জীবনদায়ী ওষুধ তৈরির একটি কারখানায় ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস ঝোলানো হল। শ্রমিক সংগঠনের ‘হুমকি’-র জেরেই এই সিদ্ধান্ত বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। বারাসতের কদম্বগাছিতে ওই কারখানাটি প্রায় কুড়ি বছরের পুরনো। কাজ করেন শ’খানেক শ্রমিক।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত বছরগুলিতে এই কারখানায় শ্রমিকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভে সামিল হতে দেখা যায়নি। নির্বিঘ্নেই চলছিল উৎপাদন। প্রতি বছর মার্চ মাসে নিয়মমাফিক বেতন বৃদ্ধিও হত। কিন্তু মাস পাঁচেক আগে কারখানায় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন তৈরি হওয়ার পর থেকেই গোলমাল শুরু বলে অভিযোগ। তার পর থেকেই বেতন বৃদ্ধি-সহ বিভিন্ন দাবিতে মালিকদের সঙ্গে নানা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন শ্রমিকদের একাংশ। উৎপাদনও কমতে শুরু করে। মালিক পক্ষকে নানা সময়ে হুমকি, ঘেরাওয়ের সম্মুখীন হতে হয় বলে অভিযোগ। কারখানা চত্বরে তৃণমূলের পতাকা, মমতার ছবি টাঙিয়ে সভা-মিছিলও চলতে থাকে।
এই সমস্ত ঘটনা তৃণমূল নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন মালিকপক্ষ। কিন্তু তাতে সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। অবশেষে মঙ্গলবার রাতে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস ঝুলিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ। যার জেরে বুধবার সকালে শ্রমিকেরা মালিকপক্ষকে কারখানার মধ্যে ঘণ্টা দু’য়েক আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। তার পরেও কারখানার গেটের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ চালিয়ে যান শ্রমিকেরা।
শ্রমিকদের একাংশের বক্তব্য, কারখানায় যত দিন পর্যন্ত কোনও সংগঠন ছিল না, তত দিন অশান্তির বাতাবরণও তৈরি হয়নি। দাবি-দাওয়া আলোচনার মাধ্যমেই নিষ্পত্তি হত। কিন্তু তৃণমূল যখন থেকে ‘খবরদারি’ শুরু করেছে, তখন থেকেই উত্তেজনার আবহ তৈরি হয়েছে। বারাসত ১ ব্লকের তৃণমূল নেতা আরশাদুজ্জামান বলেন, “শ্রমিকেরা বেতন বৃদ্ধির কথা বলায় মালিক পক্ষ বলেছিল উৎপাদন বাড়াতে হবে। এই নিয়ে সমস্যা চলছিল। আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছি।” কদম্বগাছির ওই কারখানার প্রশাসক বাসুদীপ দাসের বক্তব্য, “অগস্ট মাস থেকে কাজ এক রকম বন্ধ রেখেই কারখানা কর্তৃপক্ষকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এ ব্যাপারে আমরা নেতৃত্বকে জানালেও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিইনি। কয়েক জনের জন্য বাধ্য হয়েই কারখানা বন্ধ করতে হল।” |