ধর্মঘটে গরহাজিরা
টিএমসিপির হুঁশিয়ারি, দলের ক্ষোভের মুখেও অটল ব্রাত্য
র্মঘটের দিন সরকারি কর্মীদের কাজে আসা, না-আসা নিয়ে ‘ভিন্ন মত’ পোষণ করে দল ও সরকারের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এর পরেও শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য নিজের অবস্থানে অনড়। যদিও তাঁর দলের ছাত্র সংগঠনও ওই দিন ‘অনুপস্থিত’ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছে তাঁকে।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি, ১১টি ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা ধর্মঘটের দিন ‘অনুপস্থিত’ রাজ্য সরকারি কর্মীদের কোনও ছুটি মঞ্জুর করা হবে না বলে নির্দেশিকা জারি করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দেন, “ধর্মঘটের দিন কাজে না এলে চাকরিতে ছেদ পড়তে পারে।” সরকারের এই অবস্থান যে কথার কথা নয়, তা বোঝাতে ধর্মঘটের পরেই জেলা ও বিভিন্ন দফতরে অনুপস্থিত কর্মীদের তালিকা তৈরির কাজে হাত দিয়েছে প্রশাসন।
ধর্মঘট নিয়ে সরকার এবং দলের যখন এই অবস্থান, তখন ভিন্ন মত পোষণ করে বিতর্ক উস্কে দেন শিক্ষামন্ত্রী। গত রবিবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে ব্রাত্যবাবু বলেন, “ধর্মঘটের দিন কর্মীরা কাজে আসতে পারেন, না-ও আসতে পারেন। ধর্মঘটের দিনে আসার এবং না-আসার অধিকার রয়েছে কর্মীদের।” পরের দিন দিল্লিতে একই সুরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “যা বলার বলে দিয়েছি। এই নিয়ে কিছু বলার থাকলে অচিরেই বলব। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েও বলব।” একই সঙ্গে তিনি জানান, তাঁদের মন্ত্রিসভায় কোথাও বিরোধ নেই। তবে অন্য স্বর থাকতেই পারে।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘর থেকে বেরোচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
মঙ্গলবার মহাকরণে সুমন বল্লভের তোলা ছবি।
শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য স্বভাবতই ভাল চোখে দেখেননি তাঁর দল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। মহাকরণের খবর, গত সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ব্রাত্যবাবুর বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কয়েক জন মন্ত্রী। মন্ত্রিসভার ওই বৈঠকে অবশ্য শিক্ষামন্ত্রী হাজির ছিলেন না। এই নিয়ে তিনিও যে অসন্তুষ্ট, ঘনিষ্ঠ মহলে তা বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রীও। তাঁর অসন্তোষের কথা ব্রাত্যবাবুর কানেও পৌঁছয়।
৫ মার্চ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে ধর্মঘটের দিন ‘অনুপস্থিত’ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়। শিক্ষামন্ত্রী এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশ না-দিলে পড়ুয়ারাও বেতন দেওয়া বন্ধ করে দেবে বলে চিঠিতে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীকে লেখা ওই চিঠির কথা জানিয়ে টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা মঙ্গলবার বলেন, “শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করব না। তবে আমাদের বক্তব্য, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সরকারি কোষাগার থেকে বেতন পান। ধর্মঘট করে তাঁরা যদি শিক্ষাদিবস নষ্ট করেন, তা হলে বেতন কাটাই উচিত।” এই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এ-রকম কোনও চিঠি আমার হাতে আসেনি। তাই এই নিয়ে মন্তব্য করব না।”
এ দিন মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একটি বৈঠকে যোগ দেন শিক্ষামন্ত্রী। পরে শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, ধর্মঘটের দিন সরকারি কর্মীদের কাজে আসা, না-আসা নিয়ে তিনি তাঁর বক্তব্যে অনড় আছেন কি? ব্রাত্যবাবু বলেন, “যা বলার আগেই বলেছি। এই নিয়ে আর কোনও মন্তব্য করব না।” মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে তাঁকে কিছু বলেছেন কি? ব্রাত্যবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অন্য বিষয়ে কথা হয়েছে। এই ব্যাপারে কোনও আলোচনা হয়নি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.