কোথাও দোকানপাট-বাজার বন্ধ, কোথাও সবই খোলা। জনজীবন কোথাও প্রায় স্তব্ধ, আবার কোথাও পুরোপুরি স্বাভাবিক। বাঁকুড়া-পুরুলিয়া জেলা জুড়ে বন্ধের এমনই মিশ্র প্রভাব পড়েছে বাঁকুড়ায়। তবে এ দিন খাতড়া ব্লকের সুপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাজিরার তালিকা লিখিত ভাবে দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে এবং এক মহিলা শিক্ষাকর্মীকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের সুপুর অঞ্চল সভাপতি মহাদেব গিরি-সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করায় ১ ঘণ্টা ২২ জন শিক্ষক, ৮ জন পার্শ্বশিক্ষক, ৪ জন শিক্ষাকর্মীকে তালাবন্দি করে রাখা হয়। প্রধান শিক্ষক রাজেন্দ্রনাথ পাত্রের দাবি, “অনিমেশ বন্দ্যোপাধ্যায় ও নিমাই দাস নামে দু’জন তৃণমূল কর্মী পরিচয় দিয়ে শিক্ষকদের উপস্থিতির তালিকা লিখিত ভাবে জানতে চায়। এর পরে ঢুকে পড়ে মহাদেব গিরি। জনাদশেক লোক আমাকে অন্য শিক্ষকদের অশ্লীল কথা বলেন। চুলের মুঠি ধরে ওরা আমাকে মারে। এক শিক্ষাকর্মীকেও মারা হয়।” যদিও অভিযুক্ত ওই নেতা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি পাল্টা মারের অভিযোগ করেন। এ ছাড়া, রাইপুরের একটি স্কুলে প্রধান শিক্ষক না আসায় অন্য শিক্ষকেরা হাজিরা খাতায় সই করতে পারেননি বলে অভিযোগ। |
হাতে গোনা কয়েকটি সরকারি বাস চললেও বাঁকুড়া জেলায় বেসরকারি বাস চলেনি। বড়জোড়া, মেজিয়া-সহ অন্য শিল্পতালুক খোলা থাকলেও কর্মীদের হাজিরা কম ছিল। বন্ধের ভাল প্রভাব পড়েছে খাতড়া, রানিবাঁধ, রাইপুর, সারেঙ্গা এলাকায়। জেলা পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, “মেজিয়া, সিমলাপাল, বড়জোড়া থেকে ৮ জনকে আটক করা হয়েছিল। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কোথাও বড় গণ্ডগোল হয়নি।”
অন্য দিকে, ধর্মঘটকে ঘিরে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া, অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই পুরুলিয়ায়। বরাবাজারে সিপিএমের দলীয় কার্যালয় থেকে তাদের মিছিলের উপরে ঢিল ছোড়া হয়েছে এই অভিযোগে ওই অফিস তিন ঘন্টা ঘেরাও করে রেখেছিল তৃণমূল। বান্দোয়ানের চিরুডি গ্রামে সিপিএম সশস্ত্র মিছিল বের করেছিল বলে অভিযোগ। সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম। এ ছাড়া, রঘুনাথপুরের নতুনডি-কলাগড়া গ্রামে মাদ্রাসা খোলাকে কেন্দ্র করে বিবাদ হয় সিপিএম-তৃণমূলের। স্কুলে, পঞ্চায়েত, ডাকঘরে তালা বন্ধ থাকায় উত্তেজনা ছড়ায় কাশীপুর, হুড়া, সাঁতালডিহি, রঘুনাথপুর-২, বান্দোয়ান, বরাবাজার ব্লকে এবং পুরুলিয়া শহরে সিপিএমের প্রধান তালা দিয়ে চলে যাওয়ায় বান্দোয়ান-বানজোড়া পঞ্চায়েতে ঢুকতে পারেনি কর্মীরা। জেলা পোস্টাল সুপার বিধান আচার্যের উপস্থিতিতে জেলা ডাকঘরের মূল দরজা তালা ভাঙা হয়।
এই রকম দু’একটি ঘটনা ছাড়া, জেলায় বেসরকারি যানবাহন চলেনি। সরকারি দফতর গুলিতে কর্মীদের হাজিরা স্বাভাবিক থাকলেও পুরুলিয়া শহর, আদ্রা, মানবাজার-সহ বিভিন্ন ব্লকে বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ ছিল। তবে সন্ধ্যায় দোকানপাট খুলেছে। বন্ধের কোনও প্রভাব পড়েনি রেল চলাচলে, শিল্পাঞ্চলে। পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী জানান, এ দিন ঝালদায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। |