সম্পাদক সমীপেষু...
নিয়ম-বেনিয়মের তরজা
প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বেনিয়মের ঘটনাটি জনসমক্ষে আনার জন্য (২২-১)। সেই সঙ্গে ক্ষোভও জানাই, বিষয়টি একতরফা পেশ করার জন্য। তৎকালীন ডিন হিসেবে আমার থেকেও তথ্য নিতে পারতেন সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক। এই সংবাদে প্রকাশিত উপাচার্য অলোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘এডুকেশন বিভাগের তৎকালীন ডিনের নিজের পছন্দের এক প্রার্থী ছিলেন’ এই অসত্য অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ করছি। আমার পদত্যাগ এবং প্রার্থী নির্বাচনের দিন ইন্টারভিউ বোর্ডের যে বিবরণ উনি দিয়েছেন, তা বিকৃত।
২০০৭ ও ২০০৮ সালে এডুকেশন বিভাগের তিনটি লেকচারার পদের (একটি সংরক্ষিত) যে বিজ্ঞাপন বেরোয়, তাতে এডুকেশনে স্নাতকোত্তর (এম এ/ এম এসসি/ এম এড) ডিগ্রিতে ৫৫ শতাংশ নম্বর (এসেনশিয়াল কোয়ালিফিকেশন) এবং স্কুলে পড়ানো হয় এমন কয়েকটি বিষয়ে (বিজ্ঞান, কলা ও বাণিজ্য, তিন শাখার প্রতিটি থেকে একজন করে এমন নয়) ‘গুড পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি’ (ডিজারেবল কোয়ালিফিকেশন) চাওয়া হয়েছিল। এডুকেশন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে ইউ জি সি-র নিয়ম যেমন মানতে হয়, তেমনই এন সি টি ই-র নিয়মও মানতে হয়। এই বিজ্ঞাপনের ভিত্তিতে ৯ মার্চ, ২০১০ বাছাই বোর্ডে যে তিনটি প্যানেল হয় এবং পরে তার ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হয়, তার প্রত্যেকটিতে প্যানেলভুক্ত প্রথম স্থানাধিকারী দ্বিতীয় স্থানাধিকারীর চেয়ে কম যোগ্যতাসম্পন্ন ছিলেন।
সংরক্ষিত আসনে যে ‘বাণিজ্য’র প্রার্থীর কথা উপাচার্য বলেছেন, তাঁর এন সি টি ই মান অনুযায়ী এম কম-এ ন্যূনতম ৪৫ শতাংশ নম্বর ছিল না। এডুকেশন বিভাগের বাণিজ্য বিষয়ের শিক্ষকের দরকার ছিল। তাই দ্বিতীয় প্যানেলে (সাধারণ আসনে) যখন অন্য একজন বাণিজ্য-র প্রার্থীকে বাছাই করে দ্বিতীয় স্থানে রাখা হল, যাঁর এন সি টি ই-সম্মত যোগ্যতা আছে এবং যিনি প্যানেলের প্রথম স্থানাধিকারীর থেকে অধিক যোগ্যতাসম্পন্ন, তাঁকে আমি প্যানেলে প্রথম রাখতে বাছাই কমিটিকে অনুরোধ করি। এতেই ওই প্রার্থী ‘ডিনের নিজের পছন্দের প্রার্থী’ হয়ে গেলেন?
