|
|
|
|
অঘোষিত বন্ধ ত্রিপুরায়, পূর্বাঞ্চলে মিশ্র প্রভাব |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা ২৪ ঘন্টার শিল্প ধর্মঘটে আজ দেশের পূর্বাঞ্চলে মিশ্র প্রভাব পড়েছে। ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে মূলত শান্তিপূর্ণভাবেই ধর্মঘট পালিত হয়েছে। তবে জনজীবন সর্বত্রই ব্যাহত হয়েছে।
শিল্প ধর্মঘট পুরোপুরি বন্ধের চেহারা নেয় দেশের একমাত্র বামশাসিত রাজ্য ত্রিপুরায়। রাজ্যের সর্বত্রই দোকানপাট, হাটবাজার, স্কুল-কলেজ, সরকারি-বেসরকারি অধিকাংশ অফিস-কাছারি বন্ধ ছিল। রাস্তাঘাট ছিল শুনশান। পুলিশের গাড়ি ছাড়া সকালের দিকে রাস্তায় অন্যান্য গাড়িঘোড়া চোখেই পড়েনি। রাজ্যবাসী আজকের দিনটি ‘ছুটি’-র দিন হিসেবে পালন করায় রাজ্যে বন্ধ হয়েছে সর্বাত্মক। আগরতলায় বিমান চলাচলও বিঘ্নিত হয়েছে। সকালের দিকে অধিকাংশ উড়ানই বাতিল হওয়ায় অসুবিধায় পড়েছেন যাত্রীরা। আটকে পড়া যাত্রীদের জন্য আগামীকাল বিশেষ ব্যবস্থা করছে কয়েকটি বেসরকারি বিমানসংস্থা। |
শিল্প ধর্মঘট। শুনশান ঝরিয়া কোলিয়ারি, বন্ধ উৎপাদন। ছবি: চন্দন পাল |
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বিলগ্নিকরণ বন্ধ করা, শ্রম আইন কার্যকর করা ইত্যাদি ১০ দফা দাবিতে ডাকা এই ধর্মঘটে ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, অসমে ছিল মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সর্বত্রই খনি ও শিল্পাঞ্চলগুলিতে ধর্মঘট পালিত হয়েছে। দূরপাল্লার বাস চলাচল প্রায় বন্ধই ছিল। কোথাও কোথাও বিঘ্নিত হয়েছে রেল চলাচলও। আজ সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় আর্থিক লেনদেনের কোনও সুযোগ ছিল না। ফলে বহু জায়গায় ব্যবসায়ীরাও ব্যবসা বন্ধ রাখেন। ইস্পাতনগরী জামশেদপুরের বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানে কাজকর্ম হলেও এলাকার ছোট শিল্প সংস্থাগুলির ঝাঁপ এ দিন বন্ধ ছিল বলেই পুলিশ জানিয়েছে।
বন্ধের মিশ্র প্রভাব দেখা গিয়েছে কয়লাখনি অঞ্চলেও। সিপিএম নেতা প্রকাশ বিপ্লব রাজ্যের খনি অঞ্চলে স্বতস্ফুর্ত বন্ধ হয়েছে বলে দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, এ দিন রাজ্যের ৭৫-৮০ শতাংশ খনিশ্রমিক কাজে যোগ দেননি। ধর্মঘটের সমর্থনে কাজে অনুপস্থিত ছিলেন রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারি দফতরের প্রায় ৭৫ শতাংশ কর্মীও। এ দিন রাজধানী রাঁচি-সহ রাজ্যের প্রায় সর্বত্রই যাত্রী পরিবহণে অটোই ছিল মূল ভরসা। চলেছে রাঁচি নগর নিগমের যাত্রী পরিষেবার বাসও। তবে দূরপাল্লার বাস চলেনি। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে রাজ্য পুলিশের মুখপাত্র রাজকুমার মল্লিক জানিয়েছেন। |
ধর্মঘট যেখানে বন্ধ। জনশূন্য আগরতলার রাজপথ। বন্ধ দোকানপাট। ছবি: উমাশঙ্কর রায়চৌধুরী |
তবে কংগ্রেস শাসিত রাজ্য অসমে বন্ধের জেরে কার্যত থমকেই যায় জনজীবন। বন্ধ ছিল ব্যাঙ্ক, স্কুল-কলেজ, অধিকাংশ দোকানপাট। গুয়াহাটির ব্যস্ততম এলাকা ফ্যান্সিবাজার সকাল থেকে ছিল জনহীন। বিমান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও অবরোধের জেরে সকালে বেশ কিছুক্ষণ ট্রেন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। বাস, গাড়ির অভাবে নাকাল হন ট্রেন যাত্রীরা। সকাল সাতটা থেকে সাড়ে আটটা অবধি সিটু সমর্থকরা লাখটুকিয়ায় রেললাইন অবরোধ করেন। পরে রঙিয়াতেও রেল অবরোধ হয়। এর জেরে গুয়াহাটি-নিউ বঙাইগাঁও প্যাসেঞ্জার ট্রেন দেড় ঘণ্টা ও কামরূপ এক্সপ্রেস এক ঘণ্টা আটকে থাকে। দেরিতে ছাড়ে নর্থ ইস্ট এক্সপ্রেস। |
|
|
|
|
|