|
|
|
|
কর্মীসংখ্যা কম হলেও অফিস খোলা পূর্বে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
রাজনৈতিক পালাবদলের পরে বামেদের ডাকা ধর্মঘটের দিনে কার্যত সচলই রইল হলদিয়া শিল্পাঞ্চল। এমনকী ধর্মঘটের সমর্থনে কল-কারখানার সামনে মিছিল করতে বা স্লোগান দিতেও দেখা গেল না সিটু কর্মী-সমর্থকদের। স্বাভাবিক উৎপাদনেও বিশেষ বাধা পড়েনি। জেলার অন্যত্রও সরকারি অফিস বা স্কুল-কলেজ খোলা ছিল। তবে, কর্মীদের উপস্থিতির হার ছিল কম। আর পাঁচটা ধর্মঘটের মতো এ দিনও রাস্তায় বাস-গাড়ি চলেনি।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি বলেন, “জেলার সরকারি অফিসে গড় উপস্থিতির হার ৮৯ শতাংশ। অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে।” |
|
এগরা শহরে খোলা বাজার-হাট। ছবি তুলেছেন কৌশিক মিশ্র |
বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা দেশব্যাপী ধর্মঘটে জনজীবন স্বাভাবিক রাখাটা ছিল তৃণমূল রাজ্য সরকারের কাছে চ্যালেঞ্জ। মঙ্গলবার হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের কল-কারখানায় অধিকাংশ শ্রমিকের উপস্থিতি, সরকারি অফিসে হাজিরার হার তৃণমূল নেতাদের আশ্বস্ত করেছে। নন্দীগ্রাম নিখোঁজ-কাণ্ডের জেরে ফেরার হয়ে থাকা সিপিএম নেতা লক্ষ্মণ শেঠের অনুপস্থিতিতে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে সিটু সমর্থকদের এই নীরবতা দলের অন্দরেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রেও ধর্মঘটের সমর্থনে সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি সিটু সমর্থকদের। সকালে গুটিকয়েক সিটু সমর্থক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে কয়েকজন কর্মীকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেন। সেই খবর পেয়ে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হতেই পিছু হঠেন সিটুর লোকজন। যদিও হলদিয়া শিল্পাঞ্চল-সহ পুরো জেলায় ধর্মঘটে বিপুল সাড়া পড়েছে বলে দাবি করেন সিটুর জেলা সভাপতি নির্মল জানা। তাঁর দাবি, “রাজ্য সরকারের হুমকি সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ ধর্মঘট সমর্থন করেছে। পরিবহণ শ্রমিক-ডাক-ব্যাঙ্ক-বিমা কর্মীরা ধর্মঘট সফল করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে।” সিটু নেতার দাবি উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেন বলেন, “সরকারি অফিসে কর্মীদের উপস্থিতির হার ছিল স্বাভাবিক। বেসরকারি বাস চলাচল বন্ধ থাকায় কিছুটা অসুবিধা হয়েছে। তবে, ধর্মঘট সম্পূর্ণ ব্যর্থ।” |
|
তমলুকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনিক ভবনের নির্বাচনী দফতর প্রায় ফাঁকা। ছবি তুলেছেন পার্থপ্রতিম দাস। |
এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসনিক ভবন, জেলা পরিষদ-সহ সমস্ত সরকারি অফিসই খোলা ছিল। তবে, তমলুক প্রধান ডাকঘর-সহ ব্যাঙ্কগুলি বন্ধ ছিল। স্কুল-কলেজে শিক্ষকেরা এলেও ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ছিল কম। অধিকাংশ রাস্তায় বাস-গাড়ি চলাচল করেনি। সকালের দিকে বিক্ষিপ্ত ভাবে হলদিয়া-মেচেদা ও তমলুক-পাঁশকুড়া সড়কে বেসরকারি বাস চলাচল শুরু হলেও পরে যাত্রী না থাকায় তা বন্ধ হয়ে যায়। বেশ কিছু রুটে ট্রেকার, মোটরচালিত ভ্যান চলে। দিঘা-কলকাতা, হলদিয়া-মেচেদা সড়কে সরকারি বাস চলেছে। হাওড়া-খড়্গপুর, হলদিয়া-পাঁশকুড়া ও তমলুক-দিঘা শাখায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
জেলা সদর তমলুক-সহ হলদিয়া, কাঁথি ও এগরা শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল এ দিন। বেলা বাড়লে অবশ্য কিছু দোকান খোলে। তবে, ক্রেতা ছিল না বললেই চলে। মেচেদা, চণ্ডীপুর, পটাশপুর বাজারে অধিকাংশ দোকানপাট খোলা ছিল। |
|
|
|
|
|