প্রাথমিক স্কুলে জল সরবারহ ব্যবস্থা হোক বা উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলা সবেতেই কারিগরি সহায়তা দিতে বিস্তারিত পরিকল্পনা তৈরি করেছে জলপাইগুড়ি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। বুধবার ইঞ্জনিয়ারিং কলেজে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং ভুমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে প্রযুক্তিগত সহায়তার মডেল তৈরি করা হয়েছে। পরবর্তীতে রিপোর্ট তৈরি করে উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার প্রশাসন এবং রাজ্য সরকারকেও কলেজের তরফে পাঠানো হবে। কলেজের তরফে সামাজিক কাজেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শহর লাগোয়া একটি প্রাথমিক স্কুলে পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা করতে কাজ শুরু করা হয়েছে। আরও দুটি প্রাথমিক স্কুলে চেয়ার টেবিল দেওয়া হয়েছে কলেজের প্রাক্তনীদের তরফে। কলেজের অধ্যক্ষ জ্যোতির্ময় ঝম্পটি বলেন, “জলপাইগুড়ি কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন চলছে। তারই অঙ্গ হিসেবে কলেজ সামাজিক দায়িত্ব পালনে উদ্যোগী হয়েছে। এই কাজে কলেজের প্রাক্তনীরাও এগিয়ে এসেছেন। উত্তরবঙ্গের সার্বিক পরিকাঠামো উন্নতিতে কলেজ কতৃপক্ষ একটি খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার মত যে সব কাজে কারিগরি সহায়তা প্রয়োজন, তার জন্য একটি মডেল প্রস্তুত করা হয়েছে। সেটি প্রশাসনকে দেওয়া হবে।” কলেজ সূত্রে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে কলেজ কতৃপক্ষ শিলিগুড়িতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ তৈরির প্রকল্পে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। জলপাইগুড়িতেও একই ভাবে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ তৈরির কাজে কলেজের কাছে কারিগরি সহায়তা চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। এই কাজেও জলপাইগুড়ি পুরসভাকে সহায়তা দিতে কলেজ কতৃপক্ষ তাদের আগাম সম্মতি জানিয়েছে। উত্তরবঙ্গে ফি বছরই বর্ষার সময়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। কলেজ কতৃপক্ষ যে মডেল তৈরি করেছে তাতে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা থেকে ‘ম্যানেজ’ করার ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। বন্যার সময়ে কোন কোন এলাকা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার বিস্তারিত তথ্য যোগাড় করা হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জলপাইগুড়ি জেলার নদীগুলি ভূটাানের পাহাড় থেকে নেমে এসেছে। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তৈরি মডেল কার্যকরী হলে বর্ষার সময়ে পাহাড়ে অতিরিক্ত বৃষ্টি শুরু হলেই কম্পিউটারের মাধ্যমে সেই তথ্য সেচ দফতর থেকে শুরু করে রাজ্য সরকারের কাছে পৌঁছে যাবে। তাতে আগাম প্রস্ততি নেওয়ার যথেষ্ট সময় থাকবে বলে কলেজ সূত্রে জানানো হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রথমেই যে বিষয়টিতে জোর দেওয়া হয়েছে, সেটি হল আবহাওয়ার পূর্বাভাস। বর্ষার আগে আবহাওয়ার গতি প্রকৃতি মালুম করতে বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে কলেজের তৈরি মডেলে। কলেজের অধক্ষ্য বলেন, “যে কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় আটকানো সম্ভব নয়। কিন্তু আগে থাকতে মালুম হলে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই এড়ানো যায়। বিপর্যয় শুরু হলেও আগাম পরিকল্পনা থাকতে তা সহজেই সামলানো যায়। সেই কাজটিই করা হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জেলা প্রশাসনগুলিকে জানানো হবে।” |