ট্রেনের টিকিট কাটতে গিয়ে গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়ে প্রহৃত হলেন এক শিক্ষক। ঝাউবোনা উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের ওই শিক্ষক রঞ্জিত সর্দারকে ‘চোর’ ভেবে গণপিটুনি দেয় স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা। সেই সঙ্গে দুষ্কৃতীদের ভোজালির আঘাতে ওই শিক্ষকের ঘাড়, হাতের আঙুল ও কব্জি ক্ষত বিক্ষত হয়ে গিয়েছে। বেলডাঙা থানার পুলিশ ওই শিক্ষককে বড়ুয়ার মোড়ে গণপ্রহার থেকে কোনও মতে উদ্ধার করে স্থানীয় ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তাঁকে বহরমপুর নিউ জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। মুর্শিদাবাদ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনাপ্পা ই বলেন, “ওই শিক্ষককে মারধর ও আক্রমণের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে।” বুধবার দুপুর দেড়টা নাগাদ রঞ্জিতবাবু কয়েক মিনিটের ব্যবধানে প্রথমে বেলডাঙা স্টেশনে ও দ্বিতীয় বার লাগোয়া বড়ুয়ার মোড়ে আক্রান্ত হন। গোবেচারা স্বভাবের রঞ্জিতবাবু বছর দেড়েক আগে বাংলার শিক্ষক হিসাবে এসএসসি মারফত নিযুক্ত হয়েছেন। তাঁর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসবা এলাকায়। তিনি স্কুলেরই একটি ঘরে থাকেন। এ দিন তিনি দোলের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন। রঞ্জিতবাবু বলেন, “বেলডাঙা স্টেশনের কাউন্টারের সবে টাকা জমা দিয়েছি, এমন সময় এক যুবক এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে কাউন্টারে হাত ঢোকানোর চেষ্টা করে। আমি তাকে বলি, ‘টিকিটটা নিয়ে নিই, তার পরে আপনি আসুন।’ ওই বাধা পেয়েই ক্ষিপ্ত যুবক আমাকে ঘুসি মারে। আমিও প্রতিরোধ করি।” তাতেই ওই যুবক প্ল্যাটফর্মে পড়ে যায়। সে তারপরে রঞ্জিতবাবুকে হুমকি দিয়ে চলে যায়। ওই হুমকিতেই ভয় পেয়ে রঞ্জিতবাবু স্টেশন চত্বর ছেড়ে বাস স্ট্যান্ডের দিকে চলে যান। রঞ্জিতবাবুর সহকর্মী শ্যামল সাহা বলেন, “রঞ্জিতবাবু একটু এগোতেই দু’টো মোটরবাইকে ৪ জন মিলে তাঁকে তাড়া করে। তারপরেই তাঁকে লক্ষ্য করে ‘চোর চোর’ বলে চিৎকার করলে তাঁকে গণপ্রহার সহ্য করতে হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।” |