বিরাটের দক্ষযজ্ঞে ফাইনালের স্বপ্ন
চাপের মুখে ওয়ান ডে-র অন্যতম সেরা ইনিংস
ন্ধেটা যে এত নাটকীয় হবে, দুপুরে তার কোনও আভাসই পাওয়া যায়নি। তখন ভারতীয় বোলিং আর ফিল্ডিং দেখে মনে হচ্ছিল, দলটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশের বিমানে উঠতে চায়। বরং শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ে মারকাটারি মনোভাবটাই দেখছিলাম।
বিরাট কোহলিকে দুর্দান্ত বললেও কম বলা হয়। এ রকম পরিস্থিতিতে আসা ওয়ান ডে ইনিংসের মধ্যে অন্যতম সেরা ওর ১৩৩ নট আউট। হোবার্টের উইকেট পাটা হলেও দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল ভারতের। প্রতি ওভারে আট রান দরকার, এই অবস্থায় কোহলির ইনিংস ভীষণ স্পেশ্যাল।
সারা গ্রীষ্ম ভারতীয় ব্যাটিংয়ের যা ছবি দেখে এসেছি, তাতে ম্যাচের মোড় ঘুরবে বলে মনেই হয়নি। বীরেন্দ্র সহবাগ যখন প্রথম থেকে আক্রমণ করছিল বা সচিন পরপর বাউন্ডারি মারছিল, তখনও মনে হচ্ছিল রবিবারের কোনও চ্যারিটি ম্যাচ দেখছি। গৌতম গম্ভীর ক্রিজে জমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছবিটা পাল্টাতে শুরু করল। গম্ভীরকে খুব ভাল সঙ্গ দিচ্ছিল বিরাট কোহলি। অযথা ঝুঁকি না নিয়েই দু’জনে রান তুলে যাচ্ছিল। সিরিজে ভারতকে প্রথম সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ ওরা এনে দিল। এর পর থেকে প্রতি মুহূর্তে যেন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ শ্রীলঙ্কার হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়া শুরু করল।
ছবি: এএফপি
দেখে খুব অবাক লাগল যে শ্রীলঙ্কা ওই সময় লাসিথ মালিঙ্গাকে দিয়ে বল করাল না। ভারত ক্রমশ লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কা সবচেয়ে বিষাক্ত অস্ত্র ব্যবহার করবে না? মানছি ওর প্রথম চার ওভারে মালিঙ্গা ৪৩ রান দিয়েছিল। তবুও দলের যখন উইকেট দরকার তখন মালিঙ্গা ছাড়া আর কারও কথা ভাবা যায় না। তার উপর ওরা ২৮তম ওভারে বোলিং পাওয়ার-প্লে নিল। মানে যে ১২ ওভারে রান তুলে বোনাস পয়েন্ট পাওয়ার দৌড়ে ছিল ভারত, তার মধ্যে দশ ওভারই শ্রীলঙ্কার বোলার এবং ফিল্ডাররা প্রচণ্ড চাপে ছিল।
শেষমেশ ৩০তম ওভারে মালিঙ্গা বল করতে এলো। ততক্ষণে জয়ের বেশ কাছে চলে এসেছে ভারত। স্টাম্পের নীচে তাক করা ওর বলগুলো একটাও জায়গায় পড়ল না। অন্য দিক থেকে বল করতে আসা কুলশেখরাও কিছু করতে পারেনি। ওদের দুটো ওভারে এলো ৩৩ রান আর বোনাস পয়েন্ট-সহ জয়ের খুব কাছে চলে এলো ভারত। গম্ভীর আউট হওয়ার পরেও কোহলিকে নড়ানো যায়নি। সফরের একেবারে শেষ দিকে এসে মনে হল রায়নাও কিছুটা প্রভাব ফেলতে চায়।
বেচারা দিলশান। এই নিয়ে দু’বার ১৬০ রানের ইনিংস খেলল ও। আর দু’বারই শ্রীলঙ্কা জেতার সুযোগ পেয়েও সেটা হাতছাড়া করল। সিরিজে কুমার সঙ্গকারার প্রথম ভাল ইনিংসও কোনও কাজে এলো না।
মঙ্গলবারের জয় ভারতকে তাতিয়ে রাখবে। বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা রক্তের গন্ধ পেয়ে গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া যদি মেলবোর্নে শ্রীলঙ্কাকে হারাতে পারে, এই গ্রীষ্মের দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আবার মুখোমুখি হবে। এই সফর থেকে অন্তত কিছু ইতিবাচক জিনিস নিয়ে ফেরার একটা শেষ সুযোগ পাবে ধোনিরা। মনমরা হয়ে থাকার সব রকম কারণ শ্রীলঙ্কার আছে। কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা দিনে ওরা সব পণ্ড করে দিল। সত্যি, ক্রিকেট কী নিষ্ঠুর খেলা!

রান তাড়া করে
ভারতের সেরা পাঁচ
• ৩২৬-৮ বনাম ইংল্যান্ড, লর্ডস ’০২
• ৩২৫-৫ বনাম ও.ইন্ডিজ, আমদাবাদ ’০২
• ৩২১-৫ বনাম নিউজিল্যান্ড, বেঙ্গালুরু ’১০
• ৩২১-৩ বনাম শ্রীলঙ্কা, হোবার্ট ’১২
• ৩১৭-৮ বনাম ইংল্যান্ড, ওভাল ’০৭

বিরাট কোহলি, জীবনের সেরা ইনিংসটা খেললে...এমন সময় যখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে, হার এবং ছিটকে যাওয়ার চাপ রয়েছে, আর তুমি জিতলে। টুইটারে

হোবার্টের স্কোর

শ্রীলঙ্কা:
জয়বর্ধনে ক সহবাগ বো জাডেজা ২২
দিলশান ন.আ. ১৬০
সঙ্গকারা বো প্রবীণ ১০৫
পেরেরা রান আউট ৩
ম্যাথেউজ ক অশ্বিন বো জাহির ১৪
চণ্ডীমল ন.আ. ২
অতিরিক্ত ১৪,
মোট ৫০ ওভারে ৩২০-৪।
পতন: ৪৯, ২৪৯, ২৭৯, ৩০৯।
বোলিং: জাহির ৯-০-৬১-১, প্রবীণ ৯-০-৬৪-১, উমেশ ৮-০-৫৬-০,
জাডেজা ৯-০-৪৩-১, অশ্বিন ১০-০-৫২-০, সহবাগ ৩-০-২৪-০, রায়না ২-০-১৭-০।

ভারত:
সহবাগ ক দিলশান বো মাহরুফ ৩০
সচিন এলবিডব্লিউ মালিঙ্গা ৩৯
গম্ভীর রান আউট ৬৩
বিরাট ন.আ. ১৩৩
রায়না ন.আ ৪০
অতিরিক্ত১৬,
মোট ৩৬.৪ ওভারে ৩২১-৩।
পতন: ৫৪, ৮৬, ২০১।
বোলিং: মালিঙ্গা ৭.৪-০-৯৬-১, কুলশেখরা ৮-০-৭১-০,
মাহরুফ ৩-০-২১-১, পেরেরা ৭-০-৫৯-০, ম্যাথেউজ ৭-০-৪৪-০, হেরাথ ৪-০-২০-০।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.