এ বার দোলের কলিকাতায় সবুজের অভিযান দুরন্ত দুর্জয় দুর্বার হইবে, সেই বিষয়ে অনেক আগেই সর্বদলীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। বরং, অনুমান করা যায়, আলিমুদ্দিন স্ট্রিট এই কারণে ঈষৎ অবাক হইয়াছে যে, এ ঘোর বসন্তেও সব সবুজ হইয়া যায় নাই, কিঞ্চিৎ লাল রহিয়া গিয়াছে। লাল না হউক, গোলাপি। সে মাও নাই, সে লেনিনও নাই, এখন ফিকে গোলাপিই যথেষ্ট। কিন্তু লাল ও সবুজকে আনন্দধারায় মিলিতে দেখিয়া একটি গূঢ় প্রশ্ন মাথা তুলিয়াছে। বৈজ্ঞানিক প্রশ্ন। লাল এবং সবুজ সত্যই কতখানি স্বতন্ত্র? বর্ণতত্ত্ব থাকুক, একটি সরল সত্য ভাবিলেই চলিবে। যাঁহারা বর্ণান্ধ, তাঁহাদের একটি বড় অংশ বিশেষ করিয়া দুইটি রঙের তফাত করিতে পারেন না লাল এবং সবুজ। ‘লাল-সবুজ-বর্ণান্ধতা’ই নাকি বর্ণ-বিপর্যয়ের তালিকায় এক নম্বর। তাহাই যদি হয়, তবে তো পশ্চিমবঙ্গের সমকালীন দৃশ্যাবলির মর্মার্থ দিনের আলোর মতো উদ্ভাসিত হইল। পরিবর্তন-এর পশ্চিমবঙ্গে কিছুই বদলায় নাই, বদলাইবার কথাও ছিল না। কোনটি লাল, কোনটি সবুজ, চেনা যাইতেছে না, চেনা যাইবার কথাও ছিল না। বরং এই বিজ্ঞানসম্মত পরীক্ষার মধ্য দিয়াই নিঃসংশয়ে প্রমাণিত হইল যে, বাঙালি এক বর্ণান্ধ জাতি। অবশ্য ইহাই তাহার একমাত্র অন্ধতা, এমন কথা এতদ্দ্বারা প্রমাণিত হয় নাই। |