বস্তি উচ্ছেদে বাধা দেওয়ায় মহিলাদের মারধর ও নিগ্রহের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের কিছু লোকজনের বিরুদ্ধে। বর্ধমান শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। শ্লীলতাহানির অভিযোগে ওই মহিলারা প্রায় চার ঘণ্টা বর্ধমান থানায় বিক্ষোভ দেখান। শেষে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার সকালে। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আলমগঞ্জে একটি বন্ধ হয়ে যাওয়া চালকলের জমিতে দীর্ঘ দিন ধরে বাস করছেন কিছু মানুষজন। তাঁরা ওই চালকলেরই শ্রমিক-কর্মীদের পরিবারের সদস্য। ওই বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার তৃণমূলের কিছু লোকজন ওই জায়গায় নির্মাণ ব্যবসা শুরুর চেষ্টা করছেন। সে কারণে তাঁদের উঠে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা পার্বতী দাস, তরুলতা রাজবংশী, সকালি রাজবংশীদের অভিযোগ, এ দিন সকালে তৃণমুলের এক গোষ্ঠীর লোকজন বস্তি উচ্ছেদের জন্য এলে তাঁরা বাধা দেন। সে জন্য তাঁদের মারধর করা হয়। জামকাপড় ছিঁড়ে নিগ্রহও করা হয়। এলাকার অন্য বাসিন্দারা তেড়ে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। |
১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় গোস্বামী ও সভানেত্রী রিনা সিংহের অভিযোগ, “আমাদের দলেরই সীতারাম মুখোপাধ্যায়, শঙ্কর তুরি, ভীষ্মদেব সরকারদের নেতৃত্বে কুছু লোকজন বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে প্রোমোটারকে ওই জমি বিক্রির চেষ্টা করছেন। এলাকার বাসিন্দারা এই ঘটনার কথা জানালে আমরা প্রতিবাদও করি। এ দিন সকালে বস্তি উচ্ছেদের চেষ্টা হলে মহিলারা বাধা দেন। তখনই বাসিন্দাদের মারধর করা হয়েছে।”
এই ঘটনার পরেই প্রায় দেড়শো মহিলা বর্ধমান থানার সামনে বসে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানান তাঁরা। আইসি স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় সে সময় থানায় ছিলেন না। বিক্ষোভের খবর পেয়ে আইসি আসেন। তিনি আশ্বাস দেন, এলাকায় গিয়ে অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চালানো হবে। এর পরে বিকেল ৩টে নাগাদ বিক্ষোভ থামে।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত তথা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূলের কর্মচারী সমিতির নেতা সীতারাম মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “ঘটনার সময়ে আমি বাড়িতে ছিলাম। তার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যাই। তাই আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার কোনও সঙ্গী বা অনুগামীও এর সঙ্গে জড়িত নয়।” এলাকায় গিয়ে ঘটনায় অন্য অভিযুক্তদের খোঁজ মেলেনি।
বর্ধমানের তৃণমূল নেতা তথা দলের প্রদেশ সদস্য সুশান্ত ঘোষ বলেন, “আমি এখন বর্ধমানে নেই। তাই এই ঘটনা সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানি না। তবে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে তা দুঃখজনক। যদি আমাদের কেউ জড়িত থাকেন, তবে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত নিক।” |