|
|
|
|
ছাত্র আত্মঘাতী, স্কুলে তাণ্ডব গ্রামবাসীদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ভূপতিনগর |
প্রার্থনার লাইনে দাঁড়িয়ে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ‘উত্ত্যক্ত’ করার অভিযোগে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রকে বকাঝকা এবং মারধর করেছিলেন স্কুলের মাস্টারমশাইরা। অভিভাবককে ডেকে পাঠিয়ে স্কুল থেকে বিতারণেরও হুমকি দেওয়া হয়েছিল ছাত্রটিকে। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথই বেছে নেয় সুশান্ত মান্না (১৪) নামে ওই ছাত্র। আর তার জেরে শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর থানার কাজলাগড় মহারাজাধিরাজ স্যার বিজয়চাঁদ মেমোরিয়াল হাইস্কুলে হামলা চালালেন একদল গ্রামবাসী। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের মারধর থেকে শুরু করে কম্পিউটর-সহ স্কুলের আসবাবপত্র যথেচ্ছ ভাঙচুর করা হয়।
মৃত ছাত্রটির পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষক, দু’জন সহ-শিক্ষক এবং বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির
|
সুশান্ত মান্না। |
সম্পাদক-সহ মোট ৭ জনের নামে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে থানায়। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। এখনও কেউ গ্রেফতার হননি। প্রধান শিক্ষক-সহ অভিযুক্তরা একাংশ গ্রামবাসীর মারমুখী মেজাজের জেরে এলাকা ছাড়া হয়েছেন। সে কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্যও জানা যায়নি। স্কুলটিতে পঠনপাঠনও বন্ধ হয়ে যায় শনিবার। স্কুলে হামলার ঘটনাতেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। এই হামলার পিছনে তাদের প্রভাবিত পরিচালন সমিতির বিরুদ্ধে সিপিএমের একাংশের ‘আক্রোশ’ কাজ করছে বলে আবার অভিযোগ তৃণমূলের। যা অস্বীকার করেছে সিপিএম।
ভূপতিনগর থানার গড়বাড়ি-২ পঞ্চায়েত এলাকায় বাড়ি সুশান্তদের। বাবা শ্রমিক। সুশান্তর বোন আরতিও একই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। মান্না পরিবারের বক্তব্য, গত বুধবার স্কুলে এক ছাত্রীর চুল ধরে টানার অভিযোগ উঠেছিল সুশান্তর বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষক স্বদেশরঞ্জন প্রামাণিক সুশান্তকে অফিসঘরে ডেকে পাঠান। সেখানে হাজির ছিলেন দুই সহ-শিক্ষক মুকুল গায়েন ও স্বপন বেরা, করণিক সুব্রত জানা, পরিচালন সমিতির দুই সদস্য বিকাশ রায়, মৃন্ময় রায় এবং সম্পাদক শংকর প্রধান। সুশান্তর কাকা সুবলবাবুর অভিযোগ, “প্রথমে বকাঝকা এবং পরে ভাইপোকে মারধর করেন হেডস্যার এবং অন্যরা। বৃহস্পতিবার স্কুলে গেলে সুশান্তকে ফের মারধর করা হয়। বাড়ির লোককে স্কুলে আসতে বলা হয়।” শুক্রবার দুপুরের বদলে সকালে স্কুল ছিল। সুশান্ত স্কুলে যায়। যান সুবলবাবুও। ভাইপোকে স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে বলে তাঁকে জানানো হয়। আপাতত ক’দিন সুশান্তকে স্কুলে পাঠাতে নিষেধ করা হয়। বেলা ১১টা নাগাদ সুশান্ত স্কুল থেকে বাড়ি আসে। কিছু পরে একটি ঘরে গলায় গামছা জড়ানো ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ছেলেটির। সে সময়ে বাড়িতে অন্য কেউ ছিলেন না। কর্মসূত্রে বাবা লালমোহন এবং মা পূর্ণিমা ছিলেন ওড়িশার জলেশ্বরে। রাতেই তাঁরা গড়বাড়ি ফেরেন। বিকেলেই অবশ্য সুবলবাবু প্রধান শিক্ষক-সহ ৭ জনের নামে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেন থানায়।
লালমোহনবাবুর আক্ষেপ, “ছাত্র ভুল করলে শিক্ষকরা নিশ্চয়ই শাস্তি দেবেন। তা বলে এ ভাবে সাত জনে মিলে মারধর করবেন কেন? আর স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়াটাই কি সমাধান! যাদের জন্য ছেলেকে হারালাম, তাদের কঠিন শাস্তি চাই।” স্কুলে ভাঙচুর, শিক্ষকদের মারধরের ঘটনায় আবার একাংশ গ্রামবাসীর ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, শিক্ষাঙ্গনে এমন তাণ্ডব কোনও মতেই মেনে নেওয়া যায় না। |
কর-ফাঁকি, ধৃত ঠিকাদার
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কর-ফাঁকির অভিযোগে শুক্রবার রাতে গড়বেতা থানার চন্দ্রকোনারোড থেকে রাম পাল নামে পশ্চিম মেদিনীপুরের এক ‘প্রভাবশালী’ ঠিকাদারকে গ্রেফতার করল সিআইডি। শনিবার ধৃতকে মেদিনীপুর আদালতে হাজির করা হলে ৭ দিন সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ হয়। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহখানেক আগে গড়বেতা থানায় রামবাবুর বিরুদ্ধে ‘ভ্যালু-অ্যাডেড ট্যাক্স’ (ভ্যাট) ফাঁকির অভিযোগ দায়ের করেছিল বাণিজ্যকর দফতর। সিআইডি সূত্রের দাবি, দাসেরবাঁধ কঙ্কাল-কাণ্ডে অভিযুক্ত, আপাতত জামিনে মুক্ত প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’ ছিল রামবাবুর। সেই সূত্রে ওই ঠিকাদার প্রাক্তন মন্ত্রীকে দাসেরবাঁধ-কাণ্ডে কোনও ভাবে সাহায্য করেছিলেন কি না, বিনিময়ে সরকারি কাজের বরাত পাওয়ার ব্যাপারে নিজে বিশেষ ‘সুবিধা’ পেয়েছিলেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা বলে বলে জানিয়েছে সিআইডি। |
|
|
|
|
|