যদি একটি সংরক্ষিত পদে ‘বাণিজ্য’ শাখার একজন প্রার্থী প্যানেলভুক্ত হয়েই যান, এবং যদি বাছাই কমিটি বলে, ‘বাণিজ্য শাখা থেকে আর প্রার্থী নেওয়ার প্রয়োজন নেই’ তা হলে পরবর্তী প্যানেলে আবার বাণিজ্য বিভাগের প্রার্থীকে বাছাই করে প্যানেলভুক্ত করা কেন? বিজ্ঞাপনের বাইরে গিয়ে হঠাৎ ইংরেজির শিক্ষক নেওয়া হল কেন? ৪৫ শতাংশের নীচের নম্বর (বিশেষ করে সাধারণ আসনে) কি বিজ্ঞাপন অনুযায়ী ‘গুড পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি’? তৃতীয় প্যানেলটিতে (সাধারণ আসনে) প্রথমে যাকে রাখা হল, তার ফিজিক্সে ৫৫ শতাংশর নীচে নম্বর, আর দ্বিতীয়ের গণিতে ৬৫ শতাংশ নম্বর। বিভাগে গণিতের শিক্ষকের প্রয়োজন বেশি ছিল। তাই এঁকেও আমি প্যানেলে প্রথমে রাখার জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কম যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীকেই প্রথমে রাখা হল। দু’জন বিশেষজ্ঞ গণিতের প্রার্থীর বিষয়ে বলেন, ‘বেটার ক্যান্ডিডেট’। যদি প্রয়োজন না-মেনে ফিজিক্সের শিক্ষককেই নেওয়া হল, তা হলে সংরক্ষিত আসনে যে প্রার্থীর এর থেকেও বেশি নম্বর ছিল, তাকে শুধু মাত্র ‘পশ্চিমবঙ্গের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ের’ যুক্তিতে বাদ দেওয়া হল কেন? নম্বরের উপর জোর দিচ্ছি কারণ, ইন্টারভিউটা ছিল প্রহসন। কোনও নৈর্ব্যক্তিক সূচক মানা হয়নি। সেখানে তিনটি প্যানেলের প্রথম-রা কী এমন ইন্টারভিউ দিলেন যে, তাঁরাই প্রায় ৩৪ প্রার্থীর মধ্যে যোগ্যতম বিবেচিত হলেন?
বিভাগে বাংলার শিক্ষকের দরকার ছিল। সে ক্ষেত্রেও বাছাই কমিটি আমার কোনও অনুরোধ রাখেনি। এই সব কারণে আমি একটি প্যানেলও মানিনি এবং আলাদা কাগজে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিই। তারই পরবর্তী ই সি-তে (১৪-৭-২০১০) সদস্যদের সব জানিয়ে পদত্যাগ করি।
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু ছিল বাম জমানায় কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগ। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশন বিভাগের তৎকালীন ডিন শুভলক্ষ্মী নন্দীই সেই অভিযোগ তুলেছিলেন এবং প্রতিবাদে পদত্যাগও করেছিলেন। প্রতিবেদনে বাম জমানায় কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগের সপক্ষে যুক্তি হিসাবে শুভলক্ষ্মীদেবীর প্রতিবাদের ঘটনাটি উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অলোক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, বেনিয়ম হয়নি। শুভলক্ষ্মীদেবীর পছন্দের প্রার্থী লেকচারার পদে প্যানেলভুক্ত না হওয়াতেই তিনি বেনিয়মের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেছিলেন। অলোকবাবুর ওই বক্তব্যও প্রতিবেদনে লেখা হয়েছিল। আর অলোকবাবুর বক্তব্যের জবাবে শুভলক্ষ্মীদেবী কী বলছেন, তা জানার জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু যোগাযোগ করা যায়নি।
ডাঙায় কই মাছ
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ‘ব্রিজের নীচে সময় ওদের ছোঁয় না’ শীর্ষক প্রবন্ধে (৪-২) কই মাছ সম্পর্কে যে ধারণা পোষণ করেন তার সঙ্গে আমি একমত। আমার বয়স এখন পঞ্চাশ। শ্যামনগরে গুড়দহ গ্রামে আমার মামার বাড়ি। সেখানে কিশোর বয়সে দেখেছি যে, যখন আকাশ কালো করে মেঘ ডাকছে, বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে তখন নির্জন পুকুরপাড়ে বা ডোবার ধারে নারকেল গাছের গোড়ায় ছেয়ে আছে কালো কই মাছের ঝাঁক। পুকুর থেকে উঠে এসেছে। ধরতে গেলে প্রচুর মাছ পালাত, কিন্তু সাত-আটটা ধরা পড়ত। আমি, আমার মামাতো ভাই, মাসতুতো ভাই মিলে অন্তত সাত-আট বার এর সাক্ষী। কানকো দিয়ে ঘষটে ঘষটে দ্রুত চলত মাছগুলো। তবে কোথায় যেত, সুনীলবাবুর মতোই সে কথা আমারও অজানা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.