হাজিরা ভাল হলেও বন্ধ কাটল ‘কর্মহীন’ ভাবেই
বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বন্ধ মোটের উপর শান্তিপূর্ণ ছিল। রাস্তায় বেরিয়ে সরকারি বাস চোখে পড়লেও বেসরকারি বাসের সংখ্যা ছিল অন্য দিনের তুলনায় কম। কম ছিল অটোও। তবে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, সরকারি দফতরে হাজিরা সংখ্যা ছিল ভালই। অনেকে আগের রাত থেকেই অফিসে থেকে গিয়েছিলেন। তবু বহু জায়গায় স্কুল-কলেজে শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীরা হাজির থাকলেও ছাত্রছাত্রীরা ছিল না। বনগাঁর পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে অবশ্য অন্য দিনের মতোই এ দিন আমদানি-রফতানির কাজ হয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় বাটার মোড়ের কাছে এ দিন বন্ধে অটো বের করায় এক অটোচালককে বন্ধ সমর্থকেরা মারধর করে বলে অভিযোগ। এ ছাড়া এক ট্রাকচালক ও খালাসিকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বনগাঁ, গাইঘাটা, হাবরা, অশোকনগরে বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ ছিল। বাণিজ্য সচল ছিল পেট্রাপোল বন্দরেও। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, “স্থানীয় বন্ধেও এর আগে বন্ধ থাকত বহির্বাণিজ্য। সে দিক থেকে এদিন দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল।”
বনগাঁর মহকুমাশাসক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “এদিন দফতরে হাজিরা ছিল প্রায় ৯০ শতাংশ। বনগাঁয় বনধ সমর্থকেরা এক অটোচালক এবং এক ট্রাকচালক ও খালাসিকে মারধর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। হাবরায় বন্ধবিরোধীরা বাস না চালানোর জন্য কয়েকটি বাসের চাকার হাওয়া খুলে দেয়। অশোকনগরে বন্ধ সমর্থকরা একটি অটোয় ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ।
বনধ চিত্র। ছবি তুলেছেন দিলীপ নস্কর।
এ দিন বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখায় সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঠাকুরনগর, চাঁদপাড়া, বনগাঁ, অশোকনগর প্রভৃতি স্টেশনে বন্ধ সমর্থকেরা রেল অবরোধ করেন। ফলে বিঘ্নিত হয় রেল চলাচল। জোর করে রেল আটকানোর অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে রেলপুলিশ।
বসিরহাট মহকুমাতেও বন্ধে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন স্টেশনে রেল অবরোধ যেমন হয়েছে, তেমনই বেশ কয়েকটি জায়গায় রাস্তার অবরোধের জেরে ব্যাহত হয় যান চলাচল। বন্ধকে কেন্দ্র করে কয়েকটি জায়গায় বন্ধ সমর্থক ও বন্ধবিরোধীদের মধ্যে বচসা, ধাক্কাধাক্কি হয়। বড় ধরনের গোলমাল যাতে না ঘটে সে জন্য এ দিন সকাল থেকেই এসডিপিও আনন্দ সরকারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী রাস্তায় টহল দেয়। মহকুমা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেন ও রাস্তা অবরোধের জন্য ৬৬ জন বন্ধ সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ মহকুমায় বন্ধে মিশ্র প্রভাব দেখা গিয়েছে। সকালে দিকে সরকারি, বেসরকারি বাসের দেখা মিললেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সংখ্যা কমেছে। বাস চলাচল করলেও যাত্রী ছিল প্রায় না থাকারও মতো। দোকানপাট বহু জায়গায় বন্ধ ছিল। স্কুল-কলেজ থোলা থাকলেও বহু জায়গাতেই ছাত্রছাত্রীরা হাজির ছিল না। তবে সরকারি দফতরগুলিতে হাজির ছিল ভালই। ফলতা অর্থনৈতিক অঞ্চলে সমস্ত কারখানা খোলা তাকলেও কর্মীর হাজিরা ছিল কম। ফেরি সার্ভিস চালু থাকলেও যাত্রীসংখ্যা কম ছিল।
ক্যানিংয়ে সকাল থেকেই দোকানপাট, বাজার বন্ধ ছিল। রাস্তায় যান চলাচল ছিল অন্য দিনের তুলনায় কম। বাসন্তী, ঝড়খালি, জীবনতলা, হেড়োভাঙা এলাকায় অটো, ট্রেকার, বাস না চলায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। ক্যানিং রেল স্টেশনে টিকিট কাউন্টারে অন্য দিনের তুলনায় এ দিন যাত্রীদের ভিড় ছিল অনেক কম। সরকারি দফতরগুলিতে অবশ্য হাজিরা ছিল অন্য দিনের মতোই। অনেকে আগের রাত থেকেই দফতরে থেকে গিয়েছিলেন। বন্ধ ঘোষণা হলেও এ দিন সুন্দরবনে বেড়াতে গিয়েছেন বিদেশি পর্যটকেরা। পুলিশ পাহারায় তাঁদের ঘোরানো হয়। তবে বড় কোনও গোলমাল না ঘটলেও এ দিন বিভিন্ন ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.