই হবে। অতনুবাবুকে প্রধান মুখ্য বনপাল (প্রশাসক) হিসেবে ফেরানোর পর সরকারি নির্দেশ এমনই ছিল। প্রশাসন ও বাজেট সংক্রান্ত কাজকর্মের দায়িত্ব ছিল তাঁর উপর। দুই বনকর্তার এই চিঠি চালাচালিতে কয়েক দিন ধরে বন দফতরের কর্মীদের কাছে জটিলতা তৈরি হয়েছে। শুক্রবারই সেই ‘জটিলতা’র কথা কানে যায় মুখ্যমন্ত্রীর। শনিবারই ওই দুই শীর্ষ বনকর্তার চিঠির প্রতিলিপি চেয়ে পাঠিয়েছেন তিনি।
|
মাওবাদী নেত্রী সুচিত্রা মাহাতোকে কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার রাজ্যের তরফে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, সুব্রত মৈত্রের চিকিৎসায় আছেন সুচিত্রা। তাঁর শরীরে গুলির ক্ষত রয়েছে। চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছেন। এক-দু’দিনের মধ্যে তা হতে পারে। শুক্রবার তাঁর ‘আত্মসমর্পণের’ পরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সুচিত্রার কোমরে গুলি লেগেছে। গ্রামে গ্রামের মতো চিকিৎসা হয়েছে। এখন প্রকৃত চিকিৎসা হবে। এর পরে রাতেই তাঁকে ওই নার্সিংহোমে নিয়ে যায় পুলিশ।
|
কলেজের পূর্ণ সময়ের শিক্ষকদের মতো বেতন-কাঠামো ও অন্যান্য সুযোগসুবিধার দাবিতে আজ, রবিবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাবেন আংশিক সময়ের স্থায়ী শিক্ষকরা। তার আগে তাঁরা থালা হাতে নিয়ে গড়িয়াহাট মোড় থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়ি পর্যন্ত মিছিল করবেন। শনিবার আংশিক সময়ের শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক ইলোরা বিশ্বাসের অভিযোগ, “অনেকেই নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না। পূর্ণ সময়ের শিক্ষকদের থেকে বেশি কাজ করেও যথাযথ সম্মান পাচ্ছি না আমরা।” তাঁর কথায়, “আমাদের দাবি-দাওয়া একাধিকবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে জানিয়েছি। সুরাহা না হওয়ায় এ বার খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে থালা হাতে বেতন কাঠামো ও সম্মান চাইতে যাব।”
|
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ, স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ফেল তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার-সহ মোট ৯ দফা দাবিতে আগামী বুধবার সংসদ অভিযান করবে এসইউসি। গত বছর ডিসেম্বরের শেষ থেকে তারা ওই দাবিগুলির পক্ষে দেশ জুড়ে স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছে। এসইউসি নেতৃত্ব জানান, কয়েক কোটি স্বাক্ষর সম্বলিত দাবিসনদ নিয়ে আগামী বুধবার দিল্লির রামলীলা ময়দান থেকে যন্তরমন্তর পর্যন্ত মিছিল করবেন তাঁরা। মিছিল শেষে যন্তরমন্তরে জনসভা হবে। সেখানে প্রধান বক্তা এসইউসি-র সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ। ওই সভা থেকে এসইউসি-র একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে দেখা করতে যাবে। প্রধানমন্ত্রীকে ওই স্বাক্ষরগুলি সম্বলিত দাবিসনদ জমা দেবে তারা। পশ্চিমবঙ্গ থেকে দলীয় কর্মীদের ওই কর্মসূচিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসইউসি তিনটি ট্রেন ভাড়া করেছে। |