পরিযায়ীদের ফেরাতে পূর্বস্থলীর পাখিরালয়ে ছাড়া হল চারাপোনা। এই উদ্যোগে সামিল হয়েছিলেন এক করাতকল মালিক ও এক জন চিকিৎসক। বুধবার দুপুরে পাখিরালয়ের জলাশয়ের বিভিন্ন ঘাট থেকে ছাড়া হল প্রায় ৩০ হাজার ‘গ্লাসকার্প’ প্রজাতির চারাপোনা।
পূর্বস্থলী পঞ্চায়েতের চুপি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে ছাড়িগঙ্গা। কয়েক বছর আগেও শীত পড়তেই সেখানে দেখা মিলত পরিযায়ী পাখিদের। আর গরম পড়তেই ফের তারা ফিরে যেত তাদের পুরনো আস্তানায়। জায়গাটি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে বছর আটেক আগে জেলা পরিষদ ছাড়িগঙ্গার পাড়ে একটি পাখিরালয় তৈরি করতে উদ্যোগী হয়। ধাপে ধাপে এই প্রকল্পে পিকনিকের জায়গা, ‘ওয়াচ টাওয়ার’, রাস্তা-সহ বিভিন্ন খাতে খরচ হয়ে যায় প্রায় কোটি টাকা। ধীরে ধীরে জায়গাটি জনপ্রিয় বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কয়েক বছর আগে থেকে ওই জলাশয়ে মাছ ধরতে শুরু করে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা। স্বভাবতই পূর্বস্থলীর জলাশয় থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করে পরিযায়ীরা। বাসিন্দাদের দাবি, গত তিন বছরে পাখির সংখ্যা সবথেকে বেশি কমেছে। |
পূর্বস্থলী স্টেশন এলাকার একটি করাতকলের মালিক সমীরচন্দ্র বিদ চারাপোনা ছাড়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হন। তিনি জানান, পাখিরালয়টি প্রথমে বন দপতরেরে নিয়ন্ত্রাধীন ছিল। বছর সাতেক আগে বন দফতরের বর্ধমান জেলা আধিকারিক ছিলেন রতন বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে অবশ্য তিনি কলকাতায় বদলি হয়ে যান। সমীরবাবু বলেন, “রতনবাবুই প্রথম উপলব্ধি করেন, ছাড়িগঙ্গায় মাছের সংখ্যা কমতে থাকা পরিযায়ীদের সংখ্যা ক্রমশ করছে।” রতনবাবুই তাঁকে চারাপোনা ছাড়ার ব্যাপারে উৎসাহ দিয়েছিলেন বলে জানান তিনি। সমীরবাবু আরও বলেন, “এর পরে আমার আলাপ হয় কৃষ্ণনগরের এক চিকিৎসক অনুপকুমার বসু মল্লিকের সঙ্গে। অনুপবাবুও ওই জলাশয়ে চারাপোনা ছাড়ার ব্যাপারে ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। ঠিক হয়, যৌথ উদ্যোগেই কাজটা করব। আশা করি, এ বার পরিযায়ী পাখিদের খাদ্যসঙ্কট কিছুটা হলেও মিটবে।”
পূর্বস্থলী পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান পঙ্কজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “পাখি ফেরাতে ওঁদের উদ্যোগ প্রশংসনীয়।” |