হকিতে নতুন সূর্যোদয়
ধোনিদের ব্যর্থতার দিনেই অলিম্পিক ছাড়পত্র হকিতে
ভারত-৮
ফ্রান্স-১
কটা দল অন্দরে-বাইরে বিতর্ক এবং হারে বিপর্যস্ত। আর একটা দল আট বছর বাদে দুর্দান্ত ভাবে জিতে আবার অলিম্পিকে যাওয়ার ছাড়পত্র পেল।
দু’টি দলেরই নাম ‘ভারত’। প্রথমটি ক্রিকেট টিম, যে দলের ভিতরের অজস্র চোরাস্রোত মাঝে মাঝেই বেরিয়ে পড়ছে লাভা স্রোতের মতো। যার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না সচিন তেন্ডুলকরও। দ্বিতীয়টি হকির, জেতার পর আজ যে দলের মূল তারকা সন্দীপ সিংহ পুরো কৃতিত্বটাই দিলেন ‘দলীয় সংহতিকে’। বুঝিয়ে দিলেন, সাফল্যের চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে তাঁদের সুখী সংসারে। এই মুহূর্তে যেটার সব থেকে বেশি অভাব মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দলে।
এবং তাই সিডনিতে টিম ইন্ডিয়ার আর একটি লজ্জাজনক হারের দিনে দিল্লিতে ফের উজ্জ্বল হয়ে উঠল হকি, চার বছর আগে বেজিং অলিম্পিকে যেতে না পারার দুঃখ ভুলিয়ে লন্ডন অলিম্পিকের টিকিট পেয়ে।
চক দে
আট গোলে আট বছর পর মূলপর্বে। নয়াদিল্লিতে রবিবার জয়ের পরে।
রবিবার সন্ধ্যায় ধ্যানচাঁদ হকি স্টেডিয়ামে প্রি-অলিম্পিক হকির ফাইনালে তেরঙায় মোড়া হাজার হাজার দর্শকের চিৎকারে ফের যেন জাতীয় খেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেল হকি। মাঠে ফ্রান্সকে ৮-১ গোলে পর্যুদস্ত করল ভারত। বস্তুত, এই টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলে সব ক’টি ম্যাচ জিতেছে তারা। আর মূলত যাঁর স্টিকের জোরে অলিম্পিকে ফিরল দল, সেই সন্দীপ সিংহের প্রতিক্রিয়া, “অলিম্পিকে ফিরতে পেরে ভাল লাগছে।” রবিবারও ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কারটা ঢুকেছে তাঁর বাড়িতে। ঢুকেছে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারও। ফাইনালের পাঁচটি-সহ টুর্নামেন্টে মোট ১৬ গোল এই ড্র্যাগ-ফ্লিক বিশেষজ্ঞের (সব পেনাল্টি কর্নারে)। এক কথায় সন্দীপ জানিয়ে দিলেন, এই জয়ের পুরো কৃতিত্বই দলের সকলের। আর এখানেই, সন্দীপ-শিবেন্দ্রদের স্টিকের কাছে হেরে গেলেন ধোনিরা।
দিল্লিতে সন্দীপদের খেলা দেখতে এসেছিলেন ’৭৫-এর বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক অজিত পাল সিংহ। তিনি বললেন, “গত সাত আট বছর হকি যেন গলিতে ছিল। এ বার রাজপথে এল।” জাফর ইকবাল, অশোক কুমাররাও খুশি ভারতের উজ্জীবিত হকি দেখে। পারগত সিংহ পাটিয়ালা থেকে বললেন, “আজ ৮ গোলে জেতা দেখে এশিয়াডে ৭ গোলে হারার দুঃখ মীররঞ্জন নেগি এখন ভুলতে পারেন।”
দিল্লিতে ভারতীয়দের উচ্ছ্বাস
রোটেশন পদ্ধতির জন্য (বিবিধ বিতর্কের পরে যে পদ্ধতি এর মধ্যে ছাড়তে বাধ্য হয়েছে ক্রিকেট দল) অধিনায়ক ভরত ছেত্রীকে বাদ দিয়ে নেমেছিল ভারত। আড়াই মিনিটেই পেনাল্টি কর্নার আদায় করা থেকে প্রাধান্য বিস্তার শুরু করেছিলেন সুনীল-শিবেন্দ্ররা। তাতে গোল না পেলেও সেই মেজাজটা বজায় ছিল পুরো ৭০ মিনিটই। বীরেন্দ্র লাকরার প্রথম গোলের পর লাগাম ধরলেন সন্দীপ সিংহ। এক-একটি পেনাল্টি কর্নার আদায় করছিলেন ভারতের স্ট্রাইকাররা, আর সেটি কাজে লাগাতে উঠে আসছিলেন সন্দীপ। ছ’টি পেনাল্টি কর্নারের পাঁচটিতেই সফল।
যাঁর কোচিংয়ে এই সাফল্য এল, সেই অস্ট্রেলীয় মাইকেল নবস বলছিলেন, “সন্দীপ অবশ্যই দুর্দান্ত। তবে দলটার মেরুদণ্ড সর্দার সিংহ। এত দিন চিন্তা ছিল লন্ডনের যোগ্যতা অর্জনের। এ বার অন্য চিন্তা শুরু হল। লন্ডনে কিন্তু অনেক ভাল দল। আজকের রাতটাই ওদের ছুটি দিচ্ছি। তার পরে বড় দলের সঙ্গে প্র্যাক্টিস করতে হবে।” অধিনায়ক ভরত ছেত্রী বলছিলেন, “রোটেশনের ভিত্তিতেই আমি খেলিনি। এক দিন আমি, এক দিন শ্রীজেস খেলছি। আমাদের লন্ডনে খেলতে হবে নীল রঙের টার্ফে। ওই টার্ফ খুঁজে প্র্যাক্টিস করতে হবে।”
আপাতত নতুন স্বপ্ন ভারতীয় হকি তারকাদের চোখে।

ছবি: পি টি আই




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